বাংলারজমিন
সন্তানদের অবহেলায় মৃত্যু পথযাত্রী এক বৃদ্ধা
ফেনী প্রতিনিধি
২৪ জানুয়ারি ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
এক ছেলে বিসিএস ক্যাডার, দুই ছেলে চালের ব্যবসায়ী, উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে মেয়েরা থাকছে স্বামীর বাড়ি। ফেনীতে সন্তানদের অবহেলায় মৃত্যুপথযাত্রী অশীতিপর এক বৃদ্ধা মা। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে পুলিশ। ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল আলিম জানান, ফেনী পৌরসভার মধুপুর এলাকার পোদ্দার বাড়িতে দীর্ঘ চারবছর ধরে একাকি থাকেন অশীতিপর বৃদ্ধা মা মৃদুলা রানী। ৫ সন্তানের এই জননীর এক ছেলে বিসিএস ক্যাডার (সুশান্ত সাহা, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক, কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর, কক্সবাজার)। বড় ছেলে বাপ্পি সাহা ও ছোট ছেলে বিপুল সাহা তাদের বাবা হরিপদ সাহার রেখে যাওয়ার চালের আড়তে ব্যবসা করেন। তারা সকলেই তাদের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে থাকেন অন্যত্র। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ছোট মেয়ে শর্বরী সাহা বিয়ের পর থেকে থাকছেন চট্টগ্রামে শ্বশুরবাড়ি। বড় মেয়ে সুমি সাহা অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে থাকেন ঢাকার শ্বশুরালয়ে। ৫ ছেলে-মেয়ের কারো বাড়িতে স্থান হয়নি মায়ের। স্বামীর রেখে যাওয়া ছোট একটি ঘরে অনাহারে অর্ধাহারে অযত্ন আর অবহেলায় মৃত্যুপথযাত্রী মা মৃদুলা রানী। হতাশা আর বিষণ্নতায় গত কয়েকদিন আগে ‘মাইন্ড স্ট্রোক’ করে বদ্ধঘরে বিছানায় পড়ে ছিলেন মৃদুলা রানী। আশপাশের লোকজনরা ওই ঘর থেকে সাড়াশব্দ না পেয়ে মৃত মনে করে স্থানীয় ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আবু ইউসুফ ভূইয়া বাদলকে খবর দেয়। পরে তিনি ফেনী থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। পুলিশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘরের দরজা ভেঙে মুমূর্ষু অবস্থায় অশীতিপর বৃদ্ধা মৃদুলা রানীকে উদ্ধার করে। ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) ডা. মো. ফয়জুল কবীর জানান, গুরুতর অসুস্থ মৃদুলা রানী মঙ্গলবার রাত থেকে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতাল থেকে তাকে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। মাইন্ড স্ট্রোক করায় ঠিকভাবে কথা বলতে পারছেন না। হাসপাতালে ভর্তির পর তিনি কিছুটা সুস্থ হয়েছেন।
ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর জানান, উদ্ধারকৃত বৃদ্ধা মৃদুলা রানীর অভিভাবক না থাকায় আপাতত স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন ‘সহায়’র স্বেচ্ছাসেবকদের দেখভাল করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফেনী মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, বৃদ্ধা মা’র ৫ সন্তানদের খবর দেয়া হলে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে বড় মেয়ে সুমি সাহা ও কক্সবাজার থেকে মেজো ছেলে বিসিএস কর্মকর্তা সুশান্ত সাহা থানায় এসেছেন। তবে ফেনীতে থাকা চাল ব্যবসায়ী বড় ছেলে ও ছোট ছেলে থানায় আসেননি। তাদেরকে থানায় উপস্থিত করার জন্য অন্য সন্তানদের চাপ দেয়া হচ্ছে। ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, ওই বৃদ্ধা মা’কে সন্তানরা মেরে ফেলার চক্রান্ত করছিল কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃদ্ধা মায়ের প্রতি সন্তানদের এমন অমানবিক আচরণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন।
ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর জানান, উদ্ধারকৃত বৃদ্ধা মৃদুলা রানীর অভিভাবক না থাকায় আপাতত স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন ‘সহায়’র স্বেচ্ছাসেবকদের দেখভাল করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফেনী মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, বৃদ্ধা মা’র ৫ সন্তানদের খবর দেয়া হলে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে বড় মেয়ে সুমি সাহা ও কক্সবাজার থেকে মেজো ছেলে বিসিএস কর্মকর্তা সুশান্ত সাহা থানায় এসেছেন। তবে ফেনীতে থাকা চাল ব্যবসায়ী বড় ছেলে ও ছোট ছেলে থানায় আসেননি। তাদেরকে থানায় উপস্থিত করার জন্য অন্য সন্তানদের চাপ দেয়া হচ্ছে। ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, ওই বৃদ্ধা মা’কে সন্তানরা মেরে ফেলার চক্রান্ত করছিল কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃদ্ধা মায়ের প্রতি সন্তানদের এমন অমানবিক আচরণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন।