এক্সক্লুসিভ

বাসা ছাড়ার চিঠি নিয়ে মন্ত্রী ও এমপিদের ক্ষোভ

কাজী সোহাগ

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, রবিবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন

সংসদ সদস্য ভবন থেকে বাসা ছাড়ার চিঠি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী ও এমপিরা। তিনদিনের মধ্যে বাসা ছেড়ে দেয়ার আল্টিমেটাম দেয়ায় এ ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। চিঠিতে সংসদ সচিবালয়ের একজন সহকারী সচিবের স্বাক্ষর রয়েছে। এতে আরো মনোকষ্ট পেয়েছেন মন্ত্রী ও এমপিরা। তারা জানান, একজন সহকারী সচিব স্বাক্ষর করে যে ভাষায় আমাদের চিঠি দিয়েছেন তা অমার্জিত। একাদশ জাতীয় সংসদের এমপিদের আবাসন সুবিধা দেয়ার কাজ শুরু করেছে জাতীয় সংসদ সচিবালয়। আবাসনের পাশাপাশি নতুন অফিসও পাবেন নতুন সংসদ সদস্যরা।

এ কারণে বিদায়ী সংসদের এমপিদের তাদের আবাসন ও অফিস ছাড়তে এবং তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরাতে নির্দেশনা জারি করেছে সংসদ সচিবালয়। এরই অংশ হিসেবে সংসদ সচিবালয়ের সহকারী সচিব আবদুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে মন্ত্রী ও এমপিদের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে,‘আপনি ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন না এবং আপনার পরিবর্তে অন্য লোকজন ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন, যা বরাদ্দ বিধিমালার পরিপন্থি। এতে আরো বলা হয়েছে, তাছাড়া, দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় আপনার নামে বরাদ্দকৃত ফ্ল্যাটটির বরাদ্দ বাতিল হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদকালে মহোদয়ের নামে বরাদ্দকৃত মানিক মিয়া এভিনিস্থ সংসদ সদস্য ভবনের ফ্ল্যাটটি পত্র পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশক্রমে সবিনয় অনুরোধ করছি।’ বেশ কয়েক মন্ত্রী ও এমপি বিষয়টি প্রসঙ্গে মানবজমিনকে জানান, এভাবে আল্টিমেটাম দিয়ে চিঠি দেয়া আমাদের জন্য সম্মানজনক নয়।

সংসদ অধিবেশন শুরু হয়েছে মাত্র কয়েক দিন। বাসা শিফটের জন্য সময়ের প্রয়োজন। মাত্র তিনদিনের মধ্যে বাসা ছাড়তে বলাটা মনে হয় শোভনীয় নয়। তাছাড়া একজন সহকারী সচিবের স্বাক্ষর করা চিঠি আমাদের দেয়া হয়েছে। এত সম্মানহানি হয়েছে বলে মনে করছি। সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, নবম জাতীয় সংসদের মেয়াদকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এমপিদের জন্য আবাসন বরাদ্দ দেয়া হয়। এর আগে নাখালপাড়ায় এমপিদের আবাসন ব্যবস্থা ছিল। এ ছাড়া শেরেবাংলা নগরে এমপি হোস্টেলে অফিস কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হতো, যেখানে আগে এমপিরা থাকতেন।

নতুন এমপিদের আবাসন ও অফিস বরাদ্দ দিতে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপ-কমিটির সদস্যরা হলেন হুইপ ইকবালুর রহিম, কাজী ফিরোজ রশীদ ও ফজলে হোসেন বাদশা। অভিযোগ রয়েছে-মানিক মিয়া এভিনিউ ও নাখালপাড়ার সংসদ সদস্য ভবনের ফ্ল্যাট এবং শেরেবাংলা নগরের এমপি হোস্টেলে এখনো সাবেক এমপি-মন্ত্রীদের অনেক আত্মীয়-স্বজন ব্যবহার করে চলেছেন। নতুন করে বরাদ্দ প্রদানের স্বার্থে যারা এবারে এসব বরাদ্দ পাওয়ায় যোগ্য নন তাদের ফ্ল্যাট ছেড়ে দেয়ার জন্য নোটিশ জারি করা হয়েছে। এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এস্টেট শাখা থেকে এরইমধ্যে ৩৭ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে অফিস কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে দেয়া চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন সহকারী সচিব (এস্টেট) দেলোয়ার হোসেন। চিঠিতে প্রতিমন্ত্রীদের কক্ষ বরাদ্দ দিতে গিয়ে শর্ত যোগ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে,‘ এ মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রী নিযুক্ত হলে এই বরাদ্দ মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর স্থলে মাননীয় মন্ত্রীর বরাদ্দ হিসেবে গণ্য হবে।’ সংশ্লিষ্টরা জানান, অতীতে সংসদ সচিবালয়ের মধ্যে প্রতিমন্ত্রীদের অফিস বরাদ্দ দিতে গিয়ে কোনো শর্ত দেয়া হয়নি। এ ধরনের শর্ত আরোপ এবারই প্রথম। এ প্রসঙ্গে সংসদ সচিবালয়ের এস্টেট শাখা জানিয়েছে, অফিস কক্ষের সীমাবদ্ধতা থাকায় এ ধরনের শর্ত দেয়া হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status