ভারত

প্রত্যাঘাত জরুরি ছিল: ভারত

কলকাতা প্রতিনিধি

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার, ১:০৯ পূর্বাহ্ন

নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান হামলার কথা ভারত সরকারি ভাবে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটায় জানিয়েছে।  ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেশব গোখলে সাংবাদিকদের বলেছেন, পাকিস্তানে আশ্রিত জইশ ই মহম্মদের  নতুন নতুন আত্মঘাতী হামলার আশঙ্কাতেই এই বিমান হামলা চালানো হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, এই হামলা অত্যন্ত জরুরী ছিল। পুলওয়ামা হামলায় সরাসরি জৈশের যোগ রয়েছে। গত দু’দশক ধরে পাকিস্তানে সক্রিয় জৈশ জঙ্গিরা। বারবার বলা সত্ত্বেও পাকিস্তান কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই এই প্রত্যাঘাত করতে হয়েছে। এর আগেএদিন সকালে  দিল্লিতে সাত নম্বর লোককল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেই মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠক করেছেন।

উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং, অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ, নির্মলা সীতারমন,ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। মোদিকে দেওয়া পুরো অভিযানের বিস্তারিত রিপোর্টে বলা হয়েছে,  অভিযান যেরকম পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেরকমই ১০০ শতাংশ সফল হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সেনাবাহিনীর তরফে।  আজ বিকেল ৫টা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সর্বদলঅীয় বৈঠক ডেকেছেন বলে জানা গেছে। সেই বৈঠকে আজকের বিমান অভিযান নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, পাকিস্তানের সাধারণ নাগরিকরা যাতে কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হন সেদিকে লক্ষ্য রেখে পাহাড়ের উপর অবস্থিত জক্সগী ঘাঁটিগুলিতেই অভিযান চালানো হয়েছে।  পররাষ্ট্র সচিব বিবৃতিতে বলেছেন, মঙ্গলবার ভোরে ভারতীয় বায়ুসেনা নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে যে অভিযান চালিয়েছে তাতে বেশ কয়েকটি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। এই প্রত্যঘাতে মারা গিয়েছে জইশ ই মহম্মদের সিনিয়র কমান্ডাররা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বালাকোটে সবচেয়ে বড় জইশ প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করেছে ভারত।

বায়ুসেনার এই প্রত্যাঘাতে বহু ফিঁদায়ে জঙ্গি ও তাদের ইস্ট্রাকটর ও কমান্ডারদের মৃত্যু হয়েছে। বালাকোটের এই জঙ্গি ঘাঁটি পরিচালনা করত জইশ ই মহম্মদের জঙ্গি নেতা ইউসুফ আজহার। সে মাসুদ  আজহারের জামাই। পররাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত দু’দশক ধরে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে এবং পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি সংগঠনগুলো সক্রিয় রয়েছে। ভারত একাধিকবার এ বিষয়ে প্রমাণ-সহ নথি পাকিস্তানকে তুলে দিয়েছে। অনুরোধ করেছে অবিলম্বে ওই পরিকাঠামোগুলোকে ধ্বংস করার। কিন্তু পাকিস্তান সে অনুরোধে কান দেয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বায়ুসেনার পক্ষ থেকে প্রত্যাঘাতের পর জরুরী বৈঠকে বসে বিদেশমন্ত্রক। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয় এই পাল্টা আঘাত হানার বিষয়ে।

সূত্রের খবর, সেখানে এই প্রত্যাঘাত সম্পূর্ণ সফল বলে জানানো হয়েছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিদেশ সচিব বলেন, ‘গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় হামলা চালিয়েছিল পাক মদতপুষ্ট জৈশ জঙ্গিরা। আরও বড় নাশকতা করার ছক ছিল তাদের। যার জন্য ফিদায়েঁ জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল। গোয়েন্দাদের সূত্রে খবর পেয়েই খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। বালাকোট সবচেয়ে বড় জৈশের জঙ্গি ঘাঁটি। তাই সেখানেও প্রত্যাঘাত করা হয়। জৈশের শীর্ষ কমান্ডার সহ–আরও অনেককে নিকেশ করা হয়েছে।’    
ভারতের এদিনে এই অভিযানকে দ্বিতীয় সার্জিকাল স্ট্রাইক বলে অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে ভারতের উরি সেনা ঘাঁটিতে হামলার পাল্টা হিসেবে ২০১৬ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর সীমান্ত পেরিয়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ওই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর এবার নতুন করে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছে ভারতীয় বায়ু সেনারা। তবে এবারের অভিযাস ছিল অনেক পরিকল্পিত এবং সুনির্দ্দিষ্ট বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status