প্রথম পাতা

‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বাজার থেকে সরানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

স্টাফ রিপোর্টার

২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বুধবার, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন

বাজারে থাকা ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বই সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বইটি যেন আর বাজারে বা বইমেলায় না মিলে সে বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলেছেন আদালত। একইসঙ্গে ওই বইয়ের সম্পাদক ও ব্যাংকটির সাবেক নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহাকে ইতিহাস বিকৃতির মামলায় তলব করে আগামী ১২ই মার্চ হাজির হতে বলা হয়েছে। আদালতে হাজির হয়ে তাকে বঙ্গবন্ধুর ছবি খুঁজে না পাওয়া এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ও পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের ছবি বইয়ে সংযোজনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।

মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জুবায়ের রহমান।

সোমবার ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করায় ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে মতামত দিয়ে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বইয়ে জাতির পিতার ছবি অন্তর্ভুক্ত করা অত্যাবশ্যক ছিল। কিন্তু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি এ যুক্তিতে তা বইতে না দেয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। প্রতিবেদন গ্রহণ করে আদালত মঙ্গলবার আদেশের দিন ধার্য করেন। এর ধারাবাহিকতায় এই আদেশ দিলেন হাইকোর্ট।

আদেশের পর আইনজীবী ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বইয়ের সম্পাদক শুভঙ্কর সাহাকে তলব করেছেন আদালত। ১২ই মার্চ তিনি এসে বলবেন, কেন বঙ্গবন্ধুর ছবি পাওয়া যায়নি। কেন বঙ্গবন্ধুর ছবির পরিবর্তে আইয়ুব খান ও মোনায়েম খানের ছবি বইতে দেয়া হয়েছে। তাকে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে হবে। এ বইটির পুরাতন যত কপি আছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলতে এবং বইটি যাতে বাজারে না ছাড়ে, বই মেলায় যেন না আসে। আদালত বলেছে ইতিহাস বিকৃতি অমার্জনীয় অপরাধ।’

এর আগে গত ২রা অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের বইয়ে ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে রিট করা হলে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তদন্ত করে অর্থ সচিবকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বইটিতে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হলেও জাতির পিতার ছবি অন্তর্ভুক্ত না করে ইতিহাস বিকৃতি করা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। রিট আবেদনটি করেন কাজী এরতেজা হাসান।

হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ১৬ই অক্টোবর অর্থমন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন চার সদস্যের কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন অর্থমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এবিএম রুহুল আজাদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মু. মোহসিন চৌধুরী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (আইন) স্মৃতি কর্মকার। এই কমিটি ইতিহাস বিকৃতির অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন জমা দেয় হাইকোর্টে।

বইয়ের সম্পাদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (অব.) কমিটিকে লিখিত বক্তব্যে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আলোকচিত্র সংগ্রহ করতে পারিনি। ব্যাংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টবিহীন ছবি ব্যবহার করা যেত। কিন্তু বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কারো মনে আসেনি। সেটি সংশ্লিষ্ট সবার ভুল। আইয়ুব খান ও মোনায়েম খানের ছবি অন্তর্ভুক্ত সংযোজন না করা শ্রেয় ছিল।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status