বাংলারজমিন
খুলনার পাটকল শ্রমিকদের দুর্বিষহ জীবন
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
১৬ মে ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন
মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে খুলনার খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক কলোনিতে। কোনোভাবেই পরিবারের ভরণপোষণ মেটাতে পারছেন না সরকারি পাটকলের শ্রমিকরা। ঠিকমতো সন্তানদের মুখে আহার তুলে দিতে না পারার কষ্ট ছাপিয়ে তাদের পড়ালেখা নিয়ে চিন্তিত শ্রমিক পরিবারগুলো। শ্রমিকরা বলছেন, ১৩ সপ্তাহের মজুরি না পাওয়ায় শ্রমিক পরিবারগুলো দুর্বিষহ জীবন পার করছেন। স্থানীয় মুদি দোকানিরা বাকি দিয়ে শ্রমিকদের কাছে টাকা চাইতে পারছেন না। এদিকে ঈদ সমাগত। অথচ এখনো পর্যন্ত শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ জন্য শ্রমিকদের মাঝে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। অবশ্য শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী খুলনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে এক সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া মজুরির প্রদানের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আশ্বাসে এখন আর শ্রমিকদের চলছে না। তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অব্যাহত আন্দোলনে এবার শিল্প এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। বিল না পেয়ে এবং বিজেএমসির নীরব ভূমিকায় আন্দোলনরত শ্রমিকরা পর্যায়ক্রমে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে। শ্রমিকদের হাতে টাকা নেই, পেটে ভাত নেই, বকেয়া মজুরির পাশাপাশি সমাগত ঈদুল ফিতরে বোনাস পাবে কিনা এমন ভাবনা ও দুশ্চিন্তায় রয়েছে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের ১০ থেকে ১৩ সপ্তাহের মজুরী, কর্মচারী-কর্মকর্তাদের ৪ মাসের বেতন, জাতীয় মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে গত ৫ই মে মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলনে নামেন খুলনা-যশোরের ৯টি পাটকলের প্রায় ৩৩ হাজার শ্রমিক। বুধবার আন্দোলনের ১০ম দিনেও মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে একই কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকরা। সকালে মিলগেটে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং বিকাল ৪টায় খুলনা-যশোর মহাসড়কের তিনটি স্থানে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকরা। অবরোধের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সড়ক ও রেলপথের যাত্রীদের। এদিকে পাটকল শ্রমিকদের লাগাতার ধর্মঘট চললেও সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা উত্তরণে কোনো ঘোষণা নেই। বকেয়া মজুরিসহ ৯ দফা দাবি না মানলে শ্রমিকরা রাজপথে আত্মাহুতির হুমকি দিয়েছেন। রমজানে টানা আন্দোলন চালিয়ে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়লেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
বুধবার টানা ১০ম দিনের শ্রমিক আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে খুলনার খালিশপুর শিল্পাঞ্চল। লাগাতার ধর্মঘটে শ্রমিকরা মিলগেটে বিক্ষোভ করার পাশাপাশি ৩ ঘণ্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, আলীম, ইস্টার্ণ, যশোরের কার্পেটিং ও জেজেআই জুট মিলের শ্রমিক-কর্মচারী।
প্রতিদিন বিকালে কর্মসূচি চলাকালে শ্রমিকরা নতুন রাস্তা মোড়ে টায়ারে ও কাঠের গুড়িতে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সেখানেই নামাজ আদায় এবং ইফতার করেন তারা। একই কর্মসূচি পালন করেন আটরা-গিলাতলা ও রাজঘাট শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকরা। এর আগে গত ৫ই মে হঠাৎ করে শ্রমিকরা খুলনা অঞ্চলের পাটকলগুলোর উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন হারুন বলেন, সপ্তাহ শেষে মজুরি দিয়ে সংসার পরিচালনা করি। অথচ গত ১৩ সপ্তাহ শ্রমিকদের মজুরি দেয়া হচ্ছে না। এখন আর ব্যবসায়ীরা শ্রমিকদের বাকিতে সদাইও দিতে চায় না। এভাবে চললে না খেয়ে মরতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে বকেয়া মজুরি পরিশোধের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো সদিচ্ছা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সম্ভাবনাময় পাট শিল্পকে বাঁচাতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মুরাদ হোসেন জানান, আমাদের এখনো পর্যন্ত কোনো মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এসব নিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছি। বিজেএমসি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বরাবর চিঠিও পাঠিয়েছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ৯ দফা দাবি যতদিন আদায় না হচ্ছে ততদিন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। সে কারণে সময়মতো পণ্য বিক্রি করতে না পারায় আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। মিলগুলো সময়মতো শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করতে পারছে না। সার্বিক বিষয়টি বিজেএমসির প্রধান কার্যালয়কে জানানো হয়েছে।’
এদিকে আন্দোলন আরো জোরদার এবং পাট শিল্পকে রক্ষা করতে ৯ মিলের শ্রমিকদের নিয়ে যুব পাট শিল্প রক্ষা কমিটি গঠন করেছে। প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক মো. নুর ইসলামকে আহ্বায়ক ও জেজেআই জুট মিলের শমসের আলমকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- অলিয়ার রহমান, মানিক পাভেজ, আজগর মোল্লা, মো. শাজাহান, আ. রাজ্জাক, শফিকুল ইসলাম, মনির হোসেন, মো. রাশেদ, মনোয়ার হোসেন, আ. রাজ্জাক, মো. ইউনুস, মোফাজ্জেল হোসেন, ফজর আলী, খায়রুল মল্লিক, মো. পিপলু, নাজমুল, সাব্বির, নান্নু, ইসমাইল।
বুধবার টানা ১০ম দিনের শ্রমিক আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে খুলনার খালিশপুর শিল্পাঞ্চল। লাগাতার ধর্মঘটে শ্রমিকরা মিলগেটে বিক্ষোভ করার পাশাপাশি ৩ ঘণ্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, আলীম, ইস্টার্ণ, যশোরের কার্পেটিং ও জেজেআই জুট মিলের শ্রমিক-কর্মচারী।
প্রতিদিন বিকালে কর্মসূচি চলাকালে শ্রমিকরা নতুন রাস্তা মোড়ে টায়ারে ও কাঠের গুড়িতে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সেখানেই নামাজ আদায় এবং ইফতার করেন তারা। একই কর্মসূচি পালন করেন আটরা-গিলাতলা ও রাজঘাট শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকরা। এর আগে গত ৫ই মে হঠাৎ করে শ্রমিকরা খুলনা অঞ্চলের পাটকলগুলোর উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন হারুন বলেন, সপ্তাহ শেষে মজুরি দিয়ে সংসার পরিচালনা করি। অথচ গত ১৩ সপ্তাহ শ্রমিকদের মজুরি দেয়া হচ্ছে না। এখন আর ব্যবসায়ীরা শ্রমিকদের বাকিতে সদাইও দিতে চায় না। এভাবে চললে না খেয়ে মরতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে বকেয়া মজুরি পরিশোধের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো সদিচ্ছা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সম্ভাবনাময় পাট শিল্পকে বাঁচাতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মুরাদ হোসেন জানান, আমাদের এখনো পর্যন্ত কোনো মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এসব নিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছি। বিজেএমসি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বরাবর চিঠিও পাঠিয়েছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ৯ দফা দাবি যতদিন আদায় না হচ্ছে ততদিন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। সে কারণে সময়মতো পণ্য বিক্রি করতে না পারায় আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। মিলগুলো সময়মতো শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করতে পারছে না। সার্বিক বিষয়টি বিজেএমসির প্রধান কার্যালয়কে জানানো হয়েছে।’
এদিকে আন্দোলন আরো জোরদার এবং পাট শিল্পকে রক্ষা করতে ৯ মিলের শ্রমিকদের নিয়ে যুব পাট শিল্প রক্ষা কমিটি গঠন করেছে। প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক মো. নুর ইসলামকে আহ্বায়ক ও জেজেআই জুট মিলের শমসের আলমকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- অলিয়ার রহমান, মানিক পাভেজ, আজগর মোল্লা, মো. শাজাহান, আ. রাজ্জাক, শফিকুল ইসলাম, মনির হোসেন, মো. রাশেদ, মনোয়ার হোসেন, আ. রাজ্জাক, মো. ইউনুস, মোফাজ্জেল হোসেন, ফজর আলী, খায়রুল মল্লিক, মো. পিপলু, নাজমুল, সাব্বির, নান্নু, ইসমাইল।