দেশ বিদেশ
পুরনো প্রতিশ্রুতিতে নতুন ইশতেহার জাপার ছিলেন না সিনিয়র নেতারা
স্টাফ রিপোর্টার
১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। জাপা চেয়ারম্যান এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অনপুস্থিতিতেই এ ঘোষণা দেন সাংগঠনিকভাবে জাপা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত এরশাদের বিশেষ সহকারী ও সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের কাছে জাপার প্রতিশ্রুতির লিখিত ইশতেহার পাঠ করেন তিনি। যদিও ইশতেহারে জাপা যে ১৮ দফা উল্লেখ করেছে তার বেশিরভাগই ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্বে দেয়া হয়েছিল। যাতে নতুনত্ব কিছু দেখা যায়নি। গতকাল সকালে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিন হাওলাদার ইশতেহার ঘোষণা করেন। রুহুল আমিন হাওলাদার যখন ইশতেহার পাঠ করেন এ সময় তার আশেপাশে পার্টির গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতা উপস্থিতি ছিলেন না। যদিও সাংগঠনিক চেয়ারম্যান তাদের অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে জানান, তারা নির্বাচনী প্রচারণায় এলাকায় রয়েছেন। তার নিজের প্রার্থিতা যদি বাতিল না হতো তাহলে অন্য কেউ এ ইশতেহার ঘোষণা করতেন। তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা তা তিনি জানেন না। প্রার্থিত ফিরে পেতে এখনো আদালতে লড়াই করছেন। এছাড়া জাপা চেয়ারম্যান সিঙ্গাপুরে যাওয়ার প্রাক্কালে তাকে এ দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। যে ক্ষমতা জাপা চেয়ারম্যানের রয়েছে। হাওলাদার জানান, পার্টির চেয়ারম্যান মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। এবং তার নির্দেশেই ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। এদিকে জাপার ১৮ দফার অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থার কথা। যেখানে, দুই স্তরবিশিষ্ট সরকার কাঠামো ও নির্বাচন পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে। ৮টি বিভাগকে ৮টি প্রদেশে উন্নীত করা হবে। যার নামকরণও তারা ইশতেহারে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন, বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা, শিক্ষা পদ্ধতি সংস্কার, স্বাস্থ্য সেবা সমপ্রসারণ, সন্ত্রাস দমনে কঠোর ব্যবস্থা, কৃষকের কল্যাণ সাধন, সড়ক নিরাপত্তা, পল্লী রেশনিং, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার কথা বলা হয়েছে। এর আগে গত ২০শে সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মিলিত জাতীয় জোটের মহাসমাবেশে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এই ১৮ দফার কথা জানিয়েছিলেন। তখন এটাই জাপার নির্বাচনী ইশতেহার বলে জানিয়েছিলেন অনেক নেতা। প্রায় তিন মাস পর সেই ১৮ দফাকে লিখিত ইশতেহার আকারে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করল জাতীয় পার্টি। এবারের ইশতেহারে নতুন কিছু না থাকলেও হাওলাদার দাবি করেন, নতুন প্রজন্মের জন্য আগামী অর্ধশতাব্দী সময়কে সামনে রেখে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাতীয় পার্টি নতুনভাবে এই ১৮ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলের ইশতেহার আনুষ্ঠানিক প্রকাশের দিন দেশে নেই পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। নানা নাটকীয়তা শেষে এখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া এদিন ঢাকায় নেই দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও দলের নয়া মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। তারা সবাই এখন নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় ‘জনসংযোগে’ ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানান হাওলাদার। মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে হাওলাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পরে হঠাৎ করেই দলের মহাসচিবের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। পরে দলের চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী ও দলের সাংগঠনিক ক্ষমতা দেয়া হয় তাকে। ‘বিশেষ’ এ দায়িত্ব পাওয়ার পর হাওলাদারকে পার্টির কোনো কার্যক্রমে দেখা যায়নি শুক্রবারের আগে। দলের নির্বাচনী প্রচারণাতে অংশ নেয়া থেকে তিনি বিরত ছিলেন।