বাংলারজমিন

স্থায়ী বসবাসের স্বপ্ন দেখছে রোহিঙ্গারা

সরওয়ার আলম শাহীন, উখিয়া থেকে

২০ মার্চ ২০১৯, বুধবার, ৮:২৬ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ-মিয়ানমার কূটনৈতিক পর্যায়ে একাধিক আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বছর ১৫ই নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হয়নি। দু-দেশের সীমান্ত এলাকায় এ নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতির পরও কোনো রোহিঙ্গা পরিবারকে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয় নি। যে কারণে রোহিঙ্গারা মনে করছে তাদেরকে স্বদেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না। তাই রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে নেতৃত্বের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। তারা পুলিশ ও ক্যাম্প প্রশাসনের ওপর হামলা করতেও দ্বিধা করছে না। উপরন্তু রোহিঙ্গাদের উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ড, অনৈতিক জীবন যাপন প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ভাবিয়ে তুলেছে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বলছেন রোহিঙ্গারা এখানে স্থায়ী বসবাসের রঙিন স্বপ্ন দেখছে।
১৯৯১ সালে আশ্রিত কুতুপালং রেজিঃ ক্যাম্পের আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের চেয়ারম্যান রশিদ আহম্মদ তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, মিয়ানমার সরকারের লেলিয়ে দেয়া কিছু রোহিঙ্গা দালালচক্র নির্যাতিত রোহিঙ্গা হিসেবে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এসব রোহিঙ্গারা অভিনব কৌশলে বিভিন্ন ইস্যু সৃষ্টি করে রোহিঙ্গা নেতাদের ক্ষেপিয়ে তুলে যার ফলে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ক্যাম্পে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হত্যা কাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, তিনজন জার্মানি সাংবাদিককে অহেতুক মারধর করে রোহিঙ্গাদের চরিত্র সম্পর্কে সমগ্র বিশ্বকে মর্মাহত করেছে। ঐ রোহিঙ্গা নেতা বলেন, এভাবে যদি হত্যাকাণ্ড, মারামারি ও নৈরাজ্যকর পরিবেশ চলতেই থাকে তাহলে মিয়ানমার সরকার বিশ্বকে বোঝাতে পারবে রোহিঙ্গারা কতটুকু আত্মঘাতী। তাদেরকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে আসা না আসা নিয়ে তারা বিশ্বে জনমত সৃষ্টি করার অপচেষ্টা অবহ্যাত রেখেছে। ঐ শরণার্থী চেয়ারম্যান জানান রোহিঙ্গাদের পরিবেশ অনুকূলে রাখতে হলে মিয়ানমারের লেলিয়ে দেয়া দালাল চক্রদের হাতেনাতে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করতে হবে। তাজনিমার খোলা ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ আলী জানান, কিছু কিছু এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গাদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে ক্যাম্পে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। যা নিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তিনি বলেন, এসব সন্ত্রাসী রোহিঙ্গার কারণে সাধারণ রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উখিয়া উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এনজিও সমন্বয় সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান বলেন, ক্যাম্পে যেসব এনজিও সংস্থায় বিদেশি লোকজন কাজ করছে তাদের প্রতি নজর রাখতে হবে এবং তারা কি করছে, না করছে কোন এনজিওতে কোন পদে চাকরি করছে তার তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করার নির্দেশ দেন। তিনি এ-ও বলেন ক্যাম্পে একটি মহল অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য সবসময় তৈরি রয়েছে। তাদের দিকেও নজর রাখতে হবে দেখা মাত্র যাতে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা সম্ভব হয়।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নব নির্বাচিত উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইদানীং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘটিত নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে সাংবাদিকদের জানান রোহিঙ্গারা যে মনোভাব, দাপট ও উচ্ছৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। যারা তাদের আশ্রয় দিয়েছে তাদের ওপর হামলা করে তারা মনে করছে এখানে তারা স্থায়ী বসবাসের রঙিন স্বপ্ন দেখছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দেশ নেত্রী যাদের আশ্রয় দিয়েছেন তাদের স-সম্মানে, স্বদেশে পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status