খেলা

জহুরুলের ৪ রানের আক্ষেপ

মোহামেডানকে হারিয়ে আবাহনীই শীর্ষে

স্পোর্টস রিপোর্টার

২৬ মার্চ ২০১৯, মঙ্গলবার, ৮:৫৬ পূর্বাহ্ন





টানা চার ম্যাচ জয়ের পর পঞ্চম রাউন্ডে হেরে যায় আবাহনী। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের চলতি আসরে এখন পর্যন্ত শীর্ষে থাকা দলটি জয়ে ফিরতে তাই মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছিল। হারলে ছেড়ে দিতে হবে শীর্ষ স্থান- এমন হুমকি সামনে রেখে ম্যাচের প্রতিপক্ষটা ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। তবে শেষ পর্যন্ত সহজ জয়ই পায় আকাশী-হলুদ জার্সিধারীরা। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে মোহামেডানকে ৬ উইকেটে হারায় শিরোপাধারী আবাহনী। অন্যদিকে টানা তিন হারে লীগে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান। যদিও তারা টানা তিন জয়ে শুরু করেছিল আসর। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে মোহামেডান গুটিয়ে যায় ২৪৮ রানে। দলের পক্ষে ফিফটি হাঁকান ইরফান শুক্কুর ও রকিবুল হাসান। জবাব দিতে নেমে জহুরুল ইসলাম অমির ব্যাটে সহজেই জয়ের পথ খুঁজে পায় আবাহনী। দল জিতলেও আক্ষেপে পুড়ছেন অমি। মাত্র ৪ রানের জন্য চলতি আসরে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন এই ওপেনার। অবশ্য ম্যাচসেরা হয়ে অমি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সেঞ্চুরি বঞ্চিত হওয়ার কষ্ট তিনি ভুলেছেন দলের জয়ে। আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে আগের সেই দর্শক এখন আর হয় না। থাকে না গ্যালারি জুড়ে উত্তেজনা। গতকালও দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ ছিল একবারেই উত্তাপহীন। অন্যদিকে দিনের আরেক ম্যাচে বিকেএসপি-৩ মাঠে মেহেদী মারুফের টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে জয় পেয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতিকে ৫ উইকেটে হারায় তারা। এ জয়ে আবাহনীর সমান ১০ পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে পিছিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রূপগঞ্জ। আর শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে আবাহনী।
মোহামেডানের ছুড়ে দেয়া ২৪৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করেন আবাহনীর দুই ওপেনার জহুরুল ইসলাম ও সৌম্য সরকার। দুজনের জুটিতে আসে ১০৫ রান। জাতীয় দলের তারকা ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার এদিন আউট হন ব্যক্তিগত ৪৩ রানে। তবে ভারতীয় ব্যাটসম্যান ওয়াসিম জাফরকে নিয়ে ফের লড়াই শুরু করেন অমি। দলের ১৭৪ রানের সময় ফের হোঁচট খায় আবাহনী। ৩৩ রান করে আউট হন জাফর। এরপর দলের তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত অমিকে সঙ্গ দিতে ১৮ রান করে ফিরে জান সাজঘরে। দলের স্কোর বোর্ডে যখন ২১৪ রান ঠিক তখনই ১৩১ বলে ১২ চারে ৯৬ রান করা অমি সাহাদাত হোসেন রাজীবের বলে বোল্ড হয়ে আউট হন। তবে শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ১৮ ও সাব্বির রহমান রুম্মান ২১ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন। ৬ ম্যাচে এ নিয়ে ৫টিতে জয় তুলে নিয়েছে দলটি।  মোহামেডানের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি রাজীব নিয়েছেন ২ উইকেট।
এর আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আবাহনী লিমিটেড। ব্যাট করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মোহামেডানের দুই ওপেনারই ফিরেছেন ক্রিসে সেট হয়েও দলকে বিপদে ফেলে আউট হন ৪০ রানের জুটির পর। জাতীয় দলের তারকা লিটন দাস নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরে লীগে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন নিজ দলের হয়ে। ওপেন করতে নেমে ২৭ রানে আউট হন তিনি। এরপর ২৬ রান করা আরেক ওপেনার আবদুল মজিদও আউট হন বাজেভাবে। তবে অধিনায়ক রকিবুল হাসান এবং উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর জোড়া ফিফটি হাঁকিয়ে দলের বিপর্যয় রক্ষা করেন। তবে ৭৮ বলে ৫৭ রান করে আউট হয়েছেন ইরফান ও রকিবুল থেমেছেন ৫৪ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলে হাল ছাড়েন বাজে এক শটে। চলতি লীগে শেষদিকে চতুরাঙ্গা ডি সিলভা ২৪ বলে ৩২ এবং সোহাগ গাজী ২০ বলে ২৭ রান করলে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪৮ রান পর্যন্ত পৌঁছায় মোহামেডানের সংগ্রহ। আট নম্বরে নেমে ৭ বল খেলে ৪ রানের অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ আশরাফুল। আবাহনীর পক্ষে বল হাতে ৩টি করে উইকেট নেন নাজমুল ইসলাম অপু এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। অন্য উইকেট যায় মোসাদ্দেক হোসেনের ঝুলিতে। এদিন আবাহনীর অন্যতম বোলিং ভরসা মাশরাফি বিন মুর্তজা ৫১ রান খরচ করে একটি উইকেটও পাননি।
 
মারুফের সেঞ্চুরিতে রূপগঞ্জের জয়
পয়েন্ট তালিকাতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ নিয়েই বিকেএসপিতে নেমেছিল লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ। সামনেই ছিল সহজ প্রতিপক্ষ খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতি। টসে জিতে খেলাঘরকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে অবশ্য বিপদেই পড়েছিল রূপগঞ্জের অধিনায়ক। মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান তুলে নেয় দলটি। দলের পক্ষে ওপেনার রবিউল ইসলাম ফের ফিফটি হাঁকান। তার ব্যাট থেকে আসে ৮৭ বলে ৫৩ রানের ইনিংস। তার আউটের আগে অবশ্য দ্রুতই ১৯ রান করা আরেক ওপেনার সিদ্দিকুর রহমান আউট হন ১৯ রানে। এরপর রবি দলের হাল ধরেছিলেন মাহমুদুল ইসলাম অঙ্কনকে নিয়ে। রবি ফিরে গেলেও অঙ্কন দারুণ খেলতে থাকেন। তিনি জুটি বাঁধেন ভারতীয় ব্যাটম্যান অশোক মেনেরিয়াকে নিয়ে। ৯৯ বলে ৭৭ রান করে অঙ্কন আউট হলেও ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন অশোক। দলের পক্ষে তিনটি ফিফটি আসলে রান তোলার গতি খুব বেশি ছিল না।
জবাব দিতে নেমে রূপগঞ্চের দুই ওপেনার মেহেদী মারুফ ও  মোহাম্মদ নাইম গড়ে তোলেন ১১৮ রানের জুটি। এই জুটিতেই জয়ের সুভাস পেতে শুরু করে রূপগঞ্জ। তবে ৭২ রান করে নাঈম আউট হলে কিছুটা ছন্দপতন ঘটে। মারুফকে সঙ্গ দিতে এসে জাতীয় দলের আরেক তারকা মুমিনুল হক আউট হন ২৬ রান করে। এরপর অভিজ্ঞ শাহরিয়ার নাফীস আউট হন মাত্র ৮ রানে। তবে তখনো ক্রিজে ব্যাট হাতে অবিচল মারুফ। শেষ পর্যন্ত ১৩৪ বলে ৮ চার ও দুই ছয়ে ১০৮ রান করে আউট হন তিনি। ততক্ষণে দলের স্কোর বোর্ডে যোগ হয়েছে ২৩৯ রান। শেষ দিকে ১৮ রান করে জাকির আলী আউট হলেও অধিনায়ক নাঈম ইসলাম দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি। তার অপরাজিত ২৮ রানে নিজেদের ৫ম জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।



   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status