ষোলো আনা
সীমাহীন প্রেম
শরিফা আক্তার
১২ এপ্রিল ২০১৯, শুক্রবার, ৮:২১ পূর্বাহ্ন
যদিও ঘোড়ায় চড়ে আজকাল রাজকুমার আসে না রাজকুমারীর খোঁজে। তবু মনের কোণে একটি স্বপ্ন ছিল অনুর। সে স্বপ্ন আলোর মুখ দেখবে কি না তা নিয়ে ওর মনেও যথেষ্ট সন্দেহ ছিল। স্বপ্নটি ছিল প্রেম করে তবেই বিয়ে হবে। নিজের মনে একটি ছবিও এঁকেছিল সে। খুব সুদর্শন হওয়ার দরকার নেই তবে লম্বা হবে বেশ, নৌকার পাটাতনের মতো প্রশস্ত বুক। যেখানে সে নিশ্চিন্তে হেলান দিতে পারে। যার ছায়ায় খানিক জিরিয়েও নিতে পারে। একজন ভালো মানুষ হবে। ঝিনুক থেকে মুক্তো খোঁজার মতোই কঠিন এমন কাউকে পাওয়া। অনুর স্বপ্ন ক্রমশই ঝাঁপসা হতে শুরু করলো। অনার্স শেষ করে মাস্টার্স করছে অনু। মাস্টার্সের একটি পরীক্ষা দিয়ে যখন সে বাড়ি ফিরলো ল্যান্ডফোন বেজে উঠলো। ওপ্রান্তে শিরিন।
আজকে একটু সময় হবে তোর?
কেন?
একটু জরুরি দরকার।
অনেক ভেবে বিকেলে শিরিনের বাসায় গেল অনু। শিরিনের বর তালপাতার সেপাইয়ের মতো এক ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলো তাকে। স্বপ্ন ভঙ্গ হবার মতো পরিস্থিতিতে নিজেকে একটু সামলে নিয়ে সাধারণ কথাবার্তা শেষে অস্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরলো অনু। ফিরতেই শিরিনের ফোন।
কেমন দেখলি?
কাকে?
রাকিব সাহেবকে?
অনু বলল, এ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। যা করার আমার অভিভাবকরাই করবেন। আর ভালো লাগছে না কথা বলতে।
শিরিন বলল, লোকটি কিন্তু খুব ভালোমানুষ।
কেটে গেল দু’সপ্তাহ। কোনো এক হরতালের রাতে রাকিব সাহেবের সঙ্গে অনুর বিয়েটা হয়ে গেল। সবার ভাবনা কেমন অনু না জানলেও এটা জানে স্বপ্ন থেকে অনেক দূরে সড়ে এসেছে সে।
এই ভাবনায় বিমর্ষ আশাহত হরিণীর মতো চুপ করে বসে আছে সে। অল্পবিস্তর আলাপের ফাঁকে অনু আবিষ্কার করলো রাকিবের তালপাতার সেপাই অবয়বের ভেতর প্রশস্ত, সীমাহীন, গতিশীল ও আধুনিক এক মানুষ।
যদিও অনুর ইচ্ছে ছিল প্রেমের পরেই বিয়েটা করার, তবে এখন মনে হচ্ছে জীবনের প্রয়োজনে যা হচ্ছে তা নিশ্চয় খারাপ না।
রাকিবের সহনশীল মনোভাবের গল্পে কখন যে ভোর হলো একটুও টের পায়নি অনু।
মনে মনে সে ভাবছে আহা মুয়াজ্জিন যদি আরও কিছুক্ষণ পর আজানটা দিতো! ভোর যদি শেষ না হতো!
ভোরের আলোর সঙ্গে সঙ্গে অনুর জীবনটাও একটু একটু করে আলোকিত হতে শুরু করলো।
বিধাতা সূক্ষ্ম তরবারি দিয়ে কৈশোর ও যৌবনের মাঝে এমন করে কেটেছেন যা দেখা যায় না। অনুভব করা যায়। আর অচেনা আজানা মানুষটির প্রতি অনুর মমতা কেন এত সে বুঝতে পারছে। এই থেকে পথ চলা শুরু অনুর নব জীবনের। কিছুদিন প্রেম নয়, পারস্পারিক বিশ্বাস ও ত্যাগ এবং মমতার সঙ্গে ষোলোটা বছর ধরে চলছে অনু-রাকিবের বিশুদ্ধ প্রেম। অনুর এখন মনে হয় কিছুদিন প্রেম যদি ‘কিছুদিনই’ হতো তাহলে তো সে অনন্তকাল ধরে প্রেম করা থেকে বঞ্চিত হতো।
আজকে একটু সময় হবে তোর?
কেন?
একটু জরুরি দরকার।
অনেক ভেবে বিকেলে শিরিনের বাসায় গেল অনু। শিরিনের বর তালপাতার সেপাইয়ের মতো এক ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলো তাকে। স্বপ্ন ভঙ্গ হবার মতো পরিস্থিতিতে নিজেকে একটু সামলে নিয়ে সাধারণ কথাবার্তা শেষে অস্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরলো অনু। ফিরতেই শিরিনের ফোন।
কেমন দেখলি?
কাকে?
রাকিব সাহেবকে?
অনু বলল, এ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। যা করার আমার অভিভাবকরাই করবেন। আর ভালো লাগছে না কথা বলতে।
শিরিন বলল, লোকটি কিন্তু খুব ভালোমানুষ।
কেটে গেল দু’সপ্তাহ। কোনো এক হরতালের রাতে রাকিব সাহেবের সঙ্গে অনুর বিয়েটা হয়ে গেল। সবার ভাবনা কেমন অনু না জানলেও এটা জানে স্বপ্ন থেকে অনেক দূরে সড়ে এসেছে সে।
এই ভাবনায় বিমর্ষ আশাহত হরিণীর মতো চুপ করে বসে আছে সে। অল্পবিস্তর আলাপের ফাঁকে অনু আবিষ্কার করলো রাকিবের তালপাতার সেপাই অবয়বের ভেতর প্রশস্ত, সীমাহীন, গতিশীল ও আধুনিক এক মানুষ।
যদিও অনুর ইচ্ছে ছিল প্রেমের পরেই বিয়েটা করার, তবে এখন মনে হচ্ছে জীবনের প্রয়োজনে যা হচ্ছে তা নিশ্চয় খারাপ না।
রাকিবের সহনশীল মনোভাবের গল্পে কখন যে ভোর হলো একটুও টের পায়নি অনু।
মনে মনে সে ভাবছে আহা মুয়াজ্জিন যদি আরও কিছুক্ষণ পর আজানটা দিতো! ভোর যদি শেষ না হতো!
ভোরের আলোর সঙ্গে সঙ্গে অনুর জীবনটাও একটু একটু করে আলোকিত হতে শুরু করলো।
বিধাতা সূক্ষ্ম তরবারি দিয়ে কৈশোর ও যৌবনের মাঝে এমন করে কেটেছেন যা দেখা যায় না। অনুভব করা যায়। আর অচেনা আজানা মানুষটির প্রতি অনুর মমতা কেন এত সে বুঝতে পারছে। এই থেকে পথ চলা শুরু অনুর নব জীবনের। কিছুদিন প্রেম নয়, পারস্পারিক বিশ্বাস ও ত্যাগ এবং মমতার সঙ্গে ষোলোটা বছর ধরে চলছে অনু-রাকিবের বিশুদ্ধ প্রেম। অনুর এখন মনে হয় কিছুদিন প্রেম যদি ‘কিছুদিনই’ হতো তাহলে তো সে অনন্তকাল ধরে প্রেম করা থেকে বঞ্চিত হতো।