বিশ্বজমিন

দেশে ফিরেছে ফিলিস্তিনি তরুণীর মরদেহ

মানবজমিন ডেস্ক

২৪ জানুয়ারি ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ন

অস্ট্রেলিয়ায় হত্যার শিকার ফিলিস্তিনি ছাত্রীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেছে তার পরিবার। গতকাল অস্ট্রেলিয়া থেকে তার মৃতদেহ দেশে ফিরলে তারা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলীয় হাইফা শহরের কাছে বাকা আল-ঘারবিয়েতে নিহতের শোকার্ত আত্মীয়স্বজনরা জড়ো হন।
২১ বছর বয়স্ক ইসরাইলি আরব আয়া মাসারভি। গত ১৬ই জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে রাতের বেলা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেড়ায় সে। বাড়ি ফেরার পথেই তাকে হত্যা করা হয়। মাসারভির পরিবার ফিলিস্তিনি হলেও সাংহাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো সে। ৬ মাসের ‘এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে’ মেলবোর্নের লা ত্রোবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিল মাসারভি। কিন্তু পরিবারের কাছে তাকে ফিরতে হয়েছে লাশ হয়ে। ১৬ই জানুয়ারি রাস্তার পাশে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মৃত্যুতে অস্ট্রেলিয়ায় নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার মানুষ সে বিক্ষোভে যোগ দেয়। গত সাত মাসের মধ্যে এরকম দুজন নারী রাতের বেলা বাড়ি ফেরার পথে হত্যার শিকার হয়েছে মেলবোর্নে। নিহত এই তরুণীর পরিবার বলছে মাসারভি অস্ট্রেলিয়াকে সব সময় নিরাপদ মনে করতেন এবং সে কারণেই তিনি এখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পড়ার জন্য বেছে নিয়েছিলেন। বিবিসি জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়াতে প্রতি তিনজন নারীর একজন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন এবং যৌন সহিংসতার শিকার হন প্রতি পাঁচজনে অন্তত একজন। দেশটির আদিবাসীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের সহিংসতার হার আরো অনেক বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি দশজন নারীর একজন সহিংসতার অভিজ্ঞতা পান অপরিচিত কারও দ্বারা। আর পারিবারিক সহিংসতা দেশটিতে প্রায় নিয়মিত ঘটনা এবং গড়ে প্রতি সপ্তাহে একজন নারী খুন হন তাদের বর্তমান বা সাবেক পুরুষ সঙ্গীর হাতে।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল ওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ রুথ ফিলিপস বলেন, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা যার সর্বোচ্চ রূপ হলো খুন। কিন্তু এটিই নিয়মিত হচ্ছে। নারীর ঘরেই আহত হচ্ছে শারীরিক ও মানসিকভাবে। এটি একটি মারাত্মক সমস্যা।
আলোচিত কিছু খুনের ঘটনা বিষয়টিকে অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয় পর্যায়ের আলোচনায় নিয়ে এসেছে। মেলবোর্নের একটি এলাকায় কমেডিয়ান ইউরাইডাইস ডিক্সনের হত্যার ঘটনায় বিতর্ক জোরদার হয়েছিলো। এর কয়েক মাসের মাথায় শুধু অক্টোবরেই অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রাণ হারিয়েছে এগারো নারী। মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পারিবারিক সহিংসতা বিষয়ক গবেষক কেলসলি হেগার্টি বলছেন, অনেক সময় নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা একটির পর একটি ঘটতেই থাকে। এবং বাস্তবতা হলো গোপন মহামারির মতো রয়েছে হয়রানি ও সহিংসতার বিষয়গুলো।
এর আগে ২০১২ সালে আইরিশ নারী জিল মিয়াগের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিলো। এখন আবার সেই একই প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে আয়া মাসারভির মৃত্যুর ঘটনায়। জি-২০ জাতিসমূহের মধ্যে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান অষ্টম।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status