শেষের পাতা
আলোচনায় সাইফুর-মুহিত
সিলেটে ভোটের মাঠে উন্নয়ন নিয়ে ‘বিতর্ক’
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, রবিবার, ৮:৪৭ পূর্বাহ্ন
নির্বাচন এলেই সিলেটে শুরু হয় উন্নয়ন বির্তক। ঘুরেফিরে আসে সাইফুর-মুহিতের নাম। মাস ছয়েক আগের সিটি নির্বাচনে উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবারের সংসদ নির্বাচনেও সিলেটে এই বিতর্ক শুরু হয়েছে। আর এই বিতর্কের মধ্যে প্রার্থীরাও অংশ নিয়ে বাড়তি খোড়াক যোগাচ্ছেন। এরই মধ্যে বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ভোট প্রচারণায় ঘোষণা দিয়েছেন- সাইফুর রহমানের অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ তিনি সমাপ্ত করতে চান। এজন্য তিনি ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইছেন। আর বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেন। তার দাবি- সিলেটে ৩৮ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি ১০ বছরে সেটি করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সিলেট উন্নয়ন পর্ব শুরু করেছিলেন সিলেট-১ আসনের সাবেক এমপি ও প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। তখন ‘টাউন’ ছিল সিলেট নগর। ১৯৯৬ সালে তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর সিলেটে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে কাজ শুরু করেছিলেন। অনেক কাজের সূচনা করে যান তিনি। ১৫ বছর মেয়াদি উন্নয়ন ধারা সম্পন্ন করেছিল সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। এরপর আরো কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করলেও সেটি শেষ করতে পারেননি। পরবর্তীকালে বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসে সেই উন্নয়ন প্রকল্প সমাপ্ত করেন। এই তিন নেতার ধারাবাহিক উন্নয়নে এখন অনেকটা আলোকিত সিলেট। হকার উচ্ছেদ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, রাস্তা প্রশস্তকরণসহ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান।
সিলেটের উন্নয়ন নিয়ে নতুন দাবি উপস্থাপিত হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে সিলেটের যোগাযোগ। আকাশ পথে প্রবাসী খ্যাত সিলেটের যোগাযোগ এখনো স্বাভাবিক হয়নি। পূর্ণাঙ্গ সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ফোর লেন ও সিলেট থেকে ঢাকার রেলপথ ডাবল লাইন। এই দাবির মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ প্রকল্পাধীন রয়েছে। সেটি ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভায় পাসও হয়েছে। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে শক্তি বাড়ানোর ৩ হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। রানওয়ে সম্প্রসারণের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর এসব প্রকল্পকে এবারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে নিয়ে আসছে প্রার্থীরা।
সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান সিলেটের উন্নয়নে কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করে সেগুলোর সমাপ্ত করেও গিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছিল সিলেটে অত্যাধুনিক সার্কিট হাউস নির্মাণ। সুরমা নদীর উভয় তীরে টেমস নদীর তীরের মতো ১৬ কিলোমিটারব্যাপী একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। প্রকল্পের প্রথম ধাপে ক্বীন ব্রিজের নিচে দুই ধারে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দৃষ্টিনন্দন স্পট গড়ে তোলা হয়েছে। ভিভিআইপি সার্কিট হাউস নির্মাণ, সংস্কারকৃত শারদা হল, ক্বীন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি, পৌর পাঠাগারের পাশে সুরমা নদীর তীর এখন সিলেটবাসীর জন্য এক আকর্ষণীয় স্থান। নগরীর হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার সংস্কার, মানিক পীর (রহ.) মাজার সংস্কার, ভিভিআইপি সার্কিট হাউস থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি, সোডিয়াম বাতি, সিলেট-তামাবিল সড়ক নির্মাণ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক নির্মাণ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা, সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কে ১১টি ব্রিজ নির্মাণ, সিলেট ওসমানী বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিকীকরণ, এসএমপি প্রতিষ্ঠা, নতুন ফায়ার স্টেশন স্থাপন, টিঅ্যান্ডটির নতুন এক্সচেঞ্জ স্থাপন, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, মডেল স্কুল, বিভাগীয় সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এছাড়া সিলেট সরকারী মহিলা কলেজ ছাত্রী নিবাস ও নতুন ক্যাম্পাস, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হোস্টেল নির্মাণ, বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ, বিভাগীয় স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা, যানজট দূরীকরণের লক্ষ্যে শাহপরান ব্রিজ, তৃতীয় শাহজালাল সেতুসহ কয়েকটি কাজ তিনি শেষ করেন।
বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সিলেটে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। তার উন্নয়ন কাজের মধ্যে প্রথম তিন বছর কেটে গেছে সাইফুরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা কাজগুলো শেষ করতে। এর মধ্যে ছিল কাজিরবাজার সেতু। এই সেতুটির ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে উদ্বোধন করে রেখে দেয়া হয়েছিল। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পরবর্তীকালে নকশা পরিবর্তন করে এই সেতুটির কাজ শেষ করেন। এখন দৃশ্যমান দৃষ্টিনন্দন কাজিরবাজার সেতু। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘোষণা হলেও সেটির উন্নয়ন ছিল না। শত-কোটি টাকা ব্যয়ে রিফুয়েলিং সিস্টেমস চালুসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এখন পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ করতে অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর অবদান বেশি। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ করা হয়েছে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্স নানা উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। সিলেটের বিদ্যুৎখাতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার কাজ করিয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ কারণে লোডশেডিংয়ের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে সিলেট। সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কে সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আঞ্চলিক সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে শত কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরহাউস নির্মাণ করা হয়েছে। সিলেট নগরীর কয়েকটি রাস্তাকে দুই লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীত করা হয়েছে অর্থমন্ত্রীর প্রচেষ্টায়। এছাড়া শাহপরানে সদর হাসপাতাল নির্মাণসহ প্রায় ১০টি সাস্থ্য সেবালয় নির্মাণ করা হয়েছে।
সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, সিলেটের উন্নয়ন যারা দেখে না- তারা অন্ধ নয় তো কালা। তারা সব দেখেও না দেখার ভান করে। সিলেটের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ নানা কাজের মূল উদ্যেক্তা অর্থমন্ত্রী। তিনি সিলেটে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। আর যেসব উন্নয়ন কাজ শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে সেগুলো শেষ হলে সিলেট হবে বিশ্বের অন্যতম শহর। নৌকায় ভোট দিলে সিলেটে উন্নয়ন হয়। ঢাকা-সিলেট ফোরলেন কাজ তো শুরুর অপেক্ষায়। ওসমানীতে আলাদা টার্মিনাল নির্মাণ, রেলপথে আধুনিকায়নে কাজ শুরু করা হবে। সুতরাং গত ১০ বছরে সিলেটে যে উন্নয়ন হয়েছে ৩৮ বছরে তা হয়নি।
সিলেট-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির তার প্রচারণায়ও টেনে আনছেন উন্নয়ন বির্তক। তার দাবি সিলেটে গত ১০ বছরে উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে। আর নগরে বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ করেছেন আরিফুল হক চৌধুরী। আরিফের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। বিএনপি উন্নয়নে বিশ্বাস করে বলেই গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিলেট নগরের মানুষ ধানের শীষে ভোট দিয়েছে। মেয়রের উন্নয়ন মন্ত্রী নিজের নামে চালিয়ে যেতে পারেন না। তিনি বলেন, এম সাইফুর রহমান ছিলেন সিলেটের উন্নয়নের রূপকার। তিনি আধুনিক সিলেটের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। বিএনপি নির্বাচিত হলে সিলেটে সাইফুরের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা হবে। এদিকে- সিলেট সফরে এসে উন্নয়ন বিতর্কের শুরু করেছিলেন ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা আ স ম আব্দুর রব। অর্থমন্ত্রীর উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন। আর কোনো উন্নয়ন হয়নি বলেও দাবি করেন। তার এই বক্তব্যে জবাব দিয়েছেন সিলেটের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। তিনি বলেছেন, ১০ বছর পর সিলেটে এসে রব সাহেবরা কোনো উন্নয়ন দেখেন না। নির্বাচনী মাঠে বিভ্রান্তি ছড়াতে এই বক্তব্য দিচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।
সিলেট উন্নয়ন পর্ব শুরু করেছিলেন সিলেট-১ আসনের সাবেক এমপি ও প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। তখন ‘টাউন’ ছিল সিলেট নগর। ১৯৯৬ সালে তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর সিলেটে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে কাজ শুরু করেছিলেন। অনেক কাজের সূচনা করে যান তিনি। ১৫ বছর মেয়াদি উন্নয়ন ধারা সম্পন্ন করেছিল সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। এরপর আরো কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করলেও সেটি শেষ করতে পারেননি। পরবর্তীকালে বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসে সেই উন্নয়ন প্রকল্প সমাপ্ত করেন। এই তিন নেতার ধারাবাহিক উন্নয়নে এখন অনেকটা আলোকিত সিলেট। হকার উচ্ছেদ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, রাস্তা প্রশস্তকরণসহ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান।
সিলেটের উন্নয়ন নিয়ে নতুন দাবি উপস্থাপিত হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে সিলেটের যোগাযোগ। আকাশ পথে প্রবাসী খ্যাত সিলেটের যোগাযোগ এখনো স্বাভাবিক হয়নি। পূর্ণাঙ্গ সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ফোর লেন ও সিলেট থেকে ঢাকার রেলপথ ডাবল লাইন। এই দাবির মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ প্রকল্পাধীন রয়েছে। সেটি ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভায় পাসও হয়েছে। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে শক্তি বাড়ানোর ৩ হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। রানওয়ে সম্প্রসারণের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর এসব প্রকল্পকে এবারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে নিয়ে আসছে প্রার্থীরা।
সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান সিলেটের উন্নয়নে কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করে সেগুলোর সমাপ্ত করেও গিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছিল সিলেটে অত্যাধুনিক সার্কিট হাউস নির্মাণ। সুরমা নদীর উভয় তীরে টেমস নদীর তীরের মতো ১৬ কিলোমিটারব্যাপী একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। প্রকল্পের প্রথম ধাপে ক্বীন ব্রিজের নিচে দুই ধারে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দৃষ্টিনন্দন স্পট গড়ে তোলা হয়েছে। ভিভিআইপি সার্কিট হাউস নির্মাণ, সংস্কারকৃত শারদা হল, ক্বীন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি, পৌর পাঠাগারের পাশে সুরমা নদীর তীর এখন সিলেটবাসীর জন্য এক আকর্ষণীয় স্থান। নগরীর হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার সংস্কার, মানিক পীর (রহ.) মাজার সংস্কার, ভিভিআইপি সার্কিট হাউস থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি, সোডিয়াম বাতি, সিলেট-তামাবিল সড়ক নির্মাণ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক নির্মাণ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা, সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কে ১১টি ব্রিজ নির্মাণ, সিলেট ওসমানী বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিকীকরণ, এসএমপি প্রতিষ্ঠা, নতুন ফায়ার স্টেশন স্থাপন, টিঅ্যান্ডটির নতুন এক্সচেঞ্জ স্থাপন, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, মডেল স্কুল, বিভাগীয় সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এছাড়া সিলেট সরকারী মহিলা কলেজ ছাত্রী নিবাস ও নতুন ক্যাম্পাস, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হোস্টেল নির্মাণ, বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ, বিভাগীয় স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা, যানজট দূরীকরণের লক্ষ্যে শাহপরান ব্রিজ, তৃতীয় শাহজালাল সেতুসহ কয়েকটি কাজ তিনি শেষ করেন।
বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সিলেটে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। তার উন্নয়ন কাজের মধ্যে প্রথম তিন বছর কেটে গেছে সাইফুরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা কাজগুলো শেষ করতে। এর মধ্যে ছিল কাজিরবাজার সেতু। এই সেতুটির ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে উদ্বোধন করে রেখে দেয়া হয়েছিল। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পরবর্তীকালে নকশা পরিবর্তন করে এই সেতুটির কাজ শেষ করেন। এখন দৃশ্যমান দৃষ্টিনন্দন কাজিরবাজার সেতু। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘোষণা হলেও সেটির উন্নয়ন ছিল না। শত-কোটি টাকা ব্যয়ে রিফুয়েলিং সিস্টেমস চালুসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এখন পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ করতে অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর অবদান বেশি। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ করা হয়েছে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্স নানা উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। সিলেটের বিদ্যুৎখাতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার কাজ করিয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ কারণে লোডশেডিংয়ের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে সিলেট। সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কে সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আঞ্চলিক সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে শত কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরহাউস নির্মাণ করা হয়েছে। সিলেট নগরীর কয়েকটি রাস্তাকে দুই লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীত করা হয়েছে অর্থমন্ত্রীর প্রচেষ্টায়। এছাড়া শাহপরানে সদর হাসপাতাল নির্মাণসহ প্রায় ১০টি সাস্থ্য সেবালয় নির্মাণ করা হয়েছে।
সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, সিলেটের উন্নয়ন যারা দেখে না- তারা অন্ধ নয় তো কালা। তারা সব দেখেও না দেখার ভান করে। সিলেটের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ নানা কাজের মূল উদ্যেক্তা অর্থমন্ত্রী। তিনি সিলেটে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। আর যেসব উন্নয়ন কাজ শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে সেগুলো শেষ হলে সিলেট হবে বিশ্বের অন্যতম শহর। নৌকায় ভোট দিলে সিলেটে উন্নয়ন হয়। ঢাকা-সিলেট ফোরলেন কাজ তো শুরুর অপেক্ষায়। ওসমানীতে আলাদা টার্মিনাল নির্মাণ, রেলপথে আধুনিকায়নে কাজ শুরু করা হবে। সুতরাং গত ১০ বছরে সিলেটে যে উন্নয়ন হয়েছে ৩৮ বছরে তা হয়নি।
সিলেট-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির তার প্রচারণায়ও টেনে আনছেন উন্নয়ন বির্তক। তার দাবি সিলেটে গত ১০ বছরে উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে। আর নগরে বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ করেছেন আরিফুল হক চৌধুরী। আরিফের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। বিএনপি উন্নয়নে বিশ্বাস করে বলেই গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিলেট নগরের মানুষ ধানের শীষে ভোট দিয়েছে। মেয়রের উন্নয়ন মন্ত্রী নিজের নামে চালিয়ে যেতে পারেন না। তিনি বলেন, এম সাইফুর রহমান ছিলেন সিলেটের উন্নয়নের রূপকার। তিনি আধুনিক সিলেটের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। বিএনপি নির্বাচিত হলে সিলেটে সাইফুরের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা হবে। এদিকে- সিলেট সফরে এসে উন্নয়ন বিতর্কের শুরু করেছিলেন ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা আ স ম আব্দুর রব। অর্থমন্ত্রীর উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন। আর কোনো উন্নয়ন হয়নি বলেও দাবি করেন। তার এই বক্তব্যে জবাব দিয়েছেন সিলেটের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। তিনি বলেছেন, ১০ বছর পর সিলেটে এসে রব সাহেবরা কোনো উন্নয়ন দেখেন না। নির্বাচনী মাঠে বিভ্রান্তি ছড়াতে এই বক্তব্য দিচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।