বাংলারজমিন

বিয়ানীবাজারে দুই মাসে ১৪ মোটরসাইকেল চুরি

বিয়ানীবাজার (সিলেট) প্রতিনিধি

২৪ জানুয়ারি ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৮:৫২ পূর্বাহ্ন

 বিয়ানীবাজারে গত কয়েকদিন থেকে উদ্বেগজনক হারে মোটরসাইকেল চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ক’দিনের ব্যবধানে পৌরশহর এবং উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ১৪টি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিভিন্ন বিপণিবিতান, কমিউনিটি সেন্টার এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকেও এসব মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ক্যামেরায় চুরির এসব দৃশ্য ধরা পড়লেও চোর শনাক্ত করা সম্ভব হয় না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট বিয়ানীবাজার থেকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় সক্রিয়ভাবে জড়িত। তারা বয়সে তরুণ। বিলাসবহুল জীবন যাপনে অভ্যস্ত তরুণরা মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতেও তোলপাড় চলছে। ছদ্মবেশে গোয়েন্দা সংস্থার লোক সন্দেহভাজন যুবকদের উপর নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। তাদের একটি তালিকাও তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পৌর শহরের অভিজাত মার্কেটগুলোর মোটরসাইকেল একস্থানে রেখে পাহারাদার নিয়োগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রায় দু’সপ্তাহ থেকে পৌর শহরের একাধিক প্রবেশদ্বারে পুলিশ অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে। পৌরশহর থেকে অবৈধ মোটরসাইকেল আটকে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এদিকে চুরি হওয়া মোটরসাইকেলের মালিকানা বদল নিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মোটরসাইকেল চুরি হওয়ার পর প্রথম কিছুদিন বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে ইঞ্জিন নাম্বার, চ্যাসিস নাম্বার ও মোটরসাইকেলের বাইরের আবরণ কৃত্রিমভাবে পরিবর্তন করে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়া হয়। বিয়ানীবাজারে গত তিন বছরে প্রায় তিন শতাধিক মোটরসাইকের চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। চুরি হওয়া মোটরসাইকেলের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। সাধারণত বর্ষা মৌসুমকে টার্গেট করে মোটরসাইকেল চোরাচালানি চক্রের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। এ সময় সীমান্তঘেঁষা বিয়ানীবাজারে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তারা অবাধে ভারতীয় চোরাই মোটরসাইকেলগুলো বাংলাদেশে আমদানি করে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিয়ানীবাজার থেকে চুরি হওয়া মোটরসাইকেলও একই মৌসুমে সীমান্তের ওপারে চলে যায় বলে সূত্রটির দাবি। সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আমদানি করা মোটরসাইকেলের মধ্যে পালসার, ডিসকভারি, হিরো হোন্ডা ও বাজাজ কোম্পানির গাড়ি অন্যতম। এগুলো বিয়ানীবাজারে আনার সঙ্গে সঙ্গেই খুব দ্রুত হাত বদল করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বাংলাদেশে এসব মোটরসাইকেলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ক্রেতারাও এসব গাড়িগুলো কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ভারতীয় এসব মোটরসাইকেলের দাম বাংলাদেশি টাকায় ৪০-৫০ হাজার টাকার বেশি নয়। বিয়ানীবাজার পৌরশহরসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রায় দেড় হাজার মোটরসাইকেলের বৈধ কাগজপত্র ও রেজিস্ট্রেশন নেই। এগুলোর এক-তৃতীয়াংশই ভারত থেকে চোরাইপথে আমদানি করা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাফিক পুলিশ জানান, বিয়ানীবাজার সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় এখানে ভারতীয় চোরাই গাড়ির সংখ্যা বেশি। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এসব গাড়িগুলো আটক করা সম্ভব হয় না। মোটরসাইকেল চুরি প্রসঙ্গে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অবণী শংকর কর জানান, মোটরসাইকেল চুরির বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। আশ্চর্যের বিষয় হলো চুরি হওয়া মোটরসাইকেলগুলোর বৈধ কাগজপত্র নেই। তাই কেউ গাড়ি চুরির পরও মামলা করতে আসে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status