দেশ বিদেশ

সিলেটে ধরপাকড় ফয়সলের ক্ষোভ

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

১১ ডিসেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

ধরপাকড়ে ক্ষুব্ধ সিলেটের ফয়সল আহমদ চৌধুরী। প্রতিপক্ষ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে তিনি দুষছেন না। পুলিশের ওপরই তার যত ক্ষোভ। গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তার নির্বাচনী এলাকার তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। ১২ ঘণ্টায় দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে সিনিয়র নেতাদের। এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ারও হুমকি দেয়া হচ্ছে। স্পষ্ট বলে দেয়া হচ্ছে, হয় গ্রেপ্তার হবেন নতুবা এলাকা ছাড়বেন। এমন ঘোষণায় ওই আসনের বিএনপির প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী গতকাল পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ছুটে যান। সিলেট পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। এদিকে, বিকালে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে ফয়সল আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেন না। পুলিশের ধরপাকড় কমছে না। এই অবস্থায় প্রতিপক্ষের প্রার্থীকে জয়ী করতে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সিলেট-৬ আসনে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী। দল ও জোটের ভেতরে তুমুল প্রতিযোগিতার পর তিনি পান এই আসনের কর্তৃত্ব। ফয়সলকে কেন্দ্র করে জেগে উঠেছে বিয়ানীবাজার ও  গোলাপগঞ্জের বিএনপির রাজনীতি। এর কারণ, দীর্ঘদিন ধানের শীষের প্রতীক বঞ্চিত ছিলেন এ আসনের বিএনপির নেতাকর্মীরা। ফলে তাদের দাবি ছিল নিজেদের প্রার্থী দেয়া। তৃণমূলের সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী। অপেক্ষাকৃত তরুণ এই নেতা ও ব্যবসায়ী লড়ছেন শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে। এই আসনে বিকল্পধারা থেকে প্রার্থী হয়েছেন সমশের মবিন চৌধুরী। ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে লড়াই করতে হচ্ছে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে।
কিন্তু ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরুর আগেই তাকে লড়তে হচ্ছে পুলিশ এবং প্রশাসনের সঙ্গে। গতকাল বিকালে ফয়সল জানিয়েছেন- তার প্রতিপক্ষ এখন প্রশাসন। অন্য কেউ না। প্রশাসন চাইছে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার এলাকায় বিরোধীদের দমন করে নৌকার জয় ঘরে তুলতে। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হবে না বলে জানান তিনি। বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রাণ দেবে তবুও মাঠ ছাড়বে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন- দমন পীড়ন, গণগ্রেপ্তার বন্ধ না হলে যেকোনো ঘটনার জন্য দায়ী থাকবে প্রশাসন। সাংবাদিক সম্মেলনে ফয়সল আহমদ চৌধুরী অভিযোগ কেেরছন, ‘সকালে সিলেট আসার পথে গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ চৌধুরীকে হেতিমগঞ্জের হিলালপুর এলাকায় ডিবি পুলিশ গাড়ি থামিয়ে ফিল্মি কায়দায় গ্রেপ্তার করেছে। সন্ধ্যায় ফুলবাড়ী ইউনিয়নে ধানের শীষের সমর্থনে উঠান বৈঠকে বসার কথা ছিল। এর আয়োজক ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। এই বৈঠক বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে দুপুরে ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান ফয়সলকে স্থানীয় থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের এমন ন্যক্কারজনক আচরণে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, পুলিশ প্রশাসন আওয়ামী সরকারের আমলে যে আচরণ করে আসছিল, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও তাদের আচরণে কোনো পরিবর্তন হয়নি। তারা আজও আওয়ামী লীগের অধীনে। অথচ নিয়ম এবং আইন অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই পুলিশ প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের আওতায় আসার কথা।’ তিনি আরো অভিযোগ করেন, গতরাতে আছিরগঞ্জ বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাদেপাশা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহাবুদ্দিনকে রাউকার বাজার পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ গ্রেপ্তার করে। দুপুরে বুধবারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় পুলিশ। শুধু গ্রেপ্তারই করছে না, তারা রাত-বিরাতে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে হানা দিয়ে তল্লাশির নামে হয়রানি করছে এবং অনেককেই ৩০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত এলাকা ছাড়ার জন্যে শাসিয়ে যাচ্ছে। যা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে কাম্য হতে পারে না।’ সংবাদ সম্মেলনে ফয়সল আহমদ জামায়াতে ইসলামীর বিয়ানীবাজার উপজেলার নায়েবে আমীর হাফিজ মাওলানা মুফাচ্ছির আহমদ, সেক্রেটারি ফরিদ আহমদ, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার আমীর নাছির উদ্দিন চৌধুরীসহ গ্রেপ্তার সব নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status