প্রথম পাতা

ফি রে দে খা

বিদেশি বাচ্চাকে বিক্রি করে দিতে চান নানা!

মরিয়ম চম্পা

১৫ জানুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন

প্রতীকী ছবি

ভাগ্য বদলের পরিবর্তে বিপর্যয়। ভাঙচুর, তছনছ জীবন। বিদেশে যাওয়া বহু নারীর কপাল পোড়ার কাহিনী আমরা তুলে ধরেছিলাম মানবজমিনে। গত বছর ৩০শে সেপ্টেম্বর ‘বিদেশি বাচ্চা বলে প্রতিবেশীরা জুতা ফিক্যা মারে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল জর্ডান ফেরত এক নারী ও   তার সন্তানকে নিয়ে। এখন কেমন আছেন তিনি? কী করছে তার সন্তানটি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে সেই নারী এবং তার কন্যা সন্তান উভয়ই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ওই নারী বলেন, মেয়ের বয়স এখন ৬ মাস। বাচ্চাকে বুকে আগলে রেখে অনেকটা কঠিন লড়াই করে বেঁেচ আছি। আগে প্রতিবেশীরা জুতা ছুড়ে মারতো। আর এখন নিজের বাবাই আমার মেয়েকে বিক্রি করে দিতে চান। আব্বা মাটি কেটে সংসার চালান। তাই একটু ভালো থাকার আশায় সামান্য একটি গরু, গোয়াল ঘর আর টিনের ঘরের বিনিময়ে মেয়ের ঘরের নাতনিকে বিক্রি করে দেয়ার চেষ্টা করছেন। আব্বা ইদানীং আমার মেয়ের সঙ্গেও ভালো ব্যবহার করছেন না। মা আমাকে ভালোবেসে দুই বেলা খেতে দেয় বলে কোনোভাবে বেঁচে আছি। আব্বা কথায় কথায় বলে অবৈধ মেয়েকে বাঁচিয়ে রেখেছি এটাই তোর ভাগ্য।

বাচ্চা নিয়ে এত দেমাগ কিসের। এখনো সময় আছে মেয়েটাকে দিয়ে দিই। এই বাচ্চা থাকলেতো তোকে নতুন করে বিয়ে দেয়া যাবে না। আব্বা প্রায়ই আমাদের মা-মেয়েকে মারার জন্য তেড়ে আসে। জীবন চলে গেলেও আমার পরীকে (মেয়ে) কাছ ছাড়া করবো না। পরী এখন বসতে পারে। কাউকে দেখলে ফিক করে হেসে দেয়। ওর দিকে তাকালে আমি সব কষ্ট ভুলে যাই। মেয়েটা আরেকটু বড় হলে ওকে নানুর কাছে রেখে আমি গার্মেন্টে চাকরি নেবো। তখন আর আব্বার বাজে কথা শুনতে হবে না। বড় হয়ে বাচ্চা তার বাবার পরিচয় জানতে চাইলে বলবো তোর বাবা এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে। মেয়েকে পড়ালেখা শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চাই। কারণ ও-ই আমার ভবিষ্যৎ। ওকে নিয়েই বাকিটা জীবন বেঁচে থাকতে চাই।

২০১৪ সালের শুরুর দিকে জর্ডান যান ওই নারী। সেখানে একটি চক্রের হাতে পড়ে দীর্ঘদিন ধরে যৌন-নিপীড়নের শিকার হন। একপর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েন তিনি। গত বছর ১৭ই এপ্রিল দেশে ফিরে আসেন ওই নারী। কিছুদিন বাদে তার হাত পায়ে পানি চলে আসে। এ সময় তার মা তাকে প্রথমে কবিরাজের কাছে পরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানান তার মেয়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
সন্তান জন্ম দেয়ার ব্যাপারে অটল থাকেন ওই নারী। পরে জন্ম নেয়া শিশুটিকে নিয়েই এখন বেঁচে থাকার লড়াই করে যাচ্ছেন ওই নারী।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status