এক্সক্লুসিভ

নাতির সন্ধানে ৮০ বছরের বৃদ্ধা

স্টাফ রিপোর্টার

২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার, ৯:২০ পূর্বাহ্ন

নয়ন (২৪)। পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান। নয়ন সাত হাজার টাকা মজুরিতে কাজ করতেন কসমেটিকসের দোকানে। দাদি, চার বোন এবং মাকে নিয়ে কামরাঙ্গীরচরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। বাবার সঙ্গে পরিবারের বিচ্ছেদ হয় ১৫ বছর আগে। তাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনের মানুষ ছিলেন নয়ন। তিনি একজন পেশাদার ফুটবলারও। ক্লাব পর্যায়ে খেলতেন। গতকালই তার একটি ফুটবল ম্যাচ ছিল। কিন্তু নয়নের মাঠে আর নামা হয়নি। রহমতগঞ্জের জার্সি গায়ে একটি ছবি এখন নয়নের স্মৃতি। গতকাল দুপুরের পরে নয়নের দাদি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে বিলাপ করছিলেন। একটু পর পর মূর্ছা যাচ্ছিলেন। নয়নের মা কোহিনূর বেগম সন্তানের খোঁজ না পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। নয়নের দাদি বলেন, ‘আমার ভাইকে ফিরিয়ে দাও, আমার দাদু কই গেলোরে। ওর বাপ ওদের ছোটবেলায় ফেলে রেখে যায়, এরপরে নয়ন বড় হয়ে সংসারের হাল ধরে’। চার বোনের মধ্যে তিন বোনকে বিয়েও দেয়। কিন্তু নয়নকে আর পাচ্ছি না। এখন আমাদের কী হবে। নয়নের ছোট বোন ঊর্মি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ভাই দোকানে ছিল। বৃহস্পতিবার তার একটি ফুটবল ম্যাচ ছিল। প্রথমে বাসায় আসবে ভাবলেও পরে মনে করছি বন্ধুদের বাসায় আছে। যখন আগুনের সংবাদ পাই তখন গভীর রাত। এরপরে ভাইয়ের এক এক করে সব বন্ধুকে ফোন দেই। কেউ তার সন্ধান দিতে পারে নি। পরে সকালে জানতে পাই আগুনের সময় ভাইয়া দোকানে ছিল। এ কথা বলতেই ঊর্মি আবারো কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি ভাইয়ের ছবি দেখিয়ে বলেন, দেখেন এই যে জার্সি পরা। এটা পরেই খেলার কথা ছিল। নয়নের দাদি, মা-বোনদের গগনবিদারী কান্নায় সব যেন স্তব্ধ হয়ে যায়। পরে নয়নের লাশের সন্ধানে তারা মর্গের দিকে যান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status