বিনোদন
‘এটি খুব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’
স্টাফ রিপোর্টার
২৭ মার্চ ২০১৯, বুধবার, ৭:৫৪ পূর্বাহ্ন
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মৌসুমী আক্তার সালমা এ বছরের শুরুতে নিজের দ্বিতীয় বিয়ের খবর সংবাদমাধ্যমের কাছে জানান। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ছেলে সানাউল্লাহ নূরে সাগরকে বিয়ে করেন তিনি। সাগর লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। তাদের বিয়ে হয়ে হয়েছে প্রায় পাঁচ মাস। এতদিন পর খবর প্রকাশ পেয়েছে, কক্সবাজারের মেয়ে পুষ্মিকে ২০১৪ সালের ৩রা জুন বিয়ে করেছিলেন সাগর। প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়েই তিনি সালমাকে বিয়ে করেন। সংবাদমাধ্যমে সালমার সঙ্গে সাগরের বিয়ের খবরটি প্রকাশের পরই প্রথম স্ত্রীর পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। এদিকে বিয়ের খবর প্রকাশের আগেই গত বছরের ১৯শে নভেম্বর কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ সাগরের প্রথম স্ত্রী পুষ্মির মা বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩রা জুন সানাউল্লাহ নূরে সাগরের সঙ্গে কক্সবাজারের মেয়ে পুষ্মির ২০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয়। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থীকে বিয়ের পর থেকে নানাভাবে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন সাগর। শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। মেয়ের কথা চিন্তা করে সাগরকে ৩ কিস্তিতে ১০ লাখ দেয়া হয়। সেই টাকায় সানাউল্লাহ নূরে সাগর যুক্তরাজ্যে ‘বার অ্যাট ল’ পড়তে যান। এর মধ্যে বাংলাদেশে এসে কাউকে না জানিয়ে তিনি ক্লোজআপ তারকা সালমাকে গোপনে বিয়ে করেন এবং নিজেকে অবিবাহিত দাবি করেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের বদৌলতে সালমার সঙ্গে বিয়ের খবর জানাজানি হয়। সালমা বিষয়টিকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে বলেন, আমার স্বামী ও আমাকে হয়রানি করতেই এই সাজানো মামলা করা হয়েছে। ওই নারী নিজে সংসারে সুখী হতে পারেননি। তাই এখন আরেকজনের সংসার নষ্ট করতে চাইছেন। সাগরের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ সবই মিথ্যা। এটি খুব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আমার স্বামীর টাকার দিকেই হয়তো তাদের নজর। সে জন্য এই মামলা। যদি কিছু টাকা হাতিয়ে নেয়া যায় আর কী! সালমা মানবজমিনকে আরো বলেন, আমি কিন্তু সাগর সম্পর্কে জেনেশুনেই বিয়ে করেছি। তার আগে বিয়ে হয়েছিল এবং এক বছর আগেই ডিভোর্স হয়েছে। প্রশ্ন হলো, যার সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গেছে তাকে কীভাবে স্বামী বলে দাবি করেন ওই মহিলা? তাছাড়া ডিভোর্সের একবছর পর নারী নির্যাতন মামলা হয় কী করে! এখানে অন্য উদ্দেশ্য আছে। সাগরের বর্তমান স্ত্রী আমি একজন সংগীতশিল্পী। এখন সাগরকে নিয়ে কথা বললে আলোচনায় আসা যাবে। আমার ইমেজে আঘাত করে ওই নারী ও তার পরিবার পরিকল্পিত কোনো উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। সালমা আরো বলেন, আমার স্বামী নিজে আইনের ছাত্র। আমি নিজেও আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছি। এটা তো মিথ্যা মামলা। একজন মানুষ লন্ডন থেকে কীভাব নারী নির্যাতন করতে পারে! আইনিভাবেই এর মোকাবিলা করবো আমরা। এদিকে সাগরের প্রথম স্ত্রীর পরিবার গণমাধ্যমকে আরো জানায়, গত ৭ই অক্টোবর সাগর লন্ডন যান। সেখানে পৌঁছার পর তিনি নিজে থেকে যোগাযোগ করেননি। তার খবর জানতে ফোন করা হলে সাগর খারাপ ব্যবহার করতেন। কথাবার্তাও সন্দেহজনক মনে হতে থাকে। বাধ্য হয়েই গত বছরের ১৯শে নভেম্বর কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা করা হয়। সালমার স্বামী সানাউলল্লাহ নূরে সাগরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নম্বর ২৫৪। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১(গ), ১১ (গ)/৩০ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় সালমার দ্বিতীয় স্বামী সানাউল্লাহ নূরে ও তার বাবা-মাকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম মাহমুদুর রহমান। প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ার মেয়ে মৌসুমী আক্তার সালমা সংগীত রিয়েলিটি শো ‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’-এর দ্বিতীয় আসরের চ্যাম্পিয়ন। তার গাওয়া বেশকিছু গান শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। ২০১১ সালের ২৫শে জানুয়ারি সালমা প্রথম বিবাববন্ধনে আবদ্ধ হন শিবলী সাদিকের সঙ্গে। স্নেহা নামে তাদের ঘরে ৭ বছরের এক কন্যাসন্তান আছে। সে বাবার কাছেই থাকছে এখন।