প্রথম পাতা

পাসপোর্ট বইয়ের সংকটে দুর্ভোগ চরমে

দীন ইসলাম

২২ এপ্রিল ২০১৯, সোমবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

পাসপোর্ট বইয়ের চরম সংকটে পড়েছে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। এজন্য নতুন পাসপোর্ট বা পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তিদের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে। পাসপোর্টের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে অনেক আবেদনকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। অবস্থা এমন পর্যায়ে ঠেকেছে যে, দিনের পর দিন বা কখনো মাসের পর মাস পাসপোর্ট পেতে আগ্রহীদের আবেদন ঝুলে থাকছে। নির্ধারিত সময়ের এক থেকে ছয় মাসের মধ্যেও অনেকে পাসপোর্ট বুঝে পাননি। বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে জমা হওয়া আবেদনগুলো সবচেয়ে ঢিমেতালে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। এরপরই রয়েছে জেলা পর্যায়ে জমা হওয়া আবেদনগুলো। এসব আবেদনগুলোর প্রতি কম নজর দেয়া হচ্ছে না। তবে আগারগাঁও ঢাকা বিভাগীয় অফিসে জমা হওয়া আবেদনগুলোর দিকে নজর দেয়া হচ্ছে বেশি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে মজুত পাসপোর্টের পরিমাণ খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। এজন্য চাহিদার চেয়ে অর্ধেক পাসপোর্ট প্রিন্টিংয়ের জন্য পাঠানো হচ্ছে। ফলে গত কয়েক মাস জমা হওয়া আবেদনের অর্ধেকের বেশি ঝুলে আছে। গত ২৮শে মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে ২০ লাখ পাসপোর্ট বুকলেট ও ২০ লাখ লেমিনেশন ফয়েল সরবরাহ করার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। তাই আপাতত পাসপোর্টের সঙ্কট দূর হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কর্মসংস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও ভ্রমণসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রচুর মানুষ এখন বিদেশে যান। তাই বিদেশে যেতে চাইলে প্রথমেই প্রয়োজন পাসপোর্ট। সাধারণ পাসপোর্ট ২১ দিনের মধ্যে এবং জরুরি পাসপোর্ট সাত দিনের মধ্যে সরবরাহ করার বিধান রয়েছে। অথচ সময়মতো পাসপোর্ট না পাওয়ার কারণে অনেকেই জরুরি প্রয়োজনে দেশের বাইরে যেতে পারছেন না। তাই নতুন পাসপোর্টের জন্য গেলে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে কোন সদুত্তর দেয়া হয় না।

বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার আবেদন জমা পড়ে। এসব আবেদন আগারগাঁও বিভাগীয় অফিস, জেলা অফিস এবং দূতাবাসে নেয়া হয়। কিন্তু আবেদনের বিপরীতে সময়মতো পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে না। সমপ্রতি এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ পাসপোর্ট আবেদন আটকে গেছে। এমন অবস্থার মধ্যে পাসপোর্ট সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান ডি লা রিওকে ২০ লাখ পাসপোর্ট বুকলেট ও ২০ লাখ লেমিনেশন ফয়েল সরবরাহে সম্পূরক কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে পাসপোর্ট বুকলেট কিনতে তিনশ’ ৬২ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার ৭৭৪ টাকা এবং লেমিশেন ফয়েল কিনতে ৪০ কোটি ৭১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬২ টাকা লাগবে। সব মিলিয়ে ৪০৩ কোটি ২৬ লাখ পাঁচ হাজার ৩৩৭ টাকায় পাসপোর্ট বুকলেট ও লেমিশেন ফয়েল কেনার চুক্তি হয়েছে। এরই মধ্যে ১০ লাখ বইয়ের শিপমেন্ট শেষ হয়েছে। এসব পাসপোর্ট বুকলেট দেশে আসার আগ পর্যন্ত পাসপোর্ট সঙ্কট কমার লক্ষণ নেই। বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাসপোর্ট আবেদনের হার হঠাৎ করেই যেন বেড়ে গেছে। তাই পাসপোর্টগুলো হাতে পৌঁছানোর পর সঙ্কট কতটা মিটবে তা সময়ই বলে দেবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status