শেষের পাতা

ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম

এবার শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার

৮ ডিসেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন

তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করার পর ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ এবং প্রভাতী শাখার প্রধান পদে নতুন দুজনকে নিয়েগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হয়েছেন কলেজ শাখার সহকারী অধ্যাপক হাসিনা বেগম। তিনি অর্থনীতি বিষয়ের শিক্ষক। আর বেইলি রোডে প্রভাতী শাখার প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন মহসিন তালুকদার।

এদিকে টানা তিনদিন আন্দোলনের পর পরীক্ষার হলে ফিরেছেন ভিকারুননিসার ছাত্রীরা। স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনার তিনদিন পর গতকাল স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দাবি পূরণের আশ্বাসে বৃহস্পতিবার আন্দোলন স্থগিত করার পর ছাত্রীরা পরীক্ষায় ফিরলো। এদিকে গ্রেপ্তার হওয়ার শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তি ও বর্তমান গভর্নিং কমিটির পদত্যাগের দাবি করেছে অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার দুপুর দুটা থেকে শিক্ষার্থীরা এক হয়ে বিক্ষোভ করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন সাবেক শিক্ষার্থীরাও।

সন্তানরা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করার পর অভিভাবকরা স্কুলের সামনে গ্রেপ্তার করা শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তি, বর্তমান পরিচালনা কমিটির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। অভিভাবকরা বলেন, আমাদের সন্তানদের পরীক্ষার হলে নিয়ে এসেছি। কিন্তু আমরা ক্ষুব্ধ। অরিত্রী আত্মহত্যা ও স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শিক্ষকরা যেমন দায়ী, তেমনি পরিচালনা কমিটি আরও বেশি দায়ী। অভিভাবকরা বলেন, আমরা অযোগ্য গভর্নিং বডির সদস্যদের থাকতে দেবো না। তাদের কারণে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। অরিত্রি অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী শিক্ষক ও কমিটির সদস্যরা। আমরা তাদের পদত্যাগ দাবি করছি। এরপর অভিভাবকদের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে যোগ দেন এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। বেইলি রোডের মূল ক্যাম্পাসের গেটের সামনে বসে ‘আমার মা নির্দোষ, মুক্তি চাই, মুক্তি চাই’ বলে বিক্ষোভ করে তারা। এ সময় তারা ‘অরিত্রী আমার বোন, হাসনা হেনা আমার মা’, ‘যাদের হাতে মানুষ গড়া, তাদের কেন হাতকড়া?’, ‘আমরা কি শিক্ষকের হাতে হাতকড়া পরিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছি না?’, ‘শিক্ষকের অপমান মানি না, মানব না’, ‘বিচার চাই, অবিচার না’, ‘বিচার চাইতে গিয়ে এ কোন অবিচার’ ইত্যাদি সেøাগান দেয়।

শিক্ষক মুক্তির আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশের ছাত্রী ফরিয়া লামিয়া বলেন, ‘হাসনা হেনা ম্যাডাম সম্পূর্ণ নির্দোষ, তাকে বিনা কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অচিরেই তাকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা তার মুক্তি চাই।’ শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, অরিত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক। অথচ তাদের বাদ দিয়ে মায়ের মতো শিক্ষিকা হাসনা হেনাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছে। যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষিকা হাসনা হেনার মুক্তির জন্য তারা আইনিপ্রক্রিয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। তাই যতক্ষণ না তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। পাশাপাশি তার মুক্তির দাবিতে আগামী রোববার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ভিকারুননিসার নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনাকে বুধবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর উত্তরার একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। হাসনা হেনাকে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হলে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। এ ঘটনায় অপর দুই আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানটির বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আখতার। এই তিনজনের এমপিও (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) বন্ধ করা হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status