ষোলো আনা
লিমনের জন্য বাবা-মা’র যুদ্ধ
পিয়াস সরকার
৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার, ৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
বাবা-মা’র হাত ধরে গ্রন্থমেলায় এসেছে শিশু লিমন। ৫ বছর বয়সী শিশুটির পুরো নাম সালেহ আহমেদ খান লিমন। গ্রন্থমেলায় তার বাবা লিমনের জন্য কিনলেন প্রায় ২০ খানা বই। এই পর্যন্ত গল্পটা স্বাভাবিক। তবে লিমনের মস্তিষ্কে নেই কোনো শব্দ ভাণ্ডার। কারণ এই লিমন বছর খানেক আগেও কানে শুনতে পারতো না। এখন সে শুনতে শুরু করেছে। মস্তিষ্কে জমা হচ্ছে শব্দ।
লিমনের গত বছর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় হয় ককলেয়ার ইমপ্ল্যান্ট। আমরা যা দিয়ে শুনতে পাই তা নষ্ট হলে বা জন্মগত সমস্যা থাকলে অস্ত্রোপচার করিয়ে শ্রবণ শক্তি ফিরে পাওয়াকে ককলেয়ার ইমপ্ল্যান্ট বলে। বাংলাদেশে এই রোগের অস্ত্রোপচার ও অস্ত্রোপচারের পর ব্যবহৃত মেশিনের মূল্য পড়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা। লিমনের বাবা কর্মরত আছেন বাংলাদেশ পুলিশে। তার পক্ষে এই খরচ বহন করা ছিল অসম্ভব। তবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গত বছর ১২১ জন শিশু পায় এই সুবিধা। তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল লিমনের নাম। তার বাবা-মা শিশুটিকে নিয়ে নেমেছেন নতুন যুদ্ধে। এখন লিমনকে নতুন করে শব্দের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার পালা।
কানে না শোনার কারণে লিমনের কথা বলাও থেমে ছিল এত দিন। আর বিভিন্ন শব্দ ও পড়া শেখানোর জন্য বইয়ের থেকে উত্তম হাতিয়ার আর কী হতে পারে। তাই তার বাবা-মা লিমনকে নিয়ে এসেছেন গ্রন্থমেলায়। বইয়ের সঙ্গে, ভাষার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়াটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।
লিমন বাবা-মায়ের তৃতীয় ও ছোট সন্তান। তার বড় দুই বোনেরও একই সমস্যা। তবে তাদের করতে হয়নি কোনো অস্ত্রোপচার। শুধুমাত্র কানে শোনার সুবিধার্থে দেয়া হয়েছে মেশিন।
তার বাবা হুমায়ুন আহমেদ খান বলেন, আমার সন্তানদের সুস্থ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। আর না হলে এতদিনে তারা বোবা হয়ে যেত। তার বাবা আরো বলেন, লিমনের জন্য আমি ও ওর মা প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করে যাবো। যতদিন না সে সুস্থ হবে ততদিন চালিয়ে যাবো এই যুদ্ধ।