প্রথম পাতা

যারা ভয় পান তারা দায়িত্ব ছেড়ে দেন

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ মার্চ ২০১৯, রবিবার, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ এখন বিএনপি নয়, দেশের মানুষের  সঙ্গে দুঃশাসন চলছে। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে বিএনপিকে এগিয়ে আসতে হবে। আর বিএনপিতে যারা মামলা-মোকদ্দমায় ভয় পান, তারা দয়া করে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। যারা ভয় পাবেন না, তারা দায়িত্ব পালন করবেন। গতকাল দুপুরে দলের নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এক অনশন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে এসব কথা বলেন তিনি। দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ থানা বিএনপির আয়োজনে এ প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালিত হয়।

গয়েশ্বর রায় বলেন, মহাসচিব ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বলবো- যারা মামলা-মোকদ্দমা উপেক্ষা করে রাজপথে থেকে ‘গণতন্ত্রের মা’ খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন জোরদার করবেন- তাদের দায়িত্ব দিন। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা সবাই জানি খালেদা জিয়ার মামলাগুলো সবই মিথ্যা। যেসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তেমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। টাকা যা ছিল তা তিন গুণ হয়ে ব্যাংকে আছে। তারপরও খালেদা জিয়াকে ওই মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। ইতিহাস বলে কোনো দেশে জনগণের নেতাকে মামলা, সাজা দিয়ে বেশিদিন আটকে রাখা যায় না। খালেদা জিয়াকেও রাখা যাবে না। আজকে খুশির বিষয় হচ্ছে, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এগিয়ে এসেছেন। বর্তমান সরকার ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি।

জোর করে, বন্দুক পিস্তল ব্যবহার করে, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে তারা ক্ষমতা দখল করে আছে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া যতবার নির্বাচনে দাঁড়ান, কোনোদিন হারেননি। একই সঙ্গে পাঁচটি/তিনটি আসন থেকে নির্বাচন করে প্রতিটি আসনে তিনি জয়ী হয়েছেন। অথচ আওয়ামী লীগের সভাপতি বিভিন্ন আসনে বহুবার হেরেছেন। সমস্যাটা ওখানেই। খালেদা জিয়া জনগণের কাছে এত প্রিয় যে তার জন্য তারা রোজা রাখে, তার মুক্তির জন্য কাঁদে। সেটাই হচ্ছে প্রতিহিংসার কারণ। খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা সম্ভব হবে না- এমন প্রত্যয় জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি- শুধু বিশ্বাসই করি না, আমরা প্রমাণ করবো যে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মুক্ত করে আনবে। অনশনের উদ্বোধনকালে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৩০শে ডিসেম্বর মিডনাইট নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভাবমূর্তিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এখন দুঃশাসনের মাত্রা আরো বৃদ্ধি করেছেন।

গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্য নির্মূল করতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন দেশব্যাপী বিরোধী দল ও মত নির্মূলের খেলা শুরু করেছেন। দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতেই খালেদা জিয়াকে কারান্তরালে রেখে চালানো হচ্ছে নানাবিধ মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। দেশকে নিজের জমিদারিতে পরিণত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারা দেশের মানুষ রাষ্ট্রশক্তির দানবীয় আক্রমণের ভয়ে ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। তবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে জাতীয়তাবাদী শক্তি রাজপথে নামার সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বেলা ১১টার পর প্রতীকী অনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। দুপুর সোয়া ২টায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান। ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে অনশনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status