দেশ বিদেশ

৬৭ ভাগ মৃত্যু হচ্ছে অসংক্রামক রোগে

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ এপ্রিল ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৪২ পূর্বাহ্ন

দেশে দিন দিন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মারাও যাচ্ছে। এখন ৬৭ ভাগ মৃত্যু হচ্ছে অসংক্রামক রোগে বা এনসিডিতে। এই রোগের কারণে বছরে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচারের পরিবর্তন, দ্রুত নগরায়ণ, ধূমপান, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের প্রসার, বায়ুদূষণ, মানসিক চাপের কারণে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি) ও ভোরের কাগজের যৌথ উদ্যোগে‘এনসিডি মোকাবেলায় সবার উপরে স্বাস্থ্য, সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এই তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি রোগ ইত্যাদিতে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আর আগে মানুষ বেশি মারা যেত ছোঁয়াছে রোগ কলেরা, টাইফয়েড ইত্যাদিতে। ২০১১ সালে অসংক্রামক রোগে মারা গেছে ৫২ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৫৯ শতাংশ। আর এই সংখ্যা ২০১৭ সালে এসে দাঁড়ায় ৬৭ ভাগ। জীবনযাত্রার ধরন তথা লাইফ-স্টাইল পরিবর্তনের সূত্র ধরে রোগের ধরনে গুণগত পরিবর্তন এসেছে। তাই অসংক্রামক রোগ থেকে বাঁচতে মানুষকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়েছেন এই বিশেষজ্ঞ।  এই রোগের বিষয়ে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। স্কুল থেকেই শারীরিক ব্যায়াম সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে শিশুদের। আইনের বাধ্যবাধকতাও থাকতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সকলের সমন্বয় প্রয়োজন। প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, উপযুক্ত প্রযুক্তি, মনিটরিং ও মূল্যায়ন এবং গবেষণা দরকার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও প?রিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান বলেন,
সচেতনতা তৈরি করা ছাড়া অসংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধের কোনো উপায় নেই। তিনি বলেন, পারিবারিক পর্যায় থেকে অসংক্রামক রোগের প্রতিরোধে সচেতনতার শিক্ষা শুরু করতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা সবাই পরিশ্রম না করাসহ জাঙ্কফুডের মত ক্ষতিকর খাদ্যে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। ফলে অসংক্রামক ব্যাধির দিন দিন বাড়ছে। আমাদের সচেতনতার মাধ্যমেই চলার পদ্ধতিতে সুশৃংখল জীবন যাপনের অভ্যাস করতে হবে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন অসংক্রমক রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে তিনি মন্তব্য করেন। এর জন্য জনসচেতনতা প্র?য়োজন।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের  পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান বলেন, দেশে উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগে এটা ২৫ ভাগ ছিল। এখন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হয়েছে। হৃদরোগে ১৭ শতাংশ লোক মারা যাচ্ছে। হৃদরোগ মহামারি আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,  ২০১৭ সালে ৭০ হাজার রোগী ভর্তি হয় তার হাসপাতালে। ২০১৮ সালে ৮০ হাজার এবং ২০১৯ সালে এই সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হৃদরোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের প্রতি নজর দেয়ার তাগিদ দেন এই বিশেষজ্ঞ। পরিবেশ বাঁচায় আন্দোলনের নেতা আবু নাসের  খান বলেন, প্রকৃতি ভাল না থাকলে আমরাও ভাল থাকবো না। পরিবেশকে ভাল রাখতে হবে। জনগণকে সচেতন করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো  বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো, আসাদুল ইসলাম, এনসিডিসি’র লাইন ডাইরেক্টর নূর মোহাম্মদ,ঢাবি’র পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক খালেদা ইসলাম, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status