বিশ্বজমিন

ধর্ষণ সম্পর্কে বিভ্রান্ত বিপুল সংখ্যক বৃটিশ

মানবজমিন ডেস্ক

৬ ডিসেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৩:২৭ পূর্বাহ্ন

বৃটেনের পূর্ণবয়স্ক জনগোষ্ঠীর বিপুল সংখ্যক মানুষ ধর্ষণের প্রকৃত সংজ্ঞা নিয়ে বিভ্রান্ত। এমনটাই জানিয়েছে ‘এন্ড ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট ওমেন’ নামের সংগঠনের আন্দোলনকারীরা। সংগঠটির পক্ষ থেকে ৩৯২২ জনের মধ্যে চালানো এক জরিপে উঠে এসেছে এ ভয়াবহ তথ্য। ডেটিংয়ে গিয়ে কোনো নারী যদি অসংযত আচরণ করেন, তাহলে তাকে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না, এই ধারণা জরিপে অংশগ্রহণকারী এক-তৃতীয়াংশ পুরুষ এবং ২১ শতাংশ নারীর। জরিপকৃতদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ মানুষই মনে করে যে, শারীরিক অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন হলেই তাকে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এছাড়াও ধর্ষণ নিয়ে বিভিন্ন মিথও তাদের মধ্যে লক্ষণীয়। তবে আইন যা বলে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে তরুণদের উত্তর অনেকটাই তার কাছাকাছি ছিল বলে দেখা গেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।  
দেশটির আইনে স্পষ্ট বলা আছে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সস্পর্ক স্থাপন করাই হল ধর্ষণ। এতে আরো বলা হয়েছে, অনেক মানুষ এই আচরগুলোকে অপরাধ হিসেবে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় না।
‘এন্ড ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট ওমেন’ সংস্থাটি জানিয়েছে, পুলিশের কাছে আসা অভিযোগের বেশিরভাগই দেখা যায়, সস্পর্কে থাকাকালীন তারা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আলাদাভাবে জরিপ করেছে ইউগভ। তাদের জরিপকারীরা জানিয়েছেন, ৬৫ বছরের বেশি এমন এক-তৃতীয়াংশ মানুষের ধারণা, বিবাহিত বা প্রেমের সস্পর্কে থাকাকালীন ইচ্ছাবহির্ভুত শারীরিক সস্পর্ক ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। আর ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ১৬ শতাংশ মানুষ এ চিন্তাধারার কথা জানিয়েছেন। এছাড়াও জরিপে অংশ নেয়া ৬৫ বছরের উর্ধ্বে থাকা মানুষের ৪২ শতাংশ মনে করেন, একজন নারীর যদি তার মানসিকতা পরিবর্তনের পরেও যদি যৌন সক্রিয় থাকেন, তাহলে সেটি ধর্ষণ নয়। তবে ২৫ থেকে ৪৯ বছরের মানুষের মধ্যে ২২ শতাংশ মানুষ এ কথায় সহমত প্রকাশ করেছেন।  
এ জরিপে আরো দেখা গেছে, ৬ শতাংশ মানুষ বলেছে কোনো নারী মদ্যপ বা ঘুমন্ত অবস্থায় থাকলে যদি তিনি শারীরিক সম্পর্কের শিকার হন তাহলে তা ধর্ষণ নয়। অন্য ৫ শতাংশ বলছে, এ বিষয়ক আইন সস্পর্কে তারা নিশ্চিত নয়। এছাড়াও ১৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, যৌন সঙ্গম চলাকালে সঙ্গীর অনিচ্ছায় যদি কনডম সরিয়ে ফেলা হয় তাহলে তা ধর্ষণ বলে বিবেচ্য হবে না। আর ২১ শতাংশ মানুষ মনে করছে, এটা সাধারণভাবে ধর্ষণ নয়। আর ১১ শতাংশ মানুষ বলেছে, একজন নারীর যত বেশি পুরুষ সঙ্গী থাকবে, ধর্ষণে তার ক্ষতির মাত্রা ততই কমে যাবে।  
এ বিষয়ে ‘এন্ড ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট ওমেন’ সংস্থার সহকারি ব্যবস্থাপক বলেছেন, ধর্ষণের বিষয়ে অবগত নয় এই সংখ্যাটি ভয়াবহ। কেননা, এই জরিপের মাধ্যমে বৃটেনের বিপুল সংখ্যক পূর্ণবয়স্ক মানুষকে দেখানো হয়েছে। এদের মধ্যে ধর্ষণ নিয়ে বিচারকাজ পরিচালনা করা বিচারকও রয়েছেন, যাদের ধর্ষণ সস্পর্কে এখনও স্পষ্ট ধারণা নেই।
তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ নিয়ে এলোমেলো চিন্তাধারা এবং মিথ সমাজে এখনও দেখা যায়। এর মাধ্যমে বোঝানো যায় যে, ধর্ষণ নিয়ে আমাদের দেশের আইন যদি তারা না বোঝে বা সহমত প্রকাশ না করে, বিচারকের জন্য স্বচ্ছ্ব সিদ্ধান্তে পৌঁছান কষ্টসাধ্য।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status