দেশ বিদেশ

রংপুরে গুদাম-আড়তে হাজার হাজার বস্তা চাল

জাভেদ ইকবাল, রংপুর থেকে

১৬ জানুয়ারি ২০১৯, বুধবার, ৯:৫০ পূর্বাহ্ন

গুদাম ও আড়তে মজুদ হাজার হাজার বস্তা চাল। তারপরও কমছে না চালের দাম। নিয়ন্ত্রণহীন বাজার। নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষজনের। অভিযোগ উঠেছে, উত্তরাঞ্চলের ৫০০ থেকে ৬০০ অটো রাইস মিল মালিক নিজেদের ইচ্ছামতো মজুদের পাহাড় গড়ে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করছেন। ফলে পর্যাপ্ত উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও চালের দাম হঠাৎ এমন লাগাম ছাড়া হয়ে উঠেছে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার এখনই যদি অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে এই সিন্ডিকেট চালের বাজার আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে। অনুসন্ধানে জানা যায়, রংপুরের মাহিগঞ্জ, দিনাজপুরের পুলহাট থেকে প্রতিদিন শ’ শ’ ট্রাক চাল ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। এসব মোকামে বছরের শুরুতেই অটো রাইসমিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে চিকন ও মাঝারি মানের চাল প্রকারভেদে ৫০ কেজি ওজনের বস্তা প্রতি ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগে এই চাল ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কম দামে পাওয়া যেত। রংপুরের মজিবর মিয়া, জব্বার মিয়া, আবেদ আলীসহ অন্যান্যরা জানান,  বিভিন্ন মোকাম ঘুরেও অটো রাইস মিলগুলোর কারণে চাল সংগ্রহ করতে পারেননি। মিলের মালিকরা বাজার থেকে একতরফাভাবে ধান সংগ্রহ করে ইচ্ছামতো চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। কৃষকদের কাছেও ধান নেই। মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে কৃষকদের কাছেও আমন ধান নেই। কারণ তারা আগেই ধান বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন। আগেই কৃষকদের কাছে ধান কিনে অটোরাইস মিল মালিকরা মজুদ করে রেখেছেন। রংপুর সদরের কৃষক শাহজাহান, কাউনিয়ার আফজাল হোসেন, নীলফামারীর শরীফ মিয়াসহ অনেকে জানান, তারা আমন ধান গোলায় তোলার পর পরই কম দামে বিক্রি করে দিয়েছেন। তাদের কাছে এখন কোনো ধান নেই। ফলে এখন ধানের দাম মণপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বাড়লেও তাদের কোনো লাভ হচ্ছে না; বরং এতে লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। রংপুর চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, অটো রাইসমিল মালিকরা আগে থেকে ধানের মজুদ গড়ে তুলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে অটো রাইস মিলগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লাইক আহমেদ অবশ্য চালের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে করেন। তিনি বলেন, চিকন ও মাঝারি মানের চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া চাহিদা বাড়াও চিকন চালের দামবৃদ্ধির একটি কারণ। এতে অটো রাইসমিলগুলোর পাশাপাশি কৃষকদের কাছেও কিছু ধান থাকায় তারা দুটো পয়সা বেশি পাচ্ছেন। আর অটো রাইস মিলগুলোয় ধান মজুদ রাখার বিধান রয়েছে। ব্যবসার স্বার্থে মজুদ রেখে বেআইনি কিছু করছে না বলে তিনি মনে করেন। বিষয়টি নিয়ে রংপুরের আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা রায়হানুল কবির বলেন, চিকন ও মাঝারি মানের যে চালের দাম বেড়েছে তা বোরো জাতের, আমন নয়। আমনের দাম স্বাভাবিকই আছে। তার পরও ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা ধান মজুদ করেছেন কিনা বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status