এক্সক্লুসিভ
ব্যাংক কর্মকর্তার অভিনব প্রতারণা
স্টাফ রিপোর্টার
১১ মার্চ ২০১৯, সোমবার, ৯:৪১ পূর্বাহ্ন
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে ক্যাশ কর্মকর্তা পদে চাকরির আবেদন করেন এক তরুণ। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয় তাকে। তবে মৌখিক পরীক্ষার আগেই একটি রহস্যজনক কল আসে তার ফোনে। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া হয় ফোনের অন্য প্রান্তে। নিজেকে কবির হোসেন নামে পরিচয় দেন তিনি। চাকরির বিষয়ে আশ্বস্তও করেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কয়েকজন মন্ত্রীর সুপারিশ তালিকা এসেছে তাদের কাছে। তাতে আপনার নাম নেই। তিন লাখ টাকা দিলে আপনার নাম তালিকায় যুক্ত করে দেয়া হবে। জামানত হিসেবে শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদও জমা দিতে হবে।’ পরে তিনি তাদের কথামতো তিন লাখ টাকার চেক এবং মূল সনদ জমা দেন। সন্দেহ হলে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন টাকা গ্রহণকারী ব্যক্তি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে চাকরি করেন না। ব্যাংকে চাকরি দেবার নাম করে ওই ব্যক্তি আরো কয়েকজনের কাছ থেকে একইভাবে হাতিয়ে নেন নগদ টাকা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদ। একপর্যায়ে প্রতারণার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে অভিযোগ করেন ওই তরুণ। মূলত বিভিন্ন ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি প্রার্থীদের টার্গেট করে এই চক্রটি। বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির জন্য আবেদন করা ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করা হয় প্রথমে। পরে কর্মকর্তা সেজে চাকরি দেবার নাম করে টাকা দাবি করা হয় চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে। চক্রের হাতে প্রতারিত হওয়া আরেক যুবক জানান তার কাছেও ওইরকম একটি কল আসে। মুঠোফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয় ‘আমি ব্যাংকের এইচআর থেকে বলছি। মন্ত্রীর পাঠানো সুপারিশ তালিকায় তো আপনার নাম নাই। টাকা পাঠান আমি চাকরি কনফার্ম করে দিচ্ছি।’ একটি সরকারি ব্যাংকের চাকরি প্রার্থীদের ভাইভা তালিকা ধরে এভাবেই ফোন করে প্রতারক চক্র। প্রতারক চক্রের প্রধান খোদ একই ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার। প্রতারক চক্র নগদ আট লাখ টাকাসহ ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক হাতিয়ে নেয়। তবে চক্রটির শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জালে ধরা পড়েছেন তারা। শনিবার সকালে রাজধানীর মহাখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃত চক্রের দুই সদস্য হলেন- পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের এসপিও মো. তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী (৩৯) ও সুপক বড়ুয়া (৫৩)। সুপক বড়ুয়া মূলত প্রশ্ন ছাপানোর একটি সরকারি প্রেসে কাজ করতেন।
ডিবি সূত্র জানায়, তোফায়েল আহমেদ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে এসপিও পদে কর্মরত। নিজ অফিসে চাকরি প্রত্যাশীদের তালিকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সুপক বড়ুয়াকে সরবরাহ করতেন। পরে সুপক বড়ুয়া ব্যাংকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সেজে চাকরি প্রত্যাশীদের ফোন করতেন। এভাবে দু’জনে মিলে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি’র সিরিয়াস ক্রাইমের অর্গানাইজড ক্রাইম প্রিভেনশন টিমের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. নাজমুল হক মানবজমিনকে বলেন, ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে নিয়োগের প্রতারণায় এখন পর্যন্ত ১৩ জন ভিক্টিমকে আমরা শনাক্ত করেছি। এ চক্রে আরো কেউ আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ ডিবির সিরিয়াস ক্রাইমের উপ-কমিশনার মোদাচ্ছের হোসেন বলেন, ‘প্রতারক চক্রটি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ছাড়াও মন্ত্রী পরিষদ সচিবলায়ে চাকরি প্রদানের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেন বলে তথ্য পেয়েছি আমরা।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও অতিরিক্ত সচিব আকবর হোসেন তার ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার এমন ধরনের প্রতারণায় যুক্ত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে অভিযুক্ত কর্মকর্তা কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন না। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকার তথ্য তার কাছে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
ডিবি সূত্র জানায়, তোফায়েল আহমেদ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে এসপিও পদে কর্মরত। নিজ অফিসে চাকরি প্রত্যাশীদের তালিকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সুপক বড়ুয়াকে সরবরাহ করতেন। পরে সুপক বড়ুয়া ব্যাংকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সেজে চাকরি প্রত্যাশীদের ফোন করতেন। এভাবে দু’জনে মিলে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি’র সিরিয়াস ক্রাইমের অর্গানাইজড ক্রাইম প্রিভেনশন টিমের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. নাজমুল হক মানবজমিনকে বলেন, ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে নিয়োগের প্রতারণায় এখন পর্যন্ত ১৩ জন ভিক্টিমকে আমরা শনাক্ত করেছি। এ চক্রে আরো কেউ আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ ডিবির সিরিয়াস ক্রাইমের উপ-কমিশনার মোদাচ্ছের হোসেন বলেন, ‘প্রতারক চক্রটি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ছাড়াও মন্ত্রী পরিষদ সচিবলায়ে চাকরি প্রদানের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেন বলে তথ্য পেয়েছি আমরা।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও অতিরিক্ত সচিব আকবর হোসেন তার ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার এমন ধরনের প্রতারণায় যুক্ত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে অভিযুক্ত কর্মকর্তা কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন না। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকার তথ্য তার কাছে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’