দেশ বিদেশ

২ বছরের মধ্যে ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ৫শ’ কোটি টাকা করতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শনিবার, ১০:০২ পূর্বাহ্ন

আগামী দুই বছরের মধ্যে সব ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ৫শ’ কোটি টাকা করতে হবে বলে নীতিমালা জারি করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতিমধ্যেই নতুন অনুমোদন পাওয়া ৩টি ব্যাংককে ৫শ’ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন সংগ্রহ করার শর্ত দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সভায় তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াও বাকি ব্যাংকগুলোর বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটি হলো- আগের অনুমোদন পাওয়া সব ব্যাংককে এখন থেকে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ৫শ’ কোটি টাকায় উন্নীত করতে হবে। এর ফলে ২০১৩ সালের পর চালু হওয়া সব ব্যাংককে নতুন করে আরো ১০০ কোটি টাকা মূলধন যোগার করতে হবে। খুব শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে নির্দেশনা জারি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, সর্বশেষ বোর্ড সভায় ৫শ’ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন সংগ্রহের শর্তে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক এবং পিপলস ব্যাংককে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ওই সভায় আগে অনুমোদন দেয়া ব্যাংকগুলোকে দুই বছরের মধ্যে মূলধন ৫শ’ কোটি টাকা উন্নীত করার শর্ত দেয়া হয়েছে। যেসব ব্যাংকের মূলধন এখনো ৫শ’ কোটি টাকার কম রয়েছে তাদেরকে এ শর্ত পূরণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংকগুলোর জন্য পরিশোধিত মূলধন ৪শ’ কোটি টাকা, অথবা ঝুঁকিবাহিত সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণের অনুপাত (সিআরএআর) ১০ শতাংশ বা এর মধ্যে যেটা বেশি হবে, সেই পরিমাণে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়।
ব্যাংকাররা জানান, আগের ব্যাংকগুলোর জন্য কিছুটা চাপ সৃষ্টি হলেও সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতের জন্য এটা ভালো সিদ্ধান্ত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, গত সাত বছরে বাংলাদেশ ব্যাংক যে ১৪টি বেসরকারি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে, তার সবগুলোকেই পরিশোধিত মূলধন ৫শ’ কোটি টাকা করে সংগ্রহ করতে হবে। ২০১২ সালে অনুমোদন পাওয়া ৯টি ব্যাংকের বেশিরভাগই ২০১৩ সালে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর ২০১৬ সালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অনুকূলে সীমান্ত ব্যাংক এবং ২০১৮ সালের অক্টোবরে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ নামে আরেকটি ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়। সর্বশেষ গত বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক ও পিপলস ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়। এ ছাড়া গত বছরের জুলাইয়ে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে তফসিলি ব্যাংকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জানা গেছে, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ৪৯৮ কোটি টাকা, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৪শ’ কোটি টাকা, মেঘনা ব্যাংকের ৪৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, মধুমতি ব্যাংকের ৪৫২ কোটি টাকার ওপরে, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৪২৮ কোটি টাকা, প্রবাসী উদ্যোক্তাদের এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ৫৬২ কোটি টাকার বেশি, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ৪২৫ কোটি টাকা এবং এনআরবি ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ৪শ’ কোটি টাকা।
নতুন প্রজন্মের একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বর্তমান নির্ধারিত মূলধনই সংরক্ষণ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নতুন করে ১০০ কোটি টাকা বাড়ানো হলে তাদেরকে বেশ বেগ পেতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, বেশ কয়েকটি ব্যাংকেই পরিশোধিত মূলধন ৫শ’ কোটি টাকার কম রয়েছে। ঋণ কেলেঙ্কারির কয়েকটি বড় ঘটনায় গত কয়েক বছর ধরেই দেশের ব্যাংক খাত আলোচনায় রয়েছে। এ সময় অনুমোদন পাওয়া কয়েকটি ব্যাংকও অনিয়ম আর তারল্য সংকটে ধুঁকছে। গত জুন পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার (রাইটঅফসহ) মতো, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১৫ শতাংশ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status