এক্সক্লুসিভ

স্মৃতিতে একাত্তর

সৈয়দ দীদার বখ্‌ত

২৬ এপ্রিল ২০১৯, শুক্রবার, ৮:১৪ পূর্বাহ্ন

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সমাগত। নানা অধ্যায়ে বিভক্ত মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপঞ্জি। মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে গর্জে উঠেছিল বাংলার কৃষক, শ্রমিকসহ আপামর মুক্তিকামী জনতা। পঁচিশে মার্চের ক্র্যাকডাউন, গেরিলা যুদ্ধ, ঘটনাবহুল একাত্তর। মুক্তিযুদ্ধকালীন সেই দিনগুলো উঠে এসেছে সিনিয়র সাংবাদিক ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী
সৈয়দ দীদার বখ্‌তের লেখায়।

স্বাধীনতার সনদ ঘোষণার মাস- এপ্রিল-’৭১
এপ্রিল-’৭১ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনা বহুল মাস। সমস্ত মাসজুড়ে বাংলাদেশে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতি, মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং, মুক্তিযোদ্ধাদের একত্রিত থাকার ব্যবস্থা, তাদের খাওয়া-দাওয়া, অস্ত্রপাতি, যুদ্ধের সরঞ্জাম এসব কিছুরই প্রস্তুতি চলছিল সমস্ত মাসজুড়ে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক সমগ্র দেশবাসীকে নতুন উদ্দীপনায় বিশেষ করে যুব সমাজকে সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নেবার দৃঢ় অঙ্গীকার ও প্রত্যয়ে উদ্দীপ্ত করেছিল। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও যুদ্ধের প্রস্তুতি সম্প্রসারিত হয়েছিল।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক অবহেলিত বঞ্চিত জনপদ সাতক্ষীরা জেলার তালা থানাতেও যুদ্ধের সর্বাত্মক প্রস্তুতিতে যুব সমাজ অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে সশস্ত্র যুদ্ধের ট্রেনিং নেয়া শুরু করেছিল। ২৯শে মার্চ তালার ডাক বাংলোতে উড়তে থাকা পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের ম্যাপ খচিত পতাকা উড়ানো হয়েছিল। আমি সংগ্রাম পরিষদের সর্বসম্মতিতে অধিনায়ক নির্বাচিত হওয়ায় উপস্থিত কয়েক হাজার জনতার সামনে দেশের ভয়াবহ ভয়ঙ্কর পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরচিত গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিবরণ তুলে ধরলাম। দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় যুব সমাজ রণহুঙ্কারে গর্জে উঠেছিল ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ স্লোগানে মুখরিত হয়েছিল সেদিন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অখ্যাত অবহেলিত এই জনপদ।

এপ্রিল মাসের শুরুতেই সাতক্ষীরা জেলাতে পরপর অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছিল। সাতক্ষীরা মহকুমার অবাঙালী এসডিওকে দামাল ছেলেরা বিশেষ করে কামেল বখ্‌ত (শহীদ), মুস্তাফিজ, জজ, হাবলু, কামরুল, রফিক, নূরুল, রবি, এদের নেতৃত্বে বন্দি করে  সাতক্ষীরার এক নেতার বাসায় অন্তরীণ করে রাখে। অনেক রাজনৈতিক নেতা ও ছাত্র নেতাদের সাতক্ষীরা জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। সাতক্ষীরা জেল উন্মুক্ত করে তাদের বের করে আনলো। সাতক্ষীরা অস্ত্রাগার দখল করে রাইফেল ও অন্যান্য অস্ত্র দখল করা হলো। সাতক্ষীরা ও ভোমরা বর্ডারে ই.পি.আর ক্যাম্প বাঙালি ইপিআর সেনাদের সহায়তায় দখল করা হলো। এই সময়ে আমাদের কাছে সংবাদ আসলো মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ভারতের শিলিগুড়িতে এপ্রিলের ২০/২২ তারিখে পৌঁছাবেন। আমি ভাসানী ন্যাপের একজন সক্রিয় কর্মী হবার সুবাদে শিলিগুড়িতে যাবার সিদ্ধান্ত নেই। আমার সঙ্গে  আমার সহযোদ্ধা প্রদীপ মজুমদার, কামেল বখ্‌ত, সৈয়দ ইসা, আলতাফ হোসেন, ডা. আখতার হোসেন, ওহেদুজ্জামান এক সঙ্গে জয় বাংলার যাত্রী হিসেবে বিনা টিকিটে ট্রেনে শিলিগুড়িতে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।

শিলিগুড়িতে যাবার পূর্বেই স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচলনার জন্য তৈরি হলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার জন্য জনগণকে সংগ্রামের আহ্বান করেছিলেন। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য ম্যান্ডেট দিয়েছিল। পাকিস্তানিরা ২৫শে মার্চের রাতে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনায় জনগণ নিজেদের সংগঠিত করে সেই ম্যান্ডেট কার্যকরী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২৫শে মার্চ রাতেই বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সেনারা গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানে নিয়ে যায়। তার ভাগ্যে কি ঘটেছে আমাদের কাছে তা অস্পষ্ট ছিল। কিন্তু সেদিন জাতীয় নেতারা বসে থাকেননি। তারা সিদ্ধান্ত নিলেন জীবন দিয়ে হলেও যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। তার জন্য চাই একটি আইনি ব্যাখ্যা। সেই আইনি ছত্রছায়ায় তৈরি করার জন্য ১০ই এপ্রিল, ৭১ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে একটি বিপ্লবী সরকার গঠন করা হলো। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে উপ রাষ্ট্রপ্রতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রতি করে এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে ৬ সদস্যের একটি বিপ্লবী সরকার গঠন করা হলো।

এই বিপ্লবী সরকারের আরো আইনি আচ্ছাদনদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের মাটিতে শপথ পড়ানো এবং গার্ড অব অনার দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো। সেই মোতাবেক কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরের আম্রকাননে অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারের শপথ অনুষ্ঠান ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় ১৭ই এপ্রিল,’৭১। অধ্যাপক ইউসুফ আলী এমপি এই বিপ্লবী সরকারের মুখপাত্র হিসেবে ডিক্লারেশন অব ইন্ডিপেন্ডেনস (স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র) জনসমক্ষে পাঠ করেন। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে সেদিন আইনি ছত্রছায়ায় বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপ দেবার জন্য সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের আইনি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও বিপ্লবী সরকারের অনুপস্থিতিতে সেদিন যে আইনি অস্বচ্ছতা ছিল তা দূরীভূত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা সেদিন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সত্যিকার অর্থে ১৭ই এপ্রিল’ ৭১, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তি সনদ ঘোষণার দিন হিসেবে বিবেচিত।

পলাশীর আম্রকাননে বাংলাদশের স্বাধীনতা একদিন হরণ করে বৃটিশ রাজ্য সৃষ্টি হয়েছিল। ১৭ই এপ্রিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে মেহেরপুরের আম্রকাননে সৃষ্টি হয়েছিল অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারের। আজ মেহেরপুরের এই আম্রকাননে মুজিবনগর হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক বহন করে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য মেহেরপুর যাওয়া হয়নি সেইদিন। আমরা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে দিক নির্দেশনা নেবার জন্য সিলিগুড়িতে উপস্থিত হলাম।

শিলিগুড়িতে ভারতীয় বামপন্থি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কখন ভাসানী সাহেব আসবেন জানতে চাইলাম। আমাদের একটি বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হলো। সেই বাড়িতে দেখলাম বাংলাদেশের বামপন্থি নেতা দেবেন শিকদার, আবুল বাসার, সিরাজুল হোসেন খান, ডা. মারুফ হোসেন রানা, হায়দার আকবর খান এবং আরো অনেক বামপন্থি নেতারা সমবেত হয়েছেন ভাসানী সাহেবকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য।

প্রায় সমস্ত দিন অপেক্ষা করার পর শিলিগুড়ির বামপন্থি নেতাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম মওলানা ভাসানী সাহেব ভারতে প্রবেশ করার পর পরই ভারতীয় কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা করে কোথায় নিয়ে গেছেন তা তারা বলতে পারেন না। তারা জানতে চাইলে তাদের বলা হয়নি। ভাসানী সাহেবকে অনির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে আমাদেরকে আশ্বস্ত করা হলো যে তিনি সুস্থ আছেন, ভালো আছেন। ভারত সরকারের মাননীয় অতিথি হিসেবে নিরাপত্তার জন্য তাকে আপাতত জনসমক্ষে হাজির করা হচ্ছে না বলে আমাদের জানানো হলো। আমরা নিরাশ হলাম কিন্তু হতাশ হইনি। যুদ্ধ চালিয়ে যাবার দৃঢ় প্রত্যয়ে আমরা উজ্জীবিত হয়ে সেদিন সিলিগুড়ি থেকে ফিরে এসেছিলাম।
শিলিগুড়ি ২-৩ দিন অবস্থানের সময় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। প্রদীপ মজুমদারের এক বোনের বাসায় আমি ও প্রদীপ (গোবিন্দ) থেকে গেলাম। এই সময়ে গোবিন্দ জানালো সে তার এক আত্মীয়ের গাড়ির ব্যবস্থা করেছে ঐতিহাসিক ‘নকশাল বাড়ি’ যাবার জন্য।

এই নকশাল বাড়ি গ্রাম থেকে ভারতের বামপন্থি বিপ্লবীদের সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। প্রদীপ মজুমদারের আত্মীয় আমাদের ঐ গ্রাম ঘুরিয়ে দেখালেন। আমরা গ্রামটি দেখলাম। কোনো মানুষজনকে সেদিন সে গ্রামে আমরা দেখতে পাইনি। আত্মীয়টি জানালেন জোতদার জমিদার শ্রেণির জমি দখল করে ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বণ্টন করে দেবার জন্য সে দিন বামপন্থি নেতাকর্মীরা চারু মজুমদারের দীক্ষায় সশস্ত্রভাবে ভূমি দখল শুরু করেছিল এই গ্রাম থেকেই। যেহেতু নকশাল বাড়ি গ্রাম থেকে এই বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল তাই নকশাল বাড়ির নামানুসারে এই বিপ্লবীদের ‘নকশাল’ বলে অভিহিত করা হয়। নকশাল কোনো বিপ্লবী সূত্র বা নীতিমালা নয় একটি গ্রামের নাম মাত্র।
আমরা বাঙালি। আমরাও যুদ্ধের ময়দানে। অবশ্য আমাদের যুদ্ধ ভিন্নতর ধারায় পরিচালিত হচ্ছে। আমরা লড়ছি আমাদের প্রিয় ভূ-খণ্ডের স্বাধীনতার জন্য। আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।

শিলিগুড়ি থেকে আমরা বশিরহাটে ফিরে এলাম। এপ্রিলের শেষের দিকে ইটিন্ডা ঘাটে ড. কামাল সিদ্দিকী ও ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হলো। দুজনই মিলিটারি পোশাকে সুজ্জিত হাতে রাইফেল। কামাল সিদ্দিকী নড়াইল মহকুমার এসডিও ছিলেন। তার কাছ থেকে জানলাম পাকিস্তানি সেনাদের কবল থেকে তিনি নড়াইল জেলা মুক্ত করে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছিলেন। এর পরই যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাকিস্তানি সেনারা নড়াইল অভিমুখে যাত্রা করলে সেখানে টিকে থাকা সম্ভব নয় বলেই তিনি সেখান থেকে চলে এসেছেন এবং বাংলাদেশের বিপ্লবী সরকারে যোগদান করেছেন। ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরীর বর্ণনা প্রায় একই রকম। দুজনই আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু। তারা জানালেন অচিরেই বিপ্লবী সরকার সকল জেলাতে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং এবং অস্ত্র দেবার ব্যবস্থা করবেন।

আমরা বশিরহাট থেকে আবার ভোমরা বর্ডারে ফিরে আসি। ভোমরাতে কামরুজ্জামান টুকুর সঙ্গে দেখা হলো। টুকু ছাত্র জীবনে আমাদের রাজনৈতিক সহকর্মী ছিল। টুকু এবং আমি দুজন মিলে বেশ কিছু ছেলেদের নিয়ে একটি ক্যাম্প করি।
এই সময় সংবাদ পাই আমার গ্রামের বাড়ি পাকিস্তানি সেনারা আক্রমণ করবে এই সংবাদে আমার মা স্ত্রী পুত্র কন্যাদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। আমার বড় ভাই বেদার বখত্‌ তখন তালাতে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দেয়াতে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে  বাড়ি গেছেন শুনে কিছুটা আশ্বস্ত হলেও মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে রইলো।

আমি টুকুকে বললাম আমিও গ্রামে ফিরে যাচ্ছি। তুমি ক্যাম্প চালাও। আমি গ্রামে গিয়ে ছেলেদের এই ক্যাম্পে পাঠাবো। তাদের ট্রেনিং থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করো।

এই সময় একটি ঘটনার কথা না বললেই নয়। ভোমরার অপর পাড়ে খোঁজডাঙ্গা। খোঁজডাঙ্গায় থাকাকালীন আমাদের একটি ছেলে কিছুটা আহত হয়েছিল। তার চিকিৎসা দেবার জন্য কোনো টাকা পয়সা আমাদের ছিল না। টুকু বললো দীদার ভাই কিছু ব্যবস্থা করেন। আমি তখন কলকাতায় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য যাই। আমার বড় ভাই কামাল বখত্‌ এম.এন.এ, আবদুল আজিজ এম.এন.এ  (মেম্বার ন্যাশনাল এসেমব্লি) - দুজনই আওয়ামী লীগের বড় নেতা।

তাদের সঙ্গে দেখা করলাম। তারা সাহায্য করার মতো অবস্থায় নেই বলে জানালেন। আমি তখন কলকাতার বিধান ভবনে অবস্থানরত আমার ভাগ্নে শাহ হাদিউজ্জামান এম.পি.এ (মেম্বার প্রভিনসিয়াল এসেমব্লি)-এর সঙ্গে দেখা করি। সে সব শুনে আমাকে সঙ্গে নিয়ে ওষুধপত্র, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য পায়ের কেডস কিনে দিলো। সঙ্গে কিছু অর্থও খাওয়া-দাওয়ার জন্য দিলো। ওষুধপত্র, কেডস এবং কিছু খাবার নিয়ে আমি ক্যাম্পে ফিরে আসলাম।

বাড়ির কথা শোনা অব্দি অস্থির হয়ে ছিলাম। রাতের অন্ধকারে হাকিমপুর হয়ে কলারোয়া হয়ে আমি গ্রামে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেই। সঙ্গে আমার অকুতোভয় সহোদর কামেল বখত্‌।

খোঁজডাঙ্গা ক্যাম্প যাতে চালু থাকে এবং ছেলেদের যুদ্ধের ট্রেনিং দিয়ে প্রস্তুত করা হয় তার মোটামুটি ব্যবস্থা করে বাড়ির পথে রওয়ানা দেই। মনের গভীরে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন মুক্ত করার আকাঙ্ক্ষায় উদ্দীপ্ত হয়ে গ্রামে পৌঁছে কি কি করবো তার ছক আঁকতে থাকি। মা-স্ত্রী পুত্র-কন্যা এদের নিরাপদে স্থানে রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে সেদিন গ্রামে পৌঁছাই।

- চলবে -
স্মৃতি কথন ঃ        
সৈয়দ দীদার বখ্‌ত
কলাম লেখক।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status