বাংলারজমিন
পিতা হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলো ঘাতকপুত্র
ছাগলনাইয়া (ফেনী) প্রতিনিধি
১৩ জানুয়ারি ২০১৯, রবিবার, ৯:১৪ পূর্বাহ্ন
ছাগলনাইয়ায় সেপটিক ট্যাংক থেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবুল কালামের (৫২) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের একদিনের মাথায় পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে। নিহতের ছেলে হাসান ও তার বন্ধু মিলেই ঘটিয়েছে এ হত্যাকাণ্ড। শুক্রবার রাতে ছাগলনাইয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) এমএম মোর্শেদ পিপিএম ও পরিদর্শক (তদন্ত) সুদ্বীপ রায়ের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে সে। তার দাবি তার বাবা আবুল কালাম পরিবারের সদস্যদের কোনো কারণ ছাড়া প্রায় অমানুষিক নির্যাতন করতো। এটা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আবুল হাসান। এই জন্য বন্ধু দিয়ে ভয় দেখাতে গিয়ে লাঠি দিয়ে হাল্কা আঘাত করে। এতে তার মৃত্যু হয়। সে আরো বলে, এত হাল্কা আঘাতে তার বাবার মৃত্যু হবে সেটা ভাবতে পারি নি। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে সেফটিক ট্যাংক থেকে আবুল কালামের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রী রেখা আক্তার ও ছেলে হাসানকে থানায় নেয় পুলিশ। পরে হাসানের বন্ধু ইমাম হোসেন রহিমকেও আটক করা হয়। রহিম কৈয়রা গ্রামের ওসমান গণির ছেলে। ঘটনার ক্লু উদঘাটন হওয়ার পর শুক্রবার রাতেই রেখা আক্তারকে ছেড়ে দেয়া হয়। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় ছেলে আবুল হাসান ও বন্ধু ইমাম হোসেন রহিমকে। কালামের বোন জরিনা আখতার জানান, গত শুক্রবার রাত থেকে নিখোঁজ হন ভাই আবুল কালাম। বৃহস্পতিবার ঘরের পাশে দুর্গন্ধ পান তিনি। এ সময় পাশের ঘরের সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা সামান্য ফাঁকা দেখতে পান। বিষয়টি এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেনকে জানালে তিনি পুলিশে খবর দেন। দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁঁছে ও সেপটিক ট্যাংকে লাশ দেখতে পেয়ে বিকালে লাশ উদ্ধার করে। জরিনা আখতার আরো জানান, তার ভাই আবুল কালাম অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য কুক ছিলেন। তিনি তিনটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছেদ হওয়ায় রেখা আক্তারকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ও শেষে ঢাকার এক গার্মেন্ট কর্মীকে বিয়ে করেন। ২য় স্ত্রী রেখার সঙ্গে বাড়িতে বসবাস করতেন। গত দু’বছর আগে আবুল কালাম স্ট্রোক করার পর থেকে স্বাভাবিক আচরণ করতেন না। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেন না। গত শুক্রবার মাগরিবের নামাজের পর থেকে তিনি নিখেঁাঁজ। সেদিন দুপুরে আবুল কালামের স্ত্রী রেখা আক্তার তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে যায়। আবুল কালাম পশ্চিম মধুগ্রাম মিদ্দা বাড়ির সামছুল হকের ছেলে।