শেষের পাতা

ওরাও পারে

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

২০ এপ্রিল ২০১৯, শনিবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

অটিজম শিশুদের নিয়ে হতাশা নয়, বরং তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করার সুযোগ দিতে হবে। তাদের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার সুযোগ করে দিতে হবে পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের। নিজেদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেলে সমাজের বোঝা হয়ে থাকবে না, দেশের সকল উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নিতে পারবে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ‘আর্ট ফর অটিজম’ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। অটিজম নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের স্বাভাবিক মিথস্ক্রিয়া ও এ বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আর্ট ক্যাম্পের আয়োজন করেছে চাইল্ড ফাউন্ডেশন। আর এতে সহযোগী হিসেবে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। দুইদিন ব্যাপী এ আর্টক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। আর্টক্যাম্পের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী হাশেম খান ও রফিকুন নবী। উদ্বোধনী দিনে বিশেষায়িত ১৪টি স্কুল ও সংগঠনের মোট ৮৩ জন শিশু-কিশোর এই ক্যাম্পে অংশ নেয়। শিশু-কিশোর আঁকিয়েদের সঙ্গে ৪৯ জন শিল্পী ছবি আঁকায় অংশ নেন।

আজ আর্টক্যাম্পের চিত্রকর্মগুলো নিয়ে একটি প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, অটিজম নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশুরা অধিকাংশ সময় স্বাভাবিক জীবন যাপন করার সুযোগ পায় না। তাদের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার সুযোগ পায় না। তারা তাদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশের সুযোগ পেলে সমাজের বোঝা হযে থাকবে না, দেশের সকল উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নিতে পারবে। আর সেজন্য এ শিশুদের অভিভাবককে সচেতন হতে হবে। শিল্পী হাশেম খান বলেন, আমি ‘অটিজম’ শব্দটি ব্যবহার করার পক্ষপাতি নই। আমি মনে করি, একটি শিশু যেভাবে আছে, সেটাই স্বাভাবিকতা। প্রত্যেকটা মানুষ এক রকম চেহারার হয় না। কেউ অভিনেতা বা অভিনেত্রী হয়ে জন্মায় না। মা-বাবাদের এ বিষয়গুলো বুঝতে হবে।

অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শিশুর কোথায় দুর্বলতা তা দেখতে হবে। সেই দুর্বলতা দূর করার জন্য আনন্দের মাধ্যমে শিখিয়ে তাকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে হবে। কেবল স্পেশাল চাইল্ড নয়, স্বাভাবিক শিশুদের ক্ষেত্রেও একই আচরণ করতে হবে। তিনি বলেন, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শিশুদের ছবি আঁকার ক্ষেত্রে কোনো কিছু বলে দেবেন না, কোনো শিক্ষক রাখবেন না। শিক্ষকরা আরও ক্ষতি করবে। চারুকলার ছাত্র বা শিক্ষক যেই স্কুল করুক না কেন, তাতে যদি শিশুদের ঠিকমত মনস্তাত্ত্বিক পরিচর্যা না করতে পারে, তাহলে শেখানোর প্রয়োজন নেই। বেশিরভাগ জায়গায় আমি দেখেছি কোনো পুরস্কার পাওয়া ছবি শিশুদের সামনে টানিয়ে দিয়ে ওই রকম করে আঁকতে বলা হয়। এটা অন্যায়। নাচ, গান আর ছবি আঁকা এক জিনিস নয়। শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, যখন এসব শিশুরা ছঁবি আঁকবে, তখন তাদের চিন্তার জগৎ খুলে যাবে। তারা চিন্তাশীল হবে যে তারা কী আঁকছে। এজন্য তাদের আঁকার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিতে হবে। তিনি বলেন, সংস্কৃতির চর্চা মানুষকে তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে পথ প্রদর্শকের ভূমিকা রাখে। তাই শিশুদের এসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। সংস্কৃতির চর্চার মাধ্যমে যেন শিশুরা নিজেদের ভবিষ্যৎকে রাঙাতে পারে। সে জন্য আমাদের অভিভাবকদের কাজ করতে হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status