বাংলারজমিন

৪৭ বছর পর আলো জ্বলেছে!

নিকলী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৭ মার্চ ২০১৯, বুধবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন

অবশেষে ৪৭ বছর পর জ্বললো আলো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তারের উদ্যোগে ২৫শে মার্চ সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার সর্ববৃহৎ বধ্যভূমি কেন্দ্রীয় শ্মশান ঘাটে প্রথম বারের মতো মোমবাতি প্রজ্বালনসহ নানা আয়োজনে স্মরণ করা হয়েছে ৩৪ শহীদকে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিকলী থানা অফিসার ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দিন ভূঁইয়া, ওসি (তদন্ত) সামছুল আলম সিদ্দিকী, বাসদ নেতা সাজেদুল হক সেলিম, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির নিকলী সভাপতি সঞ্জয় সাহা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূরুজ্জামান হাবীব, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান প্রমুখ।
স্বাধীনতা সংগ্রামকালের ২১শে সেপ্টেম্বর উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের মিস্ত্রি পাড়ার ৩৯ জনকে নিরাপত্তা কার্ড দেয়ার আশ্বাস দেয় শান্তি কমিটির স্থানীয় দালাল ও তৎকালীন দামপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাহেব আলী ওরফে ট্যাকার বাপ। সিরাজ, সানাইসহ কয়েক রাজাকারের তত্ত্বাবধানে তাদেরকে নিয়ে আসা হয় রাজাকার ক্যাম্প নিকলী থানায়। এদের মধ্যে বাদল সূত্রধর, বাদল বর্মন, সুনু বর্মন, গোপাল সূত্রধর বয়সে কিশোর হওয়ায় রাখা হয় থানা লক আপে। বাকিদের পিঠমোড়া বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে চালানো হয় নির্যাতন। ক্ষণে ক্ষণে লাঠি আর বেয়নেটের খোঁচাখুঁচি চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। পাক মেজর দোররানীর (নিকলী জিসিপি উচ্চ বিদ্যালয় পাক ঘাঁটিতে অবস্থানরত) সঙ্গে ওয়ারলেসযোগে সিদ্ধান্ত নেয় হোসেন আলী। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ঐ ৩৫ গ্রামবাসীকে থানার নিকটস্থ সোয়াইজনী নদীর পশ্চিমপাড়ের শ্মশানখলা ঘাটে সারিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে চালানো হয় ব্রাস ফায়ার। রাজাকারদের সহযোগিতায় গুলিবিদ্ধ ৩৫ জনকেই হলুই (মাছ গাঁথার বড় সুই) করে নিয়ে যাওয়া হয় ধুবলারচর নামক হাওরে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে বর্ষার পানিতে ডুবিয়ে দেয় সবাইকে। কামিনী বর্মন নামে একজন কাকতালীয়ভাবে বেঁচে যান। ভোর বেলায় ছেড়ে দেয় থানা লক আপের ৪ কিশোরকে। ততক্ষণে হাওরের জলে ভেসে গেছে তাদের মা-কাকীর সিঁদুর।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, সুদীর্ঘ সময়ে বধ্যভূমিটিতে শহীদ বেদি হয়নি এটি দুঃখজনক। শিগগিরই শহীদ বেদি নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status