দেশ বিদেশ
ভিকারুননিসায় পড়তে চায় না অরিত্রীর ছোট বোন
নূর মোহাম্মদ
৬ ডিসেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন
ভিকারুননিসার নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার পর একই স্কুলের ছাত্রী ও তার ছোট বোন ঐন্দ্রিলা অধিকারী ভিকারুননিসা স্কুলে আর পড়তে চায় না। বড় বোনের আত্মহত্যার পর ভয়ে তিনদিন ধরে স্কুলে কোনো পরীক্ষায় অংশ নেয়নি সে। এই অবস্থায় অরিত্রীর ছোট বোন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ঐন্দ্রিলাকে রাজধানীর উদয়ন স্কুলে ভর্তি করানোর দাবি জানিয়েছেন তার বাবা-মা। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে তাকে উদয়ন স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এজন্য ঐন্দ্রিলার বাবা-মাকে একটি আবেদন করতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে অরিত্রীর বাবা দিলীপ কুমার অধিকারী মানবজমিনকে বলেন, আমি তো আর ঢাকায় থাকতে চাচ্ছি না। এ ঘটনার পর আমার পুরো পরিবার শোকে কাতর। শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিবকে ওই দিন বলেছি, আমার ছোট মেয়ে খুবই মেধাবী। সে আর ভিকারুননিসায় পড়তে চায় না। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষাসচিব আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন কোন স্কুলে ভর্তি করাতে চান। আমি তাৎক্ষণিক উদয়ন স্কুলের কথা বলেছি। তবে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি মেয়েকে কোন স্কুলে ভর্তি করাবো। ঐন্দ্রিলা ও পরিবারের সবাই বসে সিদ্ধান্ত নিবে। কয়েকদিন যাক তারপর সিদ্ধান্ত নিবো। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর আবদুল মান্নান মানবজমিনকে বলেন, বড় বোন মারা যাওয়ার পর এক ধরনের ট্রমা কাজ করছে ছোট বোন ঐন্দ্রিলা ওপর। তার বাবা-মা একটি আবেদন করলে আমরা সে ব্যবস্থা করে দিবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক মানবজমিনকে বলেন, এটা খুবই স্বাভাবিক। সে তো ওই স্কুলে পড়তে চাইবে না। কারণ সে যতদিন এ স্কুলে যাবে ততদিন তার মধ্যে বড় বোনের সেই স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াবে। বড় বোনের ঘটনা তার মধ্যে যে ক্ষত সৃষ্টি করেছে, পড়াশোনা ও স্বাভাবিক জীবনযাপনে তার ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এজন্য অরিত্রীর ছোট বোন যেখানে পড়তে চায় সেখানে তাকে পড়ার ব্যবস্থা করে দেয়াই হবে আপাতত সমাধান। এর মাধ্যমে ঐন্দ্রিলার মানবিক ক্ষত অনেকটা কমবে। এটা শুধু ঐন্দ্রিলার নয়, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাজনীতি যখন সরাসরি সংযোগ হয়েছে তখনই পরিবেশ নষ্ট হওয়া শুরু হয়েছে। সেটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। তার মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন, শিক্ষাবিদ, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। কিন্তু এখন হচ্ছে উল্টোটা।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাজনীতি যখন সরাসরি সংযোগ হয়েছে তখনই পরিবেশ নষ্ট হওয়া শুরু হয়েছে। সেটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। তার মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন, শিক্ষাবিদ, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। কিন্তু এখন হচ্ছে উল্টোটা।