দেশ বিদেশ
শাবিতে মারা যাওয়া ভাইয়ের জন্য ঢাবি শিক্ষিকার আহাজারি
শাবি প্রতিনিধি
১৫ জানুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন
‘আমার ভাইটা টিচার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল এটাই তার অপরাধ...গত ছয় মাস ধরে ডিপার্টমেন্ট তিলেতিলে মেরে ফেলছে আমার ভাইকে...আমার কলিজার টুকরা কষ্ট সহ্য না পেরে কাল সুইসাইড করেছে... আমার কলিজার টুকরা ছাড়া আমি কিভাবে বাঁচবো? ভাইরে আমি আসতেছি তোর কাছে ভাই...।’ ঢাবি শিক্ষিকা শান্তা তাওহিদা ফেসবুক আইডিতে তার ভাইয়ের জন্য এভাবেই আহাজারি করেন। যারাই এ স্ট্যাটাস দেখেছেন তারাই মর্মাহত হয়েছেন। এ নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে। শান্তার ভাই প্রতীক সিলেটের শাহ্জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। গতকাল বিকালে পুলিশ নগরীর বাগবাড়ী এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে। প্রতীক ওই এলাকায় একটি ছাত্রমেসে বসবাস করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের সাইফুর রহমান প্রতীক (২৫) নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া জানান, ‘কাজল শাহ্ এলাকার একটি বাসা থেকে সোমবার বিকালে পুলিশ প্রতীকের ফ্যানের সঙ্গে জুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ ধারণা করছে আগের দিন রোববার ঐ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নেয়া হয়। এখন হাসপাতালের মর্গে তার লাশ রয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলায়।’ এদিকে প্রতীকের বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহিদা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘আমার কলিজার টুকরা আমার আদরের একমাত্র ভাই আমার প্রতীক আর নাই...। শাবিপ্রবি’র জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগকে আমি ছাড়বো না, অনার্স এ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া ছেলেটাকে বিভিন্ন ইস্যু বানিয়ে মাস্টার্স এ সুপারভাইজার দেয়নাই, বিভিন্ন কোর্সে নম্বর কম দিয়েছে! আমার ভাইটা টিচার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল এটাই তার অপরাধ...। গত ছয়মাস ধরে ডিপার্টমেন্ট তিলেতিলে মেরে ফেলেছে আমার ভাইকে...আমার কলিজার টুকরা কষ্ট সহ্য না পেরে কাল সুইসাইড করেছে..।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ জানান, আত্মহত্যার বিষয়টি তার পরিবারকে জানানো হয়েছে। পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।