বাংলারজমিন

বিদ্যালয়ের পাশে সভাপতির খামার

বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

১৮ মে ২০১৯, শনিবার, ৮:২৭ পূর্বাহ্ন

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের ঘনবসতি আওনা গ্রামে গরু ও পোল্ট্রি মুরগির খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। পাশাপাশি দুর্গন্ধের কারণে পড়াশুনা ব্যাহত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। আওনা বাজার পার্শ্ববর্তী এম মুহিয়্যূদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় ও আওনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীর ঘেষে অর্গানিক এগ্রো ফার্ম নির্মাণ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এম. মুহিয়্যূদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মাহমুদুল হাসান দোলন। মাহমুদুল হাসান দোলনের মালিকানাধীন এগ্রো ফার্মের গরু ও মুরগির বিষ্ঠার দুর্গন্ধে ঠিক মতো ক্লাস করতে পারছে না কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার আলো প্রসারিত করার জন্য মাহমুদুল হাসান দোলনের বাবা এম. মুহিয়্যূদ্দিন নিজের নামে নির্মাণ করেছে এম. মুহিয়্যূদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের। অথচ সেই স্কুলের শিক্ষার্থীরা আজ দুর্গন্ধের কারণে পড়াশুনা করতে পারছে না। এমনই অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গড়ে ওঠা খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধ ছড়িয়ে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। খামারের পাশেই রয়েছে পোস্ট অফিস, বাজার, মসজিদ, মাদ্‌রাসা, কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়সহ জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। খামারের তীব্র দুর্গন্ধের কারণে ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে পড়াশুনা করতে পারছেনা। বিদ্যালয়ের আসার সময় এবং শ্রেণী কক্ষে মুখে মাস্ক ব্যবহার করে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদের। ফলে প্রতিদিনই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, ডায়রিয়ার মতো বিভিন্ন মারাত্মক রোগ প্রকট আকার ধারণ করে স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন এখানকার স্থানীয়রা।  গত কয়েকদিন সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাঝে মাঝে তীব্র গন্ধ ছুটে আসে খামার থেকে। বিশেষ করে ভোরে, দুপুরে, সন্ধ্যায় এবং মাঝে মাঝে রাতে গন্ধের পরিমাণ বেশি থাকে। খামারের পার্শ্ববর্তী সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষকে প্রতিদিন দুর্গন্ধে কষ্ট করতে হয়। পোল্ট্রি খামারের নাকের ডগায় অবস্থিত এম. মুহিয়্যূদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় ও আওনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। তাদের অভিযোগ মাহমুদুল হাসানকে বারবার বলা পরও তিনি কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি। আওনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র শফিকুল বলেন, খামারের দুর্গন্ধে ক্লাসে এক হাত দিয়া নাক চেপে ধরে রেখে অন্য হাত দিয়ে লিখতে হয়। এভাবে ক্লাসে পড়াশুনা করতে আমাদের খুবই কষ্ট হয়। এম মুহিয়্যূদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্লাস ও পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে খামারের দুর্গন্ধের তীব্রতাও বেড়ে যায় তা সহ্য করা যায় না। আমরা চাই একটা স্থায়ী সমাধান। গন্ধে ক্লাস করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। পার্শ্ববর্তী আবেদুননেছা শরীফ এতিমখানা ও মাদ্‌রাসা কর্তৃপক্ষ বলেন, খামারের বিষ্ঠার গন্ধে ঠিকমতো নামাজ পড়তে পারি না। মাদ্‌রাসার ছেলে মেয়েরাও অতিষ্ঠ হয়ে মাদ্‌রাসা থেকে বের হয়ে যায়। তবে এ ব্যাপারে এম. মুহিয়্যূদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় ও আওনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা কথা বলকে রাজি হয়নি। অর্গানিক এগ্রো ফার্মের মালিক মাহমুদুল হাসান খামারের দুর্গন্ধ ছড়ানোর কথা অস্বীকার করে বলেন, আগে গন্ধ ছিল। কিন্ত বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করার ফলে এখন গন্ধ নেই বললেই চলে। তবে মাঝে মাঝে একটু গন্ধ বের হয়। আশা করি সেই গন্ধও থাকবে না। আমরা সেই ব্যবস্থা করছি। নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচএম সালাউদ্দিন মঞ্জু বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। ব্যাপারটি জানি না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status