বাংলারজমিন
তদবিরের অভাবে ভাতা বঞ্চিত অসহায় সুরুজ
স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ থেকে
২৩ মার্চ ২০১৯, শনিবার, ৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
৭৩ বছরেই যেন ৯০ বছরের অথর্ব হয়ে পড়েছেন সুরুজ মিয়া। শরীরজুড়ে নানান রোগ-ব্যাধি। অসহায়ের চেয়েও অতি অসহায় এই বুড়োর বার্ধক্য জীবনে সহায় হতে পুত্রলাভ হয়নি কপালে। চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন শ্রম, ঘাম আর সঞ্চিত সব সম্পদ শেষ করে। স্ত্রীও তাকে ছেড়ে পরপারে চলে গেছেন বহু বছর। হাঁটাচলা তেমন করতে না পারার কারণে লোকজনের কাছ থেকে চেয়ে আনতে পারেন না। গ্রামবাসী দয়া করে খেতে দিলে পেটে কিছু পড়ে তার। না হলে বুভুক্ষুতায় কাটে সুরুজের দিনরাত্রি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া নগর গ্রামের মৃত ফজর আলীর ছেলে সুরুজ মিয়া সীমাহীন দুরাবস্থায় দিন পার করলেও তদবিরের অভাবে পাচ্ছেন না সরকারের দেয়া বয়স্কভাতার সুবিধা। বৃদ্ধ সুরুজ মিয়া বলেন, গত পাঁচ বছর যাবৎ তিনি ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়িয়েছেন একটি কার্ডের জন্য। সর্বশেষ মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছের কাছে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিও তুলে দিয়েছেন বহুদিন আগে। সেখান থেকেও আসেনি কোনো সুফল। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারি থেকে বয়স্কভাতা পাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেয় তার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নবী হোসেন। সে আশায়ও গুড়েবালি সুরুজের। গত শুক্রবার তার সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘বাজান লোকজন না থাকলে এই দ্যাশো কারো কিছু অয়না। আমার তো কেউ নাই। তাই টেহা খাইয়া আমি মরতে পারমু না।’ সঙ্গে করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আশ্বাস দিলে তিনি বলেন, ‘থাক বাজান, কয়দিন পরতো মইরাই যামু! আর ভাতা পাওয়ার দরকার নাই!।’ জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যানুসারে সুরুজের জন্ম ১৯৪৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ। সে অনুসারে আরো ৮ বছর পূর্ব থেকেই বয়স্কভাতা পাবার কথা ছিল তার। কিন্ত জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বহীনতার কারণে অসহায় সুরুজ ভাতা বঞ্চিত। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সোলাইমান মিয়া বলেন, সুরুজ মিয়াকে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি নিয়ে আমাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। দেখি তার জন্য কি করতে পারি।