ষোলো আনা
শিক্ষার্থীদের নয় দফার বাস্তবায়ন কত দূর?
ষোলো আনা ডেস্ক
২২ মার্চ ২০১৯, শুক্রবার, ৮:২৮ পূর্বাহ্ন
ছবি: জীবন আহমেদ
২০১৮ সালের ২৯শে জুলাই সড়কে প্রাণ হারান দিয়া ও করিম নামের দুই শিক্ষার্থী। তারা দুজন রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। এর জেরে দানা বাঁধে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলনে জানানো হয় ৯ দফা দাবি।
দাবি ১: বেপরোয়া চালকদের ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি আইনে সংযোজন করতে হবে।
পদক্ষেপ: বর্তমানে তাদের বিচার আদালতে চলছে। গত ১৯শে সেপ্টেম্বর সড়কে বেপরোয়া গাড়ি চালনায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুমোদন করা হয়েছে।
দাবি ২: নৌপরিবহনমন্ত্রীকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
পদক্ষেপ: তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছিলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মৃত্যু নিয়ে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া বক্তব্যে আমি দুঃখিত ও লজ্জিত। এতে যারা আহত হয়েছেন তাদের বিষয়টি ক্ষমাসুন্দরভাবে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’ আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনে পুনরায় ক্ষমতায় এলেও তিনি আর মন্ত্রীত্ব ফিরে পাননি।
দাবি ৩: রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে।
পদক্ষেপ: এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিল। বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে বেশ কয়েকটি। তবে রাস্তায় ফিটনেসহীন বাস চলার পাশাপাশি লাইসেন্স ছাড়াও চালকরা গাড়ি চালাচ্ছেন।
দাবি ৪: বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।
পদক্ষেপ: এটির বাস্তবায়ন সড়কে পরিলক্ষিত হয়নি।
দাবি ৫: শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএসে ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে।
পদক্ষেপ: রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে আন্ডারপাস বা ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এটির পুরো ফল পেতে আরো সময় লাগবে।
দাবি ৬: প্রত্যেক সড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে।
পদক্ষেপ: এ দাবির সম্পূরক হিসেবে সব স্কুলের সামনে গতিরোধক নির্মাণের পাশাপাশি বিশেষ প্ল্যাকার্ডযুক্ত বিশেষ ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে সড়ক বিভাগ দেশের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে অবকাঠামো উপযোগী করতে শুরু করেছে।
দাবি ৭: সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
পদক্ষেপ: নিহত শিক্ষার্থী আবদুল করিম ও দিয়া খানম মিমের পরিবারকে ২০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
দাবি ৮: শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে।
পদক্ষেপ: এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সড়কে কোনো বাস্তবায়ন লক্ষ্য করা যায়নি।
দাবি ৯: শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
পদক্ষেপ: এই দাবিটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। রাজধানীতেই পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও অনেক বাসে এটি মানা হচ্ছে না। তবে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজকে পাঁচটি বাস দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে।