এক্সক্লুসিভ

সারা দেশে ধরপাকড়, গ্রেপ্তার ২৪০

স্টাফ রিপোর্টার

১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, সোমবার, ২:২০ পূর্বাহ্ন

সারা দেশে অব্যাহত রয়েছে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অন্তত ২৪০ জন নেতাকর্মী ও সমর্থককে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছে বিএনপি। এদিকে ঢাকার দোহার ও নরসিংদীর মনোহরদীসহ নানা জায়গায় বেশ কয়েকটি গায়েবি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, শনিবার রাত থেকে রোববার বিকাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের ৪১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনোয়ার আলী, শিল্পাঞ্চল থানার ৫ জন, কলাবাগান থানা বিএনপি সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, শাহবাগ থানায় ৪ জন, ঢাকা-১ আসনে দোহার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মেম্বারসহ ২৫ জন, ঢাকা-১৫ আসনের ভাষানটেক থানা বিএনপি সভাপতি গোলাম কিবরিয়া মাখম ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক পলাশকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রিজভী জানান, রাজধানীর বাইরে হবিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুশফিক আহমেদ, নরসিংদীর মনোহরদীতে পৌর বিএনপির সভাপতি বদরুল ইসলাম মোল্লা বাবুল ও যুবদল সহ-সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন মোল্লা, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ইমতিয়াজ আহম্মদসহ তিনজন, চট্টগ্রাম-৯ আসনে বিএনপি নেতা সবুক্তিগিন সিদ্দিকী, নাটোর বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান একেএম নাজমুল হক নাজু, মান্দা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি হাফিজুর রহমান, মান্দা উপজেলা যুবদল সভাপতি প্রকৌশলী মিজানুর রহমান নান্টুসহ ৬জন, রাজশাহী-৪ আসনে বাগমারা থানা বিএনপি নেতা ডা. আব্দুল বারী, জোট নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিমসহ ৫জন, ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপি নেতা আমিনুর মল্লিক ও আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রিজভী জানান, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা জাসাস সভাপতি, বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌর বিএনপি নেতা ডা. মতিয়ার রহমানসহ তিনজন, বরিশালের উজিরপুর পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রোকনুজ্জামান টুলু, হবিগঞ্জ-৩ আসনে পৈল ইউনিয়ন যুবদল নেতা জামাল উদ্দিন মেম্বার, জেলা যুবদল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গুলজার খান, সদর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান, নুরপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা শামসুল হকসহ সাতজন, মৌলভীবাজার-১ আসনে বড়লেখা থানার উত্তর শাহবাজপুর ইউপি যুবদলের আহ্বায়ক জামিল আহমেদসহ ২ জন, মৌলভীবাজার-৪ আসনে মির্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক সভাপতি সুফি মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মছদ্দর আলী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা যুবদল নেতা মোছাব্বির মিয়াসহ পাঁচজন, রাজশাহী-৬ আসনে চারঘাট থানা বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবু রায়হান রুপম, চট্টগ্রাম-২ আসনে বিএনপি নেতা মুনসুর, নাটোর-২ আসনে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাচ্চু ও সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আলম, শেরপুর-৩ আসনে ঝিনাইগাতি বিএনপি কর্মী শহীদুল ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া চট্টগ্রাম-৮ আসনের চান্দগাঁও থানা পুলিশ কয়েকদিন ৫০ জন, টাংগাইল-৩ আসনে দুজন, ময়মনসিংহ-২ আসনে আটজন, নওগাঁ-২ আসনের ধামইরহাটে চারজন, শেরপুর-১ আসনে বিএনপির আটজন, ময়মনসিংহ-৫ আসনে দুজন, গোপালগঞ্জ-২ আসনে অন্তত দশজন, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে পাকুন্দিয়া থেকে ১২ জন, নেত্রকোনা-১ আসনে নয়জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে শিবগঞ্জ উপজেলার নয়জন, ভোলা-৩ আসনে বিএনপি নেতা মজিদ মহাজন, ডা. জসিমসহ পাঁচজন, নোয়াখালী-৪ আসনে সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ বাচ্চু মিয়াসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি জানান, জামালপুর-৩ আসনের মাদারগঞ্জ বিএনপিকর্মীদের খুঁজতে গিয়ে পুলিশ এক মহিলাকে নির্যাতন করে। একই সঙ্গে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের জেল দেয়া হয়। রিজভী জানান, ঢাকার দোহারে ১৬২ জনের নামে দুটি ও নরসিংদীর মনোহরদীতে ৭৯ জনের নামে একটি গায়েবি মামলা করেছে পুলিশ। এদিকে গতকাল দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন বানচাল করতেই পরিকল্পিতভাবে বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের ওপর ধারাবাহিক হামলা চালাচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়ে নির্বাচনী মাঠে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে সরকার। কিন্তু বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের মাঠে অনড় অবস্থায় থাকায় এখন আওয়ামী লীগ বেসামাল হয়ে পাবনার হেমায়েতপুরের হাসপাতালের অসুস্থ বাসিন্দাদের মতো কথা বলছে। রিজভী বলেন, ২০১৪ সালের মতো এবার আর ভোট ডাকাতি করা যাবে না, একতরফা ভোট করা যাবে না। তাই তো সেনাবাহিনী নামানোর আগেই নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে দেশজুড়ে সহিংসতা চালাচ্ছে লুটপাটকারীরা। রক্তাক্ত করা হচ্ছে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের হেভিওয়েট প্রার্থীদের। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে খুব পরিকল্পিতভাবে। ঢাকায় শনিবার রাতে ধানের শীষের প্রার্থী নবী উল্লাহ নবীর শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা চালিয়ে যুবদল নেতা রিপন মিয়াকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। অন্যদিকে চট্টগ্রামে একজন বিএনপি কর্মীকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মহানগরের এক বিএনপি নেতাকে তার বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। রিজভী বলেন, প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে বৈধ অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অথচ এবারে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এই কারণেই আওয়ামী ক্যাডাররা রক্ত ঝরাচ্ছে। দেশব্যাপী পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত অস্ত্রের হামলায় গত কয়েকদিনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের শুধু কর্মীরাই নয় নেতারাও ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন। আর সব দেখেও নির্লজ্জ নির্বিকারের মতো মিথ্যাচার করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status