দেশ বিদেশ

ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির অন্যরকম সমাবর্তন

স্টাফ রিপোর্টার

২৫ মার্চ ২০১৯, সোমবার, ৯:১৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশে সমাবর্তনের ইতিহাসে অনেক নতুনের সমাহারে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিÑইডিইউ’র প্রথম সমাবর্তন। বলা যায়, ইডিইউর হাত ধরে সমাবর্তনে নতুন যুগের শুরু হলো এদেশে। ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির এ সমাবর্তনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল এর মেডেল। আমেরিকায় গ্র্যাজুয়েটদের মেডেল দেয়া হলেও উচ্চশিক্ষার জন্য প্রসিদ্ধ ইউরোপ, এমনকি বাংলাদেশেও সমাবর্তনে মেডেল দেয়ার প্রচলন খুবই কম। কিন্তু ডিস্টিংকশনসহ পাস করা ১২০ জন গ্র্যাজুয়েটকে মেডেল দিয়েছে ইডিইউ। যার মধ্যে ছিলো সুম্মা কাম লডে, মেগনা কাম লডে ও কাম লডে- আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সর্বোচ্চ এই তিনটি গ্রেডে উত্তীর্ণ হওয়া গ্র্যাজুয়েটদের। সর্বোচ্চ গ্রেড অর্জনকারীদের স্বীকৃতিস্বরূপ স্যুভেনির হিসেবে একটি বিশেষ মেডেল, সনদ ও মেডেলের জন্য কাঠের ফ্রেম দেয়া হয়। প্রথম সমাবর্তনে ইডিইউর অন্যতম লক্ষ্য ছিল সন্তানের সাফল্যে গর্বিত পিতা-মাতা দুজনকেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন। ভিড় এড়িয়ে সন্তানের বিশেষ মুহূর্তটির সাক্ষী হতে মা-বাবার জন্য অনুষ্ঠানস্থলে গড়ে তোলা হয় উঁচু বেদী। ইডিইউর ফ্যাকাল্টি ও অ্যাডমিনস্ট্রেশনে থাকা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের সমাবর্তনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ইডিইউ আয়োজন করে এই সমাবর্তন।

সবমিলিয়ে ইউরোপ-আমেরিকা ও বাংলাদেশে সমাবর্তনের ধারার সমন্বয়ে এক মৌলিক আয়োজনের সাক্ষী হয় চট্টগ্রাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সিকান্দার খানের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া মূল অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্র্য ও প্রেসিডেন্টের পক্ষে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিক্ষাজীবনের এইপর্যায়ে এসে তোমরা যে ডিগ্রি অর্জন করেছ, তাতে তোমাদের পরিশ্রমের পাশাপাশি রয়েছে তোমাদের অভিভাবক, শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোপরি রাষ্ট্রের সীমাহীন ত্যাগ। আশা করি, গ্র্যাজুয়েটরা গভীর কর্তব্যবোধের সঙ্গে একজন নাগরিকের যথাযথ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ অতিথি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেন, অনেকে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থাকলে চাকরি পাওয়া যায়। এটা ভ্রান্ত ধারণা। সকলের মনে রাখা প্রয়োজন, যার দক্ষতা আছে, চাকরি তারই পিছু নেয়। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত জননন্দিত কথাসাহিত্যিক ও কালেরকণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। প্রিয় এই লেখককে কাছে পেয়ে সেলফি-অটোগ্রাফ নেন ইডিইউভিয়ানরা। নিজের লেখালেখি, বিভিন্ন গল্প-উপন্যাস নিয়ে তার পাঠকদের নানা প্রশ্নেরও উত্তর দেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবসময় নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখা বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান এই মহার্ঘ আয়োজনে অংশ নেন। তিনি বলেন, সকলের মতো আমারও কামনা দেশের জন্য, মানুষের জন্য এই প্রতিষ্ঠানে অনেক ভালো ভালো গবেষণাধর্মী কাজ হোক। ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য সিকান্দার খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় তার দালান-কোঠার মাধ্যমে পরিচিত হয় না। পরিচিত হয় তার শিক্ষকম-লী ও শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। ইডিইউর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ইডিইউর উপর আস্থা রাখায় আমরা কৃতজ্ঞ। গ্র্যাজুয়েটদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সম্মানিত করতে পেরে ইডিইউ গর্বিত। পরে তার নেতৃত্বে সমাবর্তনের প্রথানুযায়ী গ্র্যাজুয়েশন ক্যাপ উপরে ছুড়ে মারার মাধ্যমে শিক্ষাজীবনের ইতি টানে গ্রাজুয়েটরা।

সমাবর্তনের গাউনগুলো গ্র্যাজুয়েটদের উপহার দেয়া হয়। এর আগে ২৮শে ফেব্রুয়ারি প্রাক সমাবর্তন সমাবেশের মধ্যদিয়ে চারদিনের কর্মসূচি শুরু হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। ১০ই মার্চ রোববার অনুষ্ঠিত হয় প্রধান আয়োজন। ১১ই মার্চ গালা নাইটের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয় জাঁকজমকপূর্ণ এ উৎসবের। সাড়ে ৬শ’ গ্র্যাজুয়েটের এ অর্জন উদযাপনে রেডিসন ব্লুর মেজবান হলে অনুষ্ঠিত গালা নাইটে ওয়ারফেজ-এর গানসহ নানা সাংস্কৃতিক পর্ব ছিল।
 
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status