বাংলারজমিন

রূপগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যার জের, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আহত ১০

স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে

২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বুধবার, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

রূপগঞ্জে এক মাটি ব্যবসায়ীকে হত্যার জেরে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এসময় ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশের লাশ নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ফাঁকা গুলিবর্ষণ ও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রায় ঘণ্টাব্যাপী দুই পুলিশকে অবরুদ্ধ রেখে নাজেহাল করেন। তবে ফাঁকা গুলি ও পুলিশ অবরুদ্ধের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের দুয়ারা এলাকার এমএবি-২ ইটভাটার ভেতরের একটি ঘর থেকে পুলিশ সে ব্যবসায়ীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য  তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত ব্যবসায়ীর বাবা শাহজাহান সিরাজ জানান, গত সোমবার সন্ধ্যায় ইটভাটায় দেয়া মাটির বকেয়া টাকা তুলতে তার বড় ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৯) বাড়ি থেকে বের হয়। পরে রাতে আর বাসায় ফিরেনি। সকালে দাউদপুরের এমএবি-২ ইটভাটার ভেতরের একটি টিনশেড ঘরের ভেতর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, তার ছেলে নিহত রফিকুল ইসলাম সব সময় একটি বড় তোয়ালে ব্যবহার করতো। তার গলায় সেই তোয়ালেটি প্যাঁচানো ছিল। শাহজাহান সিরাজ অভিযোগ করেন, রূপগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হক, এসআই রহুল আমিন ও এএসআই রিয়াজসহ পুলিশের লোকজন তড়িঘরি করে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যেতে চায় এবং তিন আসামিকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসাবাদ না করেই একটি সিএনজিতে উঠিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যায়। এতে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী  পুলিশ কেন তড়িঘড়ি করছে তা জানতে চায় ও লাশ নিতে বাধা দেয়। এসময় পুলিশ নিহতের চাচাতো ভাই সেলিমকে লাঠি পেটা করে। কিন্তু পুলিশ কোনো কথা না শুনে  দ্রুত লাশ ও আসামিদের নিয়ে এলাকা ত্যাগ করে। এতে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে এএসআই রিয়াজ ও কনস্টেবল সফিকে ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসের ভেতর অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা অবরুদ্ধ দুই পুলিশ সদস্যকে শারীরিকভাবে নাজেহাল করে। এসময় তাদের ছাড়াতে গিয়ে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন জয়সহ বেশ কয়েজন আহত হন। অপরদিকে আত্মীয়স্বজনদের না দেখিয়ে লাশ নিয়ে যাবার জেরে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ধাওয়া করে বেলদী বাজারে লাশবাহী গাড়িটি আটক করে। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে লাশ নিয়ে চলে যায়। পরে ভোলাবো ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম উত্তেজিত লোকজনকে বুঝিয়ে শান্ত করে দুই পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
এদিকে ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ইটভাটার পাহারাদার স্থানীয় খাস কামালকাটি এলাকার সাহেব আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর, ইটভাটার শ্রমিক সর্দার সাতক্ষীরার তালা থানাধীন কলাপুডা এলাকার অমল দাসের ছেলে পিন্টু দাস ও একই জেলার পাটকেলঘাটা থানার আব্দুল হালিম সর্দারের ছেলে মোতালেবকে আটক করা হয়েছে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল হক দুই পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ ও নাজেহাল করা ও ফাকাঁগুলি বর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্বজন হারানো লোকজন আবেগপ্রবণ হয়ে পুলিশের ওপর উত্তেজিত হয়ে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। এসময় পুলিশকে ধাওয়া দেয়। তিনি বলেন, প্রাথমিক ময়নাতদন্তে ধারণা করা হচ্ছে রফিকুল ইসলামকে গলায় তার জাতীয় বস্তু পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। কারা কী কারণে রফিকুল ইসলামকে হত্যা করলো তা তদন্ত করে বের করা হবে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status