শেষের পাতা

অসামপ্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন

স্টাফ রিপোর্টার

১৬ এপ্রিল ২০১৯, মঙ্গলবার, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন

অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে সারা দেশে উদ্‌যাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬। বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষকে বরণের মধ্য দিয়ে জাতি জীর্ণ-পুরাতনকে পেছনে ফেলে সম্ভাবনার নতুন পথে যাত্রা শুরু করলো
। রাজধানীসহ দেশব্যাপি বর্ণিল আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়েছে। বাঙালির আত্মপরিচয়ের তালাশ আহবানে রমনার বটমূলে ছায়ানট ১৪২৬ বঙ্গাব্দ বরণ করে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বাঁশিতে রাগ আহীর ভাঁয়রো পরিবেশনার মধ্য দিয়ে রমনা বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন। একক ও সম্মিলিত কন্ঠে সংগীত পরিবেশনা আর কবিতায় ছায়ানটের শিল্পীরা স্বাগত জানান পহেলা বৈশাখকে।

নানান রঙের পোশাকে এ সময় রমনার বটমূলে শতাধিক শিল্পী তাদের সুর-ছন্দ আর তাল-লয়ে বৈশাখের বন্দনা করে স্বাগত জানান নতুন বছর ১৪২৬-কে। বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে বাংলা নববর্ষের বর্ণিল আকর্ষণ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ভিসির নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড় হয়ে টিএসসি ঘুরে চারুকলায় এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় অনেক বিদেশি অতিথিও অংশ নেন।

মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, বাংলা নববর্ষ বাঙালির আবহমান কালের সর্বজনীন ও অসামপ্রদায়িক সাংস্কৃতিক উৎসব। এর মধ্য দিয়ে আমরা অনুভব করি উদার, মানবিক ও অসামপ্রদায়িক চেতনা। এই উৎসবের অসামপ্রদায়িক, উদার ও মানবিক মূল্যবোধের চেতনা সারাদেশের মানুষের মধ্যে বিরাজমান। শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে সামপ্রতিক ঘটনাপ্রবাহের প্রতীকী উপস্থাপনের জন্য নানা বিষয় স্থান পায়। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করে নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে হওয়া এ মঙ্গল শোভাযাত্রা।

এদিকে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দল এবং বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। সুরের ধারার আয়োজনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় হাজারো কণ্ঠে বর্ষবরণ। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং অনুষ্ঠানে অংশ নেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, চ্যানেল আই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ ও সুরের ধারার কর্ণধার রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গল শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ১০টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।

শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য ছিল- ‘নদী’। মূল স্লোগান ছিল- ‘বাঁচলে নদী বাঁচবে দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল সংগীত বিভাগের পরিবেশনায় নৃত্য ও দলীয় সংগীত, লোক সংগীত। শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বাংলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদফতর, জাতীয় জাদুঘর, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, কপিরাইট অফিস, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আলোচনাসভা, প্রদর্শনী, কুইজ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। এ উপলক্ষে রাজধানীতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল সাধারণ মানুষের উপচেপড়া ভিড়। নানা শ্রেণি ও বয়সের মানুষের ছুটি দিনে উপভোগ করেন বর্ষবরণের নানা আয়োজন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status