বাংলারজমিন

শিক্ষা বঞ্চিত ওরা

হাসান পিন্টু, লালমোহন (ভোলা) থেকে

১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৮:৪৩ পূর্বাহ্ন

শিক্ষা বঞ্চিত ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের চর-কচুয়াখালীর দুই শতাধিকেরও অধিক শিশু। সরকার ঘোষিত বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে একটি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকার কথা। তারই ধারাবাহিকতায় এই চরটিতে শহীদ আওলাদ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালের মার্চ মাসের দিকে সরকারের ১৫০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রকল্পের আওতায় শহীদ আওলাদ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের উদ্বোধন করা হয়। সরকার এসব বিদ্যালয় স্থাপনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছেন। তবে বিদ্যালয়গুলোতে আজও কোনো শিক্ষক দেয়া হয়নি। যার জন্য ওই এলাকার কোমলমতি শিশুরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সরকারি এ বিদ্যালয় স্থাপনের আগ থেকে চর-কচুয়াখালীর কিছু শিশু প্রায় দীর্ঘ ৫ মাইল হেটে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার চর-হাদীর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়ালেখা করছে। যা অত্যন্ত কষ্টকর এসব কমলমতি শিশুদের জন্য। চর-হাদীতে গিয়েও পড়ালেখা করতে অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয় তাদের। বর্ষাকালে চরে পানিবৃদ্ধি হয়ে শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। কারণ এচরে চলাচলের জন্য নেই কোনো রাস্তা।

তবে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে কয়েকবার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। চর-কচুয়াখালীর শিশু মারুফ, আল-আমিন, শহিদ, রুপা ও ফাহিমা জানায়, আমরা এত দিন যাবৎ হাদীর চরে গিয়ে পড়ালেখা করতাম। সেখানে যেতে আমাদের অনেক সমস্যা হতো। কিছুদিন আগে আমাদের এখানে একটি বিদ্যালয় হয়। আমরা মনে করেছি এখানেই আমরা পড়তে পারবো। কিন্তু বিদ্যালয়ে শিক্ষক না থাকার কারণে আমরা এখানে পড়তে পারছি না।

অভিভাবক তরিকুল ইসলাম, হানিফ, মোস্তফা মিয়া ও বাচ্চু বলেন, আমরা ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করতে চাই। এতদিন আমাদের এলাকায় কোনো বিদ্যালয় না থাকার কারণে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় গিয়ে তাদের পড়ালেখা করতে হতো। কিছুদিন আগে এখানে একটি সরকারি বিদ্যালয় হয়েছে। তবে এখানে কোনো শিক্ষক না থাকার কারণে এখনো আমাদের ছেলেমেয়েরা দশমিনা উপজেলার হাদীর চরে গিয়ে পড়তে হয়। ওই বিদ্যালয়টি অনেক দূরে হওয়ায় ছেলেমেয়েদের ওখানে যেতে অনেক কষ্ট হয়। যার জন্য তারা বিদ্যালয়ে যেতে চায় না।  পুরো বর্ষার সময় এখানকার কোনো ছেলেমেয়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। তাই আমাদের দাবী এখানে যে বিদ্যালয়টি রয়েছে, সেখানে যেন দ্রুত শিক্ষকের পোস্টিং দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান রুমি জানান, চর-কচুয়াখালী একটি বিচ্ছিন্ন স্থান। সেখানের শিশুদেরও পড়ালেখার অধিকার রয়েছে। আমি দ্রুত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে আলাপ করে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক পোস্টিং দেয়ার ব্যবস্থা করবো। আশা করে শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status