শেষের পাতা

কুয়েত দূতাবাসে হামলা, ভাঙচুর

ভিডিও ফুটেজে চিহ্নিত দোষীরা

দীন ইসলাম

২০ জানুয়ারি ২০১৯, রবিবার, ১০:১৪ পূর্বাহ্ন

কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সংগ্রহ করা ভিডিও ফুটেজ দেখে দোষীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে হামলা ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের নামে মামলা করা হবে। কুয়েতের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে। তবে নিরীহ বাংলাদেশি শ্রমিকদের মুক্তি দেয়া হবে। এদিকে আটক বাংলাদেশিদের কী হবে- এ নিয়ে ভাবনার মধ্যে পড়েছে দূতাবাস। কারণ, কুয়েত সরকার বাংলাদেশ দূতাবাস ভাঙচুর ও কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনাটি বেশ সিরিয়াসলি নিয়েছে। কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন, বাঙালিরা এক কাপড়ে দেশে ফেরত যাক এটা আমরা কোনো সময় কামনা করি না। কয়েক দিন আগেও ১৬ জনকে ফেরত পাঠাতে কুয়েত এয়ারপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। দেন-দরবার করে এয়ারপোর্ট থেকে তাদের আমরা ফেরত এনেছি। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত।

কুয়েতের কোম্পানি লেসকোর সঙ্গে বিষয়টি মিটে গেলেও কী কারণে দূতাবাস ও কর্মকর্তাদের ওপর হামলা হয়েছে- তা মাথায় আসছে না। বাংলাদেশি ভাইয়েরা কেন এমন করতে গেলেন তা ভেবে পাই না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ দূতাবাসে ভাঙচুরের ঘটনায় আটক শ্রমিকদের মুক্ত করার চেষ্টা চলছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের মুক্ত করার চেষ্টা করছে সেখানকার কূটনীতিকরা। রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম বলেন, আমরা তাদের ছাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যে কুয়েত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

আশা করছি, তাদের অপরাধকে খাটো করে দেখা হবে। এ বিষয়ে কুয়েত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। তারা আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, নিরীহ কোনো বাংলাদেশির বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাবেন না তারা। তিনি বলেন, যে কোম্পানিতে বাংলাদেশি ওই শ্রমিকরা কর্মরত ছিলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। বিষয়টি সুন্দর সমাধানও হয়েছিল। কোম্পানি লেসকো আন্ডারটেকিং দিয়েছিল। তারা ৫ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে বেতন ও বকেয়া পরিশোধ করবে। পাশাপাশি আকামা পুনরায় নবায়নের বিষয়ে সম্মত হন। এদিকে লেসকো নামের কুয়েতি ওই কোম্পানিতে কয়েকশ’ বাংলাদেশি কাজ করছেন। তারা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, গত তিন মাস ধরে তারা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না।

এছাড়া, আকামা পরিবর্তনের সুবিধা না থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে তারা এই কাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে শুরু করে কুয়েত। ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে প্রায় চার লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক নিয়েছে দেশটি। ওই বছর বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করার পর, ২০১৪ সালে আবার শ্রমিক নিয়োগ চালু হয়। এরপর ২০১৬ সালে পুরুষ গৃহকর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কুয়েত সরকার। কয়েক মাস পর ওই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়। এখন বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বৃহস্পতিবার কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ভাঙচুর ও কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনা শ্রম-বাজার আবারও ব্যাকফুটে চলে গেল।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status