ভারত
শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আরও ১০ কোটি রুপি দাবি
কলকাতা প্রতিনিধি
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বুধবার, ১০:১১ পূর্বাহ্ন
শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ভবন রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য আরও ১০ কোটি রুপির দাবি জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। গত ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১০ কোটি রুপির একটি চেক তুলে দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের হাতে। বিশ্বভারতীর উপাচার্য্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর হাতে ওই চেক তুলে দিয়েছেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান। তবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মতে, এই অর্থ গচ্ছিত রেখে যে সুদ পাওয়া যাবে তা দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ, কর্মী নিয়োগ ও গবেষণা সহায়ক রাখা সম্ভব নয়। একমাত্র ২০ কোটি রুপি গচ্ছিত রেখে যে সুদ পাওয়া যাবে সেটিকে করপাস ফান্ড হিসেবে ব্যবহার করা গেলে বাংলাদেশ ভবন সুন্দর ও সুচারুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ভবনের মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনের সময় বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ১০ কোটি রুপির প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরই তারা ভারত সরকারের কাছে ম্যাচিং গ্রান্ট হিসেবে সমপরিমাণ অর্থের আবেদন জানিয়েছিলেন। গত জুলাইয়ে সেই আবেদন জানানো হলেও এখন পর্যন্ত ভারত সরকার কোনও উত্তর দেয় নি। আর তাই অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছেন। গত সোমবার বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ শান্তিনিকেতন সফরে গেলে তাকেও বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে। বিশ্বভারতীর বক্তব্য, বাংলাদেশ সরকার যদি অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করে তাহলে বাংলাদেশ ভবন পরিচালনা সহজ হবে। সেই মতো তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন রাখতে চলেছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে বিশ্বভারতীর দেওয়া জমিতে সাংস্কৃতিক বিনিময় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে এই বাংলাদেশ ভবন। ভবনটি তৈরির পুরো ব্যয় ২৫ কোটি রুপি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশ ভবন আনুষ্ঠানিকভাবে গত বছরের ২৫ মে যৌথভাবে উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে উদ্বোধনের পরে বেশ কিছুদিন ভবনের গেট বন্ধ ছিল। ফলে সেই সময় বহু বাংলাদেশি পর্যটক বাংলাদেশ ভবনে প্রবেশ করতে না পেরে হতাশই হয়েছেন। তবে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ভবনের মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, বিশ্বভারতীর কর্মসচিব সৈকত মুখোপাধ্যায় এবং বিশ্বভারতীতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিতে ভবনের দ্বার সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ভবনে রয়েছে একটি গ্রন্থাগার, একটি মিউজিয়াম, একটি গবেষণা ও ফ্যাকাল্টি কক্ষ, একটি কাফেটারিয়া এবং একটি অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী খালিদ বাংলাদেশ ভবন পরিদর্শন করে তার মুগ্ধতা জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই ভবনের মিউজিয়ামটি আরও সম্প্রসারণ করা যায় কিনা তা নিয়েও চিন্তাভানা চলছে বলে বিশ্বভারতী সুত্রে জানা গেছে।