প্রথম পাতা

প্রতীক পেয়ে প্রচারযুদ্ধে প্রার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার

১১ ডিসেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

নির্বাচনী প্রতীক পেয়ে প্রচারযুদ্ধে নেমেছেন প্রার্থীরা। গতকাল  সকাল থেকে প্রার্থীদের অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দ করার পর তারা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় প্রচারে নামেন। প্রচারণার প্রথম দিনে প্রতীক নিয়ে মিছিল, জনসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রার্থীরা। প্রচারণা ঘিরে বিচ্ছিন্ন হামলা-সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বিএনপির প্রচার মিছিলে পুলিশের হামলা ও গুলির অভিযোগ করেছে বিএনপি। কুমিল্লায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রচারণায় হামলা হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে। এদিকে প্রচারণার প্রথম দিনে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণার দৃশ্য দেখা গেলেও বিএনপির প্রার্থীদের খুব একটা দেখা যায়নি। ঘরোয়া বৈঠক, মতবিনিময় করে তারা প্রথম দিন পার করেছেন। আজ থেকে প্রধান দুই জোটের প্রার্থীরা প্রচারণায় নামবেন বলে জানিয়েছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীরা নিজ নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় নেমে পড়েন।

তারা স্ব স্ব এলাকায় মানুষের সঙ্গে দলীয় প্রতীক সংবলিত লিফলেট ও পোস্টার নিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় প্রার্থীদের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নির্বাচনী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে পক্ষে ভোট চাইতে থাকেন। এদিকে আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করছে প্রধান দুই জোট। নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত ও জনসভার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে একই দিনে সিলেট হজরত শাহজালাল ও শাহপরান (রহ.) এর মাজার জিয়ারত ও এম এ জি ওসমানীর কবর জিয়ারত করে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ কর্মসূচিতে ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা অংশ নেবন। এ ছাড়া গতকাল বিচ্ছিন্নভাবে জোটের শীর্ষ নেতারা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা শুরু করেন।

এদিকে ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারেন। নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুযায়ী, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচার কাজ শুরু করতে হবে। আর এটা বন্ধ করতে হবে ভোটগ্রহণ শুরু ৩২ ঘণ্টা পূর্বে। সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে ৩০শে ডিসেম্বর সকল ৮টায়। অর্থাৎ প্রচারণা বন্ধ করতে হবে ২৮শে ডিসেম্বর রাত ১২টায়। ১০ই ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হলে সেখানে থেকে ২৮শে ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত মোট সময় দাঁড়ায় ১৯ দিন। সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা অনুসারে, প্রার্থীদের প্রচারণার ক্ষেত্রে পোস্টার রঙ্গিন করা যাবে না। পোস্টারে প্রার্থী ছাড়া দলীয় প্রধানের ফটো ব্যবহার করা যাবে। যা দড়িতে ঝুলিয়ে প্রচার করতে হবে। ৪শ’ বর্গফুট এলাকার বেশি বড় কোনো প্যান্ডেল করে প্রচার চালানো যাবে না।

তবে কাপড়ের  তৈরি ব্যানার করে প্রচার চালানো গেলেও ডিজিটাল ডিসপ্লে ব্যবহার করা যাবে না।  জনসাধারণের চলাচলের অসুবিধা হয়, এমন কোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে হবে। মাইকে প্রচার হতে হবে দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা মধ্যে। একই সঙ্গে একই নির্বাচনী এলাকাতেই কোনো অবস্থাতেই তিনটির বেশি লাউড স্পিকার নয়। নির্বাচনী এলাকায় প্রতি ইউনিয়ন আর পৌর এলাকার ওয়ার্ড প্রতি নির্বাচনী ক্যাম্প করতে হবে একটি। মোটরসাইকেলসহ যেকোনো মটরগাড়িতে করে মিছিল, মশাল মিছিল বা শোভাযাত্রা একদম নিষিদ্ধ। বিদ্যুৎ ব্যবহার করে কোনো প্রকার আলোকসজ্জা করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতীক হিসেবে জীবন্ত কোনো প্রাণী ব্যবহার নিষিদ্ধ। পোস্টারের সাইজ দৈর্ঘ্যে ৬০ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং ব্যানার কোনো ভাবেই তিন মিটারের বেশি হবে না।

প্রচারের অংশ হিসেবে যে কোনো প্রকার দেয়াল লিখন, পোস্টানো সাঁটানো দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রচারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অন্য কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সম্মানহানিকর কিছু করতে পারবে না। দেয়া যাবে না কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্যও। প্রচারণায় সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সকল সুবিধা ত্যাগ করে প্রচার কাজে অংশ নিতে হবে। কোনো ডাক বাংলা ব্যবহার, সরকারি গাড়ি ব্যবহারসহ প্রটোকলও ছাড়তে হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ আইনে অনুমতি থাকায় নিরাপত্তা কারণে প্রটোকল পাবেন।

এমপি থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশনের মেয়ররাও সুবিধাভোগীদের বাইরে থাকবেন। তবে সরকারি কাজে তারা সরকারি সুবিধা পাবেন। কিন্তু সরকারি কাজে গিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন না। দলীয় প্রধান ছাড়া অন্য কেউ হেলিকপ্টারও ব্যবহার করতে পারবে না। এবারের নির্বাচনে আড়াই হাজারের মতো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র  বৈধ হয়েছে। মহাজোট ও ২০ দলীয় জোট দলগুলো এবার প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি প্রার্থী দিয়েছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র থেকেও দুই শতাধিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৮শে নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ সময়। এতে মোট ৩ হাজার ৬৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। আগামী ৩০শে ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status