বাংলারজমিন

ধর্মপাশায় ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়মের অভিযোগ

মো. ইসহাক মিয়া, ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) থেকে

২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বুধবার, ৯:০২ পূর্বাহ্ন

 সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার হাওরে সীমাহীন অনিয়মের মাধ্যমে করা হচ্ছে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ। সময়সীমার আর মাত্র ৭ দিন বাকি। এখনো অনেক বাঁধের অর্ধেক কাজও করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট পিআইসিরা। হাওরে হাওরে চলছে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা। হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ যেন লুটপাটের এক নতুন ক্ষেত্র। দায়সারাভাবে কাজ করে প্রকল্পে বরাদ্দের টাকা লুটপাটের জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছে পিআইসিরা। অধিকাংশ হাওর বাঁধের ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসনের চোখের সামনেই চলছে হাওর বাঁধ মেরামতে পিআইসিদের নীতিমালা লঙ্ঘন ও সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি। উপজেলা প্রশাসন ইউএনও ও এসিল্যান্ড বাঁধ মেরামতের কাজে দুর্নীতি রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসলেও দায়িত্ব পালনে উদাসীন পানি উন্নয়ন  বোর্ডের  উপ-সহকারী প্রকৌশলীগণ। বাঁধ মেরামতে অনিয়মের বিষয় জানানোর চেষ্টা করা হলে কর্ণপাত না করে উল্টো পিআইসিদের পক্ষ নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম। তবে, বাঁধে দুর্মুজ ব্যবহার করা হয়নি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সব বাঁধে দুর্মুজ ব্যবহার করা হচ্ছে না-তা সঠিক নয়। যে সব বাঁধে দুর্মুজ ব্যবহার করছে না, তা জানানোর জন্য বলেন তিনি। সমপ্রতি কাইলানী হাওরের ৫১ নম্বর প্রকল্পের টঙ্গীর বাঁধটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ। এ বাঁধ ভেঙে গেলে ধর্মপাশা উপজেলার গুরমার হাওর ও পাশের কয়েকটি হাওরের বোরো ফসলসহ পাশের নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার হাজার হাজার একর জমির বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে বিনষ্ট হয়। এ টঙ্গীর বাঁধে প্রতিবেদকের দেখা হয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) আনম গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে। (এসও) কে সামনে রেখে বাঁধের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক দুর্মুজ ব্যবহার না করে কোদাল দিয়ে বাঁধের উপরের মাটি সমান করতে দেখা যায়। উপস্থিত থাকা এসও’র বিষয়টি দৃষ্টিগোচর করিয়ে দেয়া হলে শ্রমিকদের দুর্মুজ মারার কাজে লাগান তিনি। এ রকম উদাসীনতা ও কর্তব্যে অবহেলার কারণেই দায়সারাভাবে কাজ করছে পিআইসিরা।
ফলে বাস্তবে প্রশাসনিক কঠোরতার কোনো সাফল্য দেখা যাচ্ছে না। অধিকাংশ প্রকল্পে বাঁধের একেবারে কাছে থেকে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এর আগেও এরকম অনিয়ম হয়েছে এসব প্রকল্পে। এভাবে বছরে বছরে একই স্থানে বাঁধের একেবারে গোড়া থেকে মাটি উত্তোলন করার কারণে বাঁধের পাশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। মেজারমেন্ট অনুযায়ী ও নীতিমালা অনুযায়ী কাজ না করে উপজেলার সবক’টি বাঁধের মেরামত কাজে নীতিমালা লঙ্ঘন ও সীমাহীন অনিয়ম চলছে। বাঁধের অতি কাছে থেকে মাটি উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না, দুর্মুজ ব্যবহার  হচ্ছে না মোটেও। বাঁধের কাজে অনিয়মের কারণে ও কাজ সময়মত আদায় করার জন্য বেশ কিছু পিআইসি সভাপতিকে শোকজ করেছেন ও দণ্ড দিয়েছেন প্রশাসন। কিন্তু এ সব সতর্কবার্তাকে পরোয়া করছে না পিআইসিরা। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ডিভিশন (১) আবুবকর সিদ্দিক ভুঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোন রিসিভ করেন নি তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status