এক্সক্লুসিভ

সিলেটের চারটি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ছাড় দেয়নি জাপা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

১২ ডিসেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৯:১৫ পূর্বাহ্ন

সিলেটের মাত্র একটি আসনে মহাজোটের ভাগ পেয়েছে জাতীয় পার্টি। বাকি চারটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে মাঠে নেমেছেন দলটির প্রার্থীরা। এই চার আসনের মধ্যে কোনো কোনোটিতে আওয়ামী লীগের বিজয়ে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। বিজয় ছিনিয়ে আনতে তারাও ভোটযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তাদের ঘিরে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির কর্মীরা সরব হয়ে উঠেছেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বলছেন- নিজেদের অবস্থান জানান দিতেই তারা এই চার আসনে প্রার্থী হয়েছেন। এতে করে দল সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হবে বলে মনে করেন তারা।

২০১৪ সালের নির্বাচনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে ২টি আসন পেয়েছিল। সিলেট-২ ও সিলেট-৪। দুটি আসন এখন জাতীয় পার্টির এমপিদের দখলে রয়েছে। এবার জাতীয় পার্টি মহাজোটের কাছে চারটি আসন চেয়েছিল। কিন্তু সিলেট-২ আসনে ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া ছাড়া আর কোনো আসন ছাড় দেয়নি মহাজোট। ফলে সিলেটে আসন ভাগাভাগিতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি জাতীয় জার্টি। এ কারণে সিলেটের ৬টি আসনে দাখিল করা মনোনয়নপত্রের মধ্যে কেবল মাত্র সিলেট-৬ আসন ছাড়া আর কোনোটিতেই জাতীয় পার্টি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি।

সিলেট-৫ আসনটি এবারো জাতীয় পার্টি এককভাবে পাবে বলে আশাবাদী ছিলেন নেতারা। এই আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির হুইপ সেলিম উদ্দিন। কিন্তু এ আসনটি আওয়ামী লীগ এবার জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়নি। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদারকে প্রার্থী রেখেছে। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন- এবার সিলেট-৫ আসনটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এই আসনে হাফিজ আহমদ মজুমদার নৌকা ও সেলিম উদ্দিন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এদিকে- সিলেট-৫ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি সেলিম উদ্দিনের ওপর ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন বহিরাগতদের পক্ষে তারা অবস্থান নেবেন না। এখন এ আসনে নৌকার প্রার্থী রাখায় নেতাকর্মীরা হাফিজ মজুমদারের পক্ষে একাট্টা হয়েছেন।

সিলেট-১ আসনে মহাজোট প্রার্থী ড. একে আবদুল মোমেনকেও ছাড় দেয়নি জাতীয় পার্টি। এ আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান চৌধুরী। ফলে এ আসনে এককভাবে জাতীয় পার্টির ভোট দলের ভোটব্যাংকে জমা হবে বলে জানিয়েছেন মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান- কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি এ আসনে প্রার্থী হয়েছেন। তার পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।

সিলেট-৩ আসন হচ্ছে জাতীয় পার্টির অন্যতম ঘাঁটি। এই আসনে এরশাদ জমানা থেকে বার বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টি থেকে। এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করছেন দলের সিলেট জেলার সদস্য সচিব উসমান আলী। এই আসনে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের প্রার্থী আলহাজ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস। কিন্তু তিনিও এককভাবে এই আসনে ছাড় পাচ্ছেন না। নিজেদের আসন পুনরুদ্ধার করতে উসমানের পক্ষে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আর সিলেট-৩ আসনের মধ্যে দক্ষিণ সুরমায় আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রার্থী নিয়ে এখনো মতবিরোধ রয়েছে। প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে নৌকার প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরপর নৌকার বিদ্রোহী ভোট এবার উসমানের ঘরে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। উসমান আলী জানিয়েছেন- ‘এরশাদের প্রতীক জাতীয় পার্টি নিয়ে নির্বাচন করছি। আমি কেবল ধানের প্রতিপক্ষ নয়, নৌকারও। সুতরাং মানুষ এখন জাতীয় পার্টির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে বলে জানান তিনি।’

সিলেট-৪ আসনে মহাজোট প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি ইমরান আহমদ। তাকে মহাজোট প্রার্থী বলে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী মাঠে রাখা হয়। কিন্তু এ আসনে নির্বাচনের লড়াইয়ে নেমেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য  তাজ রহমান। তিনি এবার মহাজোটের কাছে প্রার্থী চেয়েছিলেন। কিন্তু মহাজোট থেকে মূল্যায়িত না হওয়ার কারণে তাজ রহমান প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। সিলেট-৪ আসনেও জাতীয় পার্টির শক্তিশালী ভোটব্যাংক রয়েছে। তাজ রহমান জানিয়েছেন- বার বার এই আসনটি আওয়ামী লীগকে ছাড় দেয়ায় নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। ফলে এখানে তাকে প্রার্থী রাখা হয়েছে। দলের চেয়ারম্যানের নির্দেশে তিনি মাঠে সক্রিয় রয়েছেন বলে জানান তাজ রহমান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status