বাংলারজমিন

কিশোরীর নবজাতকের পিতৃত্ব নিয়ে ধূম্রজাল

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

২৬ এপ্রিল ২০১৯, শুক্রবার, ৯:১৪ পূর্বাহ্ন

ঘটনাটি প্রায় দুই মাস আগের। গত ২৫শে ফেব্রুয়ারি ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বার অভিযোগ নিয়ে থানায় এসেছিলেন কিসমত নড়াইল গ্রামের ১৮ বছরের এক কিশোরী। অভিযোগ ছিল বাউসা গ্রামের আক্তার উদ্দিনের পুত্র ইলিয়াস নামক এক যুবকের বিরুদ্ধে। প্রেমের পরিণতিতে গড়ে উঠে তাদের শারীরিক সম্পর্ক। চলে ইলিয়াসের সঙ্গে অবাধ মেলামেশা। সুযোগ পেলেই রাতের আঁধারে দেখা সাক্ষাৎ করতেন এই প্রেমিক যুগল। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ইলিয়াস মেলামেশা করতো কিশোরীর সঙ্গে। একপর্যায়ে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের চাপ দেন ইলিয়াসকে। অতঃপর বিভিন্ন কৌশলে ইলিয়াস কেটে পড়ার চেষ্টা চালায়। অস্বীকার করেন কিশোরীর পেটের সন্তানকে। এই অবস্থায় বিয়ের দাবি নিয়ে আইনের শরণাপন্ন হয়ে হালুয়াঘাট থানায় উপস্থিত হন সেই কিশোরী। গত ২৫শে ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে ঠিক এভাবেই অভিযোগগুলো প্রকাশ করেছিলেন কিশোরী। সকল অভিযোগই ছিল ইলিয়াসের বিরুদ্ধে। সূত্রে জানা যায়, ঐদিন পুলিশ কিশোরীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইলিয়াস ও তার বাবা এবং নিকট আত্মীয়স্বজনদের থানায় ডেকে নিয়ে আসেন। দীর্ঘ সময় চলে হালুয়াঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর পিপিএম ও ওসি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদারের জিজ্ঞাসাবাদ। শুরুতে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর পেটের বাচ্চার কথা অস্বীকার করলেও প্রেমের সম্পর্ক ছিল তা ইলিয়াস স্বীকার করেন। একপর্যায়ে ইলিয়াস কিশোরীর পেটের বাচ্চাকে স্বীকার করে নিয়ে উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরের বিনিময়ে থানার অভ্যন্তরে বিয়ে হয় এই প্রেমিক যুগলের। এই ঘটনার প্রায় দুই মাস পরে কিশোরী বাচ্চা প্রসব করলে নবজাতকের পিতৃত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেন ঐ কিশোরী। অভিযোগের তীর যায় করুয়াপাড়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর পুত্র আলাল মিয়ার (৩৫) বিরুদ্ধে। কিশোরী বাদী হয়ে গত ১৭ই এপ্রিল সন্তানের পিতার দাবি নিয়ে আলালসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। নতুন করে নবজাতকের পিতা আলাল মিয়া, এই দাবি কেন তুলছেন এমন প্রশ্নে কিশোরী বলেন, ৮নং নড়াইল ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য তাছলিমা খাতুন তাকে ফুঁসলিয়ে সেদিন ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করতে বাধ্য করান। কিশোরী সকল নাটকের বিষয়ে ইউপি সদস্য তাছলিমাকেই দায়ী করেন। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য তাছলিমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে কিশোরীর অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান। কিশোরীর দাবিকৃত সন্তানের পিতার দাবিদার আলাল মিয়া বলেন, আমি কিশোরীকে চিনি না। এসব ঘটনা সাজানো নাটক বলে উল্লেখ করেন। এই ঘটনার বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার বলেন, গত ২৫শে ফেব্রুয়ারি এই কিশোরী ইলিয়াসের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বার অভিযোগ নিয়ে হালুয়াঘাট থানায় এলে তিনি ইলিয়াস ও তার অভিভাবকদের থানায় ডেকে নিয়ে আসেন, পরে ছেলে ও মেয়ের সম্মতিক্রমে উভয় পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে ইলিয়াস ও কিশোরীর বিবাহ সম্পন্ন হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status