দেশ বিদেশ
নুসরাত হত্যায় কাদেরের জবানবন্দি ‘আগের রাতে তার কক্ষে হত্যার পরিকল্পনা’
ফেনী প্রতিনিধি
১৯ এপ্রিল ২০১৯, শুক্রবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে হাফেজ আবদুল কাদের। বুধবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ফেনীর জ্যেষ্ঠ হাকিম সারাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পিবিআই-এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, নুসরাত হত্যা মামলার এজহারভুক্ত আসামি হাফেজ আবদুল কাদের হত্যার পরিকল্পনাকারী ও হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে দেয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পর্কিত অনেক তথ্য উঠে এসেছে। হাফেজ আবদুল কাদের ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক এবং একই মাদরাসার ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মাদরাসার অধ্যক্ষ (বর্তমানে বরখাস্ত) এস এম সিরাজ-উদ-দৌলার অনুগত হিসেবে মাদরাসার ছাত্রাবাসে থাকতেন। হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে অন্যতম এ আবদুল কাদের হত্যার আগের রাতে মাদরাসায় তার কক্ষে পরিককল্পনা বৈঠক করে। একই সাথে ঘটনার দিন সে হত্যাকারীদের নিরাপত্তায় মাদরাসার গেট পাহারায় ছিলো। এজাহারভুক্ত আসামি হাফেজ আবদুল কাদেরকে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকার ৬০ ফুট সড়ক এলাকা সংলগ্ন ছাপরা মসজিদের কাছে বড় ভাই আব্দুর রহিমের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছিলো পিবিআই- দাবি করেছে তার মামা মাহবুবুল আলম। তবে পিবিআই’র পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কাহ আলম জানিয়েছে বুধরাতে রাতে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কাদের সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মনছুর খান পাঠানবাড়ির আবুল কাসেমের ছেলে। এদিকে এর আগে নুসরাত জাহার রাফি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে মামলার অন্যতম আসামী নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম ও আবদুর রহিম শরিফ। আলোচিত এ মামলা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে মাদরাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলা, পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক (সদ্য অব্যাহতি প্রাপ্ত) মাকসুদ আলম, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম শরিফ ও মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ আবদুল কাদের। এদের মধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত আট জন আসামি সকলে গ্রেপ্তার হয়েছে। গত ৬ই এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিমের আরবি পরীক্ষা প্রথম পত্র দিতে গেলে মাদরাসায় দুর্বৃত্তরা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ দিন পর ১০ই এপ্রিল রাতে মারা যায়। এ ঘটনায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতে ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ই এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে।