দেশ বিদেশ

সাংবাদিকদের লিস্ট করে খোঁজ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার

৯ ডিসেম্বর ২০১৮, রবিবার, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

 সাংবাদিকদের প্রশ্ন পছন্দ না হলে আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে ট্যাগ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির সদস্যরা নিয়মিত যাতায়াত করেন। তারা যতবার নির্বাচন কমিশনে গেছেন, ততবার সেখানে কর্তব্যরত সাংবাদিকদের ‘হুমকি-ধমকি’ দিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্ন পছন্দ না হলে তাদের রাজনৈতিক দলের কর্মী বলে ট্যাগ দিয়েছেন। সাংবাদিকদের লিস্ট করে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুরে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বাসায় ইসি বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের ডাকা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে রোববার রাত আটটায় ১ নম্বর হেয়ার রোডের বাসভবনে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন। মতবিনিময়ের নামে মূলত গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়েছেন এইচ টি ইমাম। এমনিতে ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে নির্বাচন কমিশন কঠোর বিধিমালা জারি করেছে। তাতেও আশ্বস্ত না হতে পেরে এখন গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে তারা (সরকার) মরিয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এইচটি ইমামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, এইচ টি ইমাম নিয়মিত নির্বাচন কমিশনে যান। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এমনকি তিনি নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালনরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তারা ‘আইনবহির্ভূত ও অন্যায়ভাবে’ বিএনপি চেয়ারপারসনের তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। এটা সরকারের ষড়যন্ত্রেরই অংশ।
তিনটি আসনে তার পক্ষে আপিল করা হয়েছে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চললে খালেদা জিয়া প্রার্থিতা ফিরে পাবেন। নির্বাচন কমিশনকে খালেদা জিয়ার প্রতি ন্যায়বিচার করার আহ্বান জানান রিজভী। ইসি সংবিধান ও আইন অনুসরণ করলে এবং বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে বিশ্বাসযোগ্য সিদ্ধান্ত নিলে খালেদা জিয়া অবশ্যই প্রার্থিতা ফিরে পাবেন। খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন হলে তা হবে একটি বিশাল প্রহসন। রিজভী বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সারা দেশে গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলার হিড়িকে নেতাকর্মীদের জীবন বিপন্ন ও বিপর্যস্ত। কোনো মামলা ছাড়াই অনেককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। তাঁদের এলাকাছাড়া করা হচ্ছে, ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। ‘গুম-খুন-অপহরণ’ করা হচ্ছে। সিইসি কেএম নুরুল হুদাকে এর দায় নিতে হবে। কেননা, জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে। রিজভী বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনের সময় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতো বিশেষ একটি গোয়েন্দা সংস্থা এবং র‌্যাব। গত চার দিন ধরে খুলনার ৬ থানার ওসি গভীর রাতে অফিসের মতো একটি বাসায় ঢুকে এবং ভোরের দিকে বেরিয়ে যায়-ঘটনাটি জনমনে রহস্য ও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, আমি বিএনপির পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলতে চাই- আপনারা এই দেশ এবং এই সমাজেরই মানুষ। কেন আপনারা সরকারের স্বার্থে মনুষ্যত্বহীন কাজে নিজেদের জড়ান? আপনাদের আহ্বান জানাই, অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থে আপনারা মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেবেন না। নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সহায়তা করুন। নিজ দেশের নাগরিকদের গুম-খুনে নিজেদের হাতকে রঞ্জিত করবেন না। আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা, আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status