দেশ বিদেশ
বাড়ি ফিরেছে তোফা তহুরা
মানবজমিন ডেস্ক
৫ ডিসেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
প্রায় দেড় বছর পর বাড়ি ফিরে গেছে যমজ ও জোড়া লাগানো শিশু তোফা ও তহুরা। তাদেরকে ৯ ঘণ্টার অপারেশনে আলাদা করার পর এখন তারা সুস্থ। হাঁটতে পারে। কথা বলতে পারে। তাই তাদেরকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় তাদেরকে হাসপাতাল থেকে ছাড় দেয়া হয়েছে সোমবার দিনশেষে। তাদের নিয়ে ফলোআপ রিপোর্টে এসব কথা লিখেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার একজন চিকিৎসক এ নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এমন সফল অস্ত্রোপচার এটাই প্রথম। এর মধ্য দিয়ে জোড়া লাগা যমজ দুই বোনকে আলাদা করা হয়েছে। তাদের দেহ জোড়া লাগানো ছিল মেরুদণ্ডে ও বৃহদান্ত্রে। ২০১৭ সালের আগস্টে ৯ ঘণ্টা ধরে তাদের দেহে অস্ত্রোপচার করেন দুই ডজন চিকিৎসক। বিস্ময়কর এই সার্জারির নেতৃত্ব দেন শিশুরোগ বিষয়ক সার্জন শাহনুর ইসলাম। তিনি বলেছেন, তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তাই তাদেরকে হাসপাতাল থেকে ছাড় দেয়া হয়েছে। এখন তারা অন্য স্বাভাবিক শিশুদের মতো হাঁটতে ও খেলতে পারে। তারা তাদের গ্রামের বাড়ি ফিরে গেছে। তবে আমরা সময়ে সময়ে তাদেরকে ‘অবজার্ভ’ করবো। তোফা ও তহুরার জন্ম গাইবান্ধার এক দরিদ্র পরিবারে। সেখান থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী ঢাকায় আনা হয়েছিল তাদের। তাদের মা শাহিদা বেগম। তিনি সন্তানের এমন বেঁচে থাকায় এখন ভীষণ খুশি। তার ভাষায়, কখনো ভাবি নি যে, তারা আলাদা হতে পারবে এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে। আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া এ জন্য যে, আমরা এখন তোফা ও তহুরাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছি। তারা এখন আলাদা আলাদা মানুষ। তোফা ও তহুরার পিতামাতা তো আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। কারণ, স্থানীয় চিকিৎসকরা তাদেরকে বলেছিলেন যে, বাংলাদেশে এমন কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই, যারা এই অপারেশন করতে পারেন। তবে অন্য কোনো দেশে নিয়ে গেলে তাতে প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। তবু যে টিমটি তাদেরকে আলাদা করেছে তারা বাংলাদেশি। এর আগে শাহিদা বেগম বলেছিলেন, যদি তার সন্তানরা সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে তাহলে তাদেরকে তিনি ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি তাদেরকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন।