এক্সক্লুসিভ

মুসলিমদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা নিহত ১, শ্রীলঙ্কায় কারফিউ

মানবজমিন ডেস্ক

১৫ মে ২০১৯, বুধবার, ৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

হামলা চালিয়ে কমপক্ষে একজন মুসলিমকে হত্যা ও মসজিদে ব্যাপক ক্ষতি করার পর শ্রীলঙ্কায় নতুন করে দাঙ্গা সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ইস্টার সানডে’র পর আবার সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত এ কারফিউ বলবৎ থাকবে প্রতিদিন। ইস্টার সানডে’র পর দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। এতে সোমবার এলোপাতাড়ি আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে ৪৫ বছর বয়সী এক মুসলিমকে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে তিনি মারা যান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

‘বেশি হেসো না। একদিন কাঁদবে’ লিখে তা ফেসবুকে পোস্ট করেন আবদুল হামিদ মোহাম্মদ হাসমার। এতে খ্রিস্টানদের প্রতি হুমকি দেয়া হয়েছে বলে ধরে নেয় এ সম্প্রদায়ের লোকজন। ফলে শুরু হয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে হামলা। তারা একটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এ নিয়ে দাঙ্গা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয় দিনের মতো চলতে থাকা ওই দাঙ্গা রোধ করতে তারা কারফিউ জারি করেছেন। এর আগে রাজধানী কলম্বোর কাছে পুত্তালাম, কুরুনেগালা ও গাম্ফালায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে সুনির্দিষ্ট কিছু এলাকায় কারফিউ জারি করেছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার পর তা সারা দেশে জারি করা হয়েছে। নর্থ ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের মুসলিমরা বলছেন, সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো তাদের ওপর হামলা হয়। হামলা হয় বিভিন্ন মসজিদে ও মুসলিম মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একজন মুসলিম অধিবাসী বলেন, শত শত দাঙ্গাকারী হামলা চালিয়েছে। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী ছিল স্রেফ দর্শকের ভূমিকায়। দাঙ্গাকারীরা আমাদের মসজিদে আগুন দিয়েছে। মুসলিম মালিকানাধীন বহু দোকানপাট ভাঙচুর করেছে। আমরা যখন বাসার বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছি, পুলিশ আমাদেরকে অনুমতি দেয় নি। বলেছে, বাসার ভেতরে থাকতে।

পুলিশ বলেছে, মুসলিম মালিকানাধীন মোটরসাইকেল ও গাড়িতে ইটপাথর ছুড়েছে দাঙ্গাকারীরা। তারা আগুনও দিয়েছে এসবে। পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, অনেক দোকানে হামলা হয়েছে। যখন দাঙ্গাকারীরা মসজিদে হামলা করার চেষ্টা করেছে, আমরা তখন ফাঁকা গুলি করেছি। তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছি।

তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করার কথা জানা যায় নি তাৎক্ষণিকভাবে। হাবারানা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক মিনেলে ফার্নান্দেজ বলেন, এ সহিংসতা মূলত স্থানীয় এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। কর্তৃপক্ষ তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে। তিনি আরো বলেন, ওই বিশেষ অঞ্চলগুলোতে খ্রিস্টান ও মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে সোমবার স্থানীয়ভাবে ২৪ ঘণ্টার জন্য কারফিউ দিয়েছিল পুলিশ।

এ ছাড়া অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এর মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ প্রভৃতি। ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে কয়েকটি শহরে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়। রোববার খ্রিস্টান অধ্যুষিত চিলা শহরে মুসলিমদের দোকানপাট ও মসজিদে হামলা চালিয়েছে খ্রিস্টানরা। খ্রিস্টানরা ওই পোস্টকে তাদের ওপর অত্যাসন্ন হামলার হুমকি হিসেবে দেখতে থাকে। এর ফলে পোস্টদাতার দোকান ভেঙেচুরে গুঁড়িয়ে দেয় তারা। পাশেই একটি মসজিদে ভাঙচুর চালায়। কর্তৃপক্ষ বলছে, ফেসবুকে পোস্ট দেয়া ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। তার নাম আবদুল হামিদ মোহাম্মদ হাসমার (৩৮)।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status