শেষের পাতা

স্বামীর নির্যাতনেই মৃত্যু গৃহবধূ চম্পার

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

১১ জানুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন

কয়েক মাস আগেও চম্পাকে নির্যাতন করেছিল স্বামী নকুল সূত্রধর। অকথ্য নির্যাতনে কাহিল হয়ে পড়েছিল চম্পা। ওই সময়ও স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিল চম্পার পরিবার। কিন্তু সামাজিকভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি করে চম্পাকে তুলে দেয়া হয়েছিল স্বামী নকুলের হাতে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না চম্পার। স্বামীর নির্যাতনে  অবশেষে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে চম্পা। ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের জালালাবাদ থানার হাটখোলা গ্রামে। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে চম্পার স্বামী নকুল সূত্রধর।

পুলিশ চম্পার পরিবারের দায়ের করা মামলা গ্রহণ করে আসামিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় চলছে এলাকায়। চম্পা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সদরখোলা গ্রামে বাড়ি চম্পা মল্লিকার। তার পিতার নাম বিমল মল্লিক। তার স্বামী নকুল সূত্রধর হচ্ছে জালালাবাদ থানার শিবেরবাজার ইউনিয়নের রাজারগাঁওয়ের হাটখোলা গ্রামের বাসিন্দা। নকুলের পিতার নাম মৃত রবিন্দ্র সূত্রধর। ৯ মাস আগে নকুল সূত্রধরের সঙ্গে বিয়ে হয় চম্পা মল্লিকার। পারিবারিক সূত্র জানায়- চম্পা ও নকুলের বিয়ের পর কিছু দিন তাদের সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু নানা কারণে বিয়ের তিন মাসের মাথায় তাদের পরিবারে অশান্তি শুরু হয়। এরপর থেকে নকুল নির্যাতন শুরু করে চম্পার ওপর। এই নির্যাতন এক সময় বেড়ে যায়। ক্রমাগত নির্যাতনে কাহিল হয়ে পড়েছিল চম্পা।

৫ মাস আগে নকুল সূত্রধরের অকথ্য নির্যাতনে কাহিল হয়ে পড়েছিল চম্পা। সহ্য করতে না পেরে চলে যায় দক্ষিণ সুরমার পিতার বাড়ি। নির্যাতনের কথা জানায়। আর স্বামীর ঘরে যাবে না বলেও জানায়। এ ঘটনার পর দক্ষিণ সুরমা থানায় স্বামী নকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিল চম্পার পরিবার। তখন সামাজিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করে চম্পাকে অনেক জোর করেই পাঠিয়ে দেয়া হয় নকুল সূত্রধরের ঘরে। কিন্তু চম্পা নকুলের ঘরে গেলেও তার ওপর অত্যাচার কমেনি। যৌতুক সহ নানা কারণে চম্পাকে মারধর করে নকুল। এসব নিয়ে সাংসারিক বিরোধ বাঁধলে গ্রামের লোকজন এসে তা মীমাংসা করে দেন।

চম্পার ভাই উজ্জ্বল মল্লিক জানিয়েছেন- মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের পরিবারেকে জালালাবাদ থানা থেকে ফোন করা হয়। পুলিশের তরফ থেকে তাকে জানানো হয়- তাঁর বোন চম্পা অসুস্থ বর্তমানে মেডিকেল ভর্তি রয়েছে। এরপর মা-সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে বোনের লাশ দেখতে পায়। তবে হাসপাতালে নকুল সূত্রধর ও তাঁর পরিবারের কেউ ছিল না। উজ্জ্বল মল্লিক অভিযোগ করেন- তাঁর বোনকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে নকুল সূত্রধর ও তার পরিবার। এ ঘটনার পর থেকে নকুল পলাতক রয়েছে। এর আগেও তারা চম্পাকে নির্যাতন করেছে বলে জানান তিনি।

এদিকে- সিলেটের জালালাবাদ থানার ওসি হারুনুর রশীদ মানবজমিনকে জানিয়েছেন- চম্পার ভাই উজ্জ্বল মল্লিক তার বোনের স্বামী নকুল সহ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় এজাহার দেয়ার পর আমরা সেটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছি। এখন পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে। পাশাপাশি নকুল সূত্রধর সহ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন- এ ঘটনার আগেও নকুল কয়েক বার চম্পাকে নির্যাতন করেছে। এটি ইতিমধ্যে জানা গেছে বলে জানান তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status